পাতা:বাল্মীকি রামায়ণ - উপেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/৩০২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Հ8Հ প্রদেশ উদেশে দ্রুতগমন করত পৰ্ব্বকালীন সমুদ্রের উচ্ছসিত জলরাশির স্যায় শোভা ধারণ করিল। সেই মাগনিৰ্ম্মাণদক্ষ পুরুষগণ স্বদলে মিলিত হইয়া, খনিত্ৰাদি বহুবিধ উপকরণ সমভিব্যাহারে অগ্রে অগ্রে প্রস্থান করিল। তাহার বিবিধ বৃক্ষ, লতা, বল্লী, গুল্ম ও প্রস্তর সকল ছেদন করত পথ প্রস্তুত করিতে প্রবৃত্ত হইল । কেহ বৃক্ষশূন্য দেশে বৃক্ষ সকল রোপণ, কেহ কুঠার, টঙ্ক ও দাত্র দ্বার স্থানে স্থানে বৃক্ষ সকল ছেদন করিল এবং অপর কতকগুলি অতিশয় বলবান পুরুষ বদ্ধমূল বীরণস্তম্ব সকল হস্ত দ্বারাই উৎপাটনপূর্বক স্থান সকল সমান করিল। কেহ কেহ কৃপ ও গভীর গৰ্ত্ত সকল পাংশু দ্বারা পূরণ এবং নিম্নভাগ সকল শীঘ্রই সমতল করিল । কেহ কেহ বন্ধনীয় স্থান সকল বন্ধন, ক্ষেদনীয় স্থান সকল ক্ষোদন এবং ভেদ নীয় প্রদেশ সকল ভেদ করিতে লাগিল । কেহ কেহ অচিরকালমধ্যে নানাপ্রকার আকারের ক্ষুদ্র প্রবাহ সকল বন্ধনাদি দ্বারা প্রচুর সলিলে পূর্ণ করিয়া, সাগরের সমান করিয়া দিল এবং যেখানে জল নাই, সেই সকল স্থলে বেদিক সমূহ অলঙ্কত করিয়া, নানাপ্রকার উৎকৃষ্ট জলাশয় সকল খনন করিল। এইরূপে সৈন্য সকলের গমনপথে কোথাও বিশ্রামার্থ সুধা-নিবন্ধ ভূমি সকল সংস্থাপিত এবং কোথাও বিকসিত বৃক্ষ সকল আরোপিত হইল ; কোথাও বা বিহঙ্গমগণ মত্ত হইয়া কলরব করিতে লাগিল ; কোন স্থান পতাকা সকলে অলঙ্কত, চন্দনসলিলে অভিষিক্ত এবং নানাবিধ কুসুমে বিভূষিত করা হইল। তাহাতে সুরপথের স্যায় সেই পথের অতিশয় শোভ হইল। ১-১৪ অনন্তর প্রধান প্রধান কাৰ্য্যাধ্যক্ষেরা মহাত্মা ভরতের আজ্ঞানুসারে স্ব স্ব কার্য্যে নিযুক্ত হইয়া, অনুচরাদগকে আদেশ-পূর্বক নানাপ্রকার মুস্বাদু ফলবিশিষ্ট রমণীয় স্থান সকলে ভরতের মনোমত অতীব মনোহর শিবির সকল স্থাপন করিয়া, বাল্মীকি-রামায়ণ অধিকতর ভূযণ দ্বারা তৎসমস্ত সুশোভিত করিল। যাহারা নক্ষত্র ও মুহুৰ্ত্ত সকলের শুভাশুভ ফল অবগত আছে, তাহারা শুভ নক্ষত্রে ও শুভ মুহূৰ্ত্তে মহাত্মা ভরতের জন্য শিবির সকল সংস্থাপন করিল। ঐ শিবির সমস্ত প্রভূত পাংশুসমূহে, পরিখায় পরিব্যাপ্ত, ইন্দ্ৰনীলমণিনিৰ্ম্মিত প্রতিমা-সমুহে বিরাজিত ও উৎকৃষ্ট রথ্যাসমূহে অলঙ্কত। প্রাসাদমালায় ও সৌধ সদৃশ তত্যুচ্চ প্রাচীরে পরিবৃত, বহুসংখ্য পতাকাসুশোভিত সুনিৰ্ম্মিত পথ সকল শোভা পাইতে লাগিল এবং উহাদের অত্যুচ্চ সপ্ততল গৃহসমূহের অগ্রভাগে কপোত-পালিকা বিরাজমান ছিল । ঐ সকল শিবির ইন্দ্রপুরীর ন্যায় শোভা ধারণ করিল। যাহার তীরদেশে বিবিধ বৃক্ষলতাপূর্ণ কানন, যাহার জল নিৰ্ম্মল ও শীতল এবং মৎস্যপূর্ণ, সেই জাহ্নবী পৰ্য্যন্ত ঐ উৎকৃষ্ট রাজপথ নিৰ্ম্মিত হইয়া চন্দ্ৰতারা মণ্ডিত নভোমণ্ডলের স্যায় শোভা পাইতে লাগিল । ১৫-২২ একাশীতিতম সর্গ ত নন্তর অভিষেক-দিবসের পূর্ববরজনী অথবা রাম আনয়নের উদূযোগারস্ত দিনের রাত্রি গতপ্রায় হইয়াছে দেখিয়া, বিশেষতঃ সুত ও মাগধের মঙ্গলস্তবে ভরতকে স্তব করিতে লাগিল। প্রহরাবসান-সুচক তুন্দুভি সকল মুবর্ণময় বাদনদণ্ড দ্বারা বাদিত হইতে লাগিল ; শত শত শঙ্খ ও উচ্চাবচস্বরবিশিষ্ট বাদ্যসকল বাদিত হইতে থাকিল । সেই সুমহান বাদ্য শব্দ আকাশমণ্ডল পৰ্যন্ত যেন পূর্ণ করিয়া শোকসন্তপ্ত ভরতকে আরও শোকাক্রান্ত করিয়া তুলিল। তখন ভরত প্রতিবুদ্ধ হইয়া, আমি রাজা নহি বলিয়া, সেই বাদ্য নিবারণ করিয়া শত্রুঘ্নকে বলিলেন,—দেখ, শত্রুঘ্ন ! কৈকেয়ী কর্তৃক লোকের কি মহৎ অপকার হইয়াছে । আমার উপর এই সকল দুঃখ নিক্ষেপ