পাতা:বাল্মীকি রামায়ণ - উপেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/২৭৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

O অযোধ্যাকাণ্ড উপাদেয় এবং o כ-צ ן דf তদনন্তর সকলেই রাজদর্শনার্থ নিতান্ত সমুৎসুক হইয়া সুৰ্য্যোদয় পৰ্য্যন্ত অপেক্ষা করিয়া রহিল ; কিন্তু রাজা তখনও উঠলেন না দেখিয়া, এ কি হইল।” ভাবিয়া তাহদের মনে শঙ্কা জন্মিল। কৌশল্যাদি ভিন্ন আর আর যে সকল স্ত্রী রাজার শয্যার নিকটেই ছিলেন, তাহারা সমাগত হইয়া, স্বামীকে জাগরিত করিতে লাগিলেন । র্তাহার যথারীতি বিনীতভাবে স্বামীর শয্যা স্পর্শ করিয়া দেখিলেন, দেহে প্রাণ থাকিলে যেমন স্পন্দনাদি হইয়া থাকে, তাহার কিছুই নাই। র্তাহার নিদ্রিত মনুষ্যের স্বভাব বুঝিতে পারিতেন ; সুতরাং স্বামীর করকমল ও হৃদয়স্থিত নাড়ীতেও স্পন্দন নাই উপলব্ধি করিয়া, তাহার জীবিত-বিষয়ে সন্দিহান হইলেন । র্তাহার রাজার জীবনে অত্যন্ত শঙ্কিত হইয়া, প্রবাহে প্রতিস্রোতোগত তৃণাগ্রভাগের স্যায় কঁাপিতে লাগিলেন। তনন্তর রাজার অবস্থা বিশেষরূপে পরীক্ষা করিয়া, তাহার জীবিত-বিষয়ে সন্দিহান ঐ সকল রমণী নিশ্চয় করিলেন, দশরথ ইতিপূর্বে নিজেই আপনার যে মৃত্যু শঙ্কা করিয়াছিলেন, তাহাই ঘটিয়াছে। কৌশল্য ও সুমিত্র পুত্ৰশোকে অভিভূত হইয়া, যথাকালে নিদ্রিত হইয়াছেন, জাগরিত হইতে পারেন নাই। দারুণ পুত্ৰশোকে অবসন্ন ও নিতান্ত মলিনভাবাপন্ন এবং একান্ত ক্ষুণ্ণ ও প্রভাশূন্ত হওয়াতে, অন্ধকারাবৃত তারার স্যায় কৌশল্যা শোভাহীন হইয়াছিলেন। রাজার পরে কৌশল্য এবং কৌশল্যার পরে স্বমিত্রা শয়ন করিয়াছিলেন । পুত্ৰশোকে বদনমণ্ডল নেত্র-জলে পরিপূর্ণ হওয়াতে পূর্বের স্যায় কৌশল্যার সে বিশিষ্টরূপ শোভা ছিল না । তৎকালে কৌশল্য ও সুমিত্র দুই জনে নিদ্রা যাইতেছেন এবং রাজাও নিদ্রিত আছেন ; কিন্তু ' প্রাণত্যাগ করিয়াছেন দেখিয়া, সমুদায় অন্তঃপুরেরও যেন প্রাণ উড়িয়া গেল। ՀԵ যাহার যে গুণ, তাহাতে তাহ ২১৭ অনন্তর দলপতি গজ পতিত হইলে, তাহার অধীনস্থ হস্তিনী সকলের স্যায়, ঐ সকল রাজমহিষী নিতান্ত ব্যাকুল হইয়া, উচ্চৈঃস্বরে চীৎকার করিয়া উঠিলেন। ১১-২০ র্তাহীদের চীৎকার-শব্দে সহসা চেতন হওয়াতে, কৌশল্যা ও সুমিত্র দুই জনই জাগরিত হইলেন। তখন র্তাহারা দুই জনই রাজাকে দর্শন ও স্পর্শ করিয়া, হা স্বামিন !’ বলিয়া উচ্চৈঃস্বরে চীৎকারপূর্বদক তৎক্ষণাৎ ভূমিতে পড়িয়া গেলেন । তৎকালে ধূলি-ধূসরিত-দেহে সেই কোশলেন্দ্রহৃহিত ধরাতলে বিলুষ্ঠিত হইতে লাগিলেন । তিনি গগনবিচু্যতা তারার স্যায় নিতান্ত প্রভাশূন্য হইলেন। স্বামীর মৃত্যুতে তিনি ভূপতিত হইলে, ঐ সকল রাজমহিষী অবলোকন করিলেন, যেন কোন নাগপত্নী মরিয়া পড়িয়া রহিয়াছেন। তনন্তর দশরথের কৈকেয়ী প্রভৃতি সমুদায় স্ত্রীই শোকে সন্তপ্ত ও চেতনাশূন্য হইয়। রোদন করিতে করিতে পতিত হইলেন। তখন প্রথমপ্রবিষ্ট মহিষীগণের সেই তুমুল ক্ৰন্দনশব্দ পশ্চাৎপ্রবিষ্ট কৈকেয়ী প্রভৃতির চীৎকার শব্দে মিশ্রিত হওয়াতে, আরও বৰ্দ্ধিত হইয়া, সমুদায় রাজভবন পূর্ণ করিল। তৎকালে ঐ রাজভবন নিতান্ত ত্রস্ত ও ব্যগ্রভাবাপন্ন হইয়া উঠিল এবং পূর্ববৃত্তাস্ত জানিবার জন্য নিতান্ত উৎসুক লোক-সকলের অনবরত সমাগমে তথায় স্থানসমাবেশ নিতান্ত তৃঘট হইল। সৰ্ব্বত্রই তুমুল চীৎকার-শব্দে পূর্ণ, বান্ধবমাত্রেই পরিতাপে নিতান্ত অভিভূত এবং কুত্ৰাপি আনন্দের লেশমাত্র নাই। অচিরস্থত দশরথের গৃহ এইরূপে ব্যাকুল ও দুর্দশ পূৰ্ত্তি ধারণ করিল। পার্থিব-শ্রেষ্ঠ যশস্বী দশরথ প্রাণত্যাগ করিয়াছেন জানিয়া, মহিষীগণ নিতান্ত দুঃখিত হইয়া, অত্যন্ত করণ স্বরে রোদন করিতে করিতে র্তাহাকে বেষ্টন করিয়া, বাহু বিসারণ-পূর্বক অনাথের ন্যায় রোদন করিতে লাগিলেন । ২১-২৯ ==-senamosoma-sor