পাতা:বাল্মীকি রামায়ণ - উপেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/২৮৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Rミb" যাইতে লাগিলেন। তিনি দেখিলেন, অযোধ্যার চতুপথ ও গুহ সকল শূন্য এবং কবাট ও দ্বারযন্ত্র সকল ধূলিধূসরিত হইয়াছে। ইন্দ্রপুরীসদৃশ অযোধ্যার তদবস্থা দর্শন করিয়া তিনি যারপরনাই দুঃখিত হইলেন। পূর্বে যাহা কখনও অযোধ্যায় ঘটে নাই, নয়ন ও মনের অপ্রিয় তাদৃশ ঘটনা সকল দর্শন করিয়া তদীয় চিত্তবৃত্তি নিতান্ত ক্ষুণ্ণ ও অপ্রসন্ন হইয়৷ উঠিল ; তজ্জন্য ঐ সকল আর নয়ন-গোচব না হয়, এই ভাবিয়া, তিনি মস্তক নত করিয়া পিতার গৃহে প্রবেশ করিলেন। ৩২-৪৬ _ _ன் দ্বিসপ্ততিতম সর্গ তিনি পিতৃগৃহে পিতাকে না দেখিয়া, মাতারসহিত সাক্ষাৎকার-মানসে তাহার গুহে গমন করিলেন। তিনি এত দিন বিদেশে ছিলেন, এক্ষণে গৃহে আসিয়াছেন দেখিয়া, কৈকেয়ী আঙ্গলাদিত হইয়া, তৎক্ষণাৎ স্বর্ণময় আসন ত্যাগ করিয়া, গাত্রোথান করিলেন। ধৰ্ম্মাত্মা ভরত মাতৃগৃহে প্রবেশ করিয়াই দেখিলেন, উছার শ্রী ভ্ৰষ্ট হইয়াছে। অনন্তর তিনি জননীর পবিত্র পদযুগল গ্ৰহণ করিলেন। তপন কৈকেয়ী যশস্বী ভরতের মস্তক অাত্রাণ ও গহীকে আলিঙ্গন করিয়া, ক্রেগড়ে বসাইয়া জিজ্ঞাসিতে লাগিলেন,—বংস ! আজি কয় রাত্রি হইল, তুমি মাতামহের গৃহ হইতে বহির্গত হইয়াছ ? রথে করিয়া শীঘ্ৰ আসাতে পথিমধ্যে তোমার ত কোন কষ্ট হয় নাই ? তোমার মাতামহ এবং মাতুল যুদ্ধাজিৎ ইহারা দুই জনই ত বেশ ভাল আছেন ? বৎস! প্রবাসে গিয়া অবধি ত তুমি সুখে ছিলে ? এই সকল আমাকে বল। কৈকেয়ী কর্তৃক এইরূপ জিজ্ঞাসিত হইলে, রাষ্ট্ৰীবলোচন ভরত র্তাহার নিকট সমস্ত বৃত্তান্ত বলিতে লাগিলেন,–মাতঃ ! আজ সাত রাত্রি হইল, আমি মাতামহের গৃহ ছাড়িয়ছি । আপনার পিতা ও ভ্রাতা দুই জনই ভাল বাল্মীকি-রামায়ণ আছেন । শত্রুদমন কেকয়রাজ আমাকে যে সকল ধন ও রত্ব দিয়াছিলেন, পথিমধ্যে বাহন সকল পরিশ্রান্ত হওয়াতে আমি সে সকল ফেলিয়া রাখিয়া অগ্ৰেই চলিয়া আসিয়াছি। রাজসন্দেশবাহী দূতগণ ত্বরা দেওয়াতেই আমি এখানে এত শীঘ্ৰ আগমন করিয়াছি। এক্ষণে যাহা জিজ্ঞাসা করিতেছি, বলুন। আপনার এই স্বর্ণভূষিত শয়নোপযুক্ত পৰ্য্যঙ্ক শূন্য রহিয়াছে দেখিতেছি এবং ইক্ষাকুবংশীয় কোন ব্যক্তিকেও আমার তাহলাদিত বোধ হইতেছে না। আর আপনার এই গৃহে রাজা প্রায় সর্বদাই থাকেন, র্তাহাকেও আজি দেখিতেছি না ; আমি তাহাকেই দেখিবার জন্য এখানে আসিয়াছি। এখন পিতা কোথায়, আমি তদীয় পদযুগল গ্রহণ করিব। তিনি কি আমার মাতৃগণের মধ্যে স বিজ্যেষ্ঠ কৌশল্যার গুহে আছেন ? ইহা আমাকে বলুন । ১-১৪ অনন্তর প্রিয় সংবাদরূপে রাজমৃত্যু-সংবাদভিজ্ঞ সেই রাজ্যলোভে মোহিত কৈকেয়ী, অজ্ঞাত-বৃত্তান্তজিজ্ঞাসা-তৎপর ভরতকে প্রিয় বিবরণের ন্যায় সেই ঘোরতর অপ্রিয় বৃত্তান্ত বিজ্ঞাপন করিলেন,—বৎস! সংসারে সকলেরই যে গতি, তোমার পিতা, রাজা, মহাত্মা, তেজস্বী, যাগশীল ও সাধুগণের আশ্রয় দশরথও সেই গতি লাভ করিয়াছেন । ধৰ্ম্মযুক্তবংশে জাত শুদ্ধস্বভাব ভরত এই কথা শুনিয়াই পিতৃশোকপ্রভাবে নিকান্ত অভিভূত হইয়া, সহসা ভূমিতে পতিত হইলেন । পড়িবার সময় সেই মহাবাহু মহাবল ভরত বাহুযুগল দ্বারা ভূমি অহিত করিয়া, হায়! হত হইলাম!’ এইপ্রকার ব্যাকুল ও করুণ বাক্য প্রয়োগ করিলেন । অনন্তর সেই মহাতেজ ভরত পিতৃবিয়োগ জন্য শোকে ও দুঃখে আচ্ছন্ন হইয়া, অজ্ঞান ও অভিভূত অবস্থায় বিলাপ করিতে লাগিলেন। পিন্ডার এই যে শয্যা পূর্বে শরৎকালের রাত্রিতে চন্দ্রমণ্ডলমণ্ডিত গগনের স্যায় নিতান্ত স্বন্দর বলিয়া আমার প্রতীয়মান হইত, আজি সেই ধীমান পিতৃদেবের