পাতা:বাল্মীকি রামায়ণ - উপেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/৩০৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

O অযোধ্যাকাণ্ড ত্র্যশীতিতম সর্গ অনন্তর ভরত প্রাতঃকালে উঠিয়াই উৎকৃষ্ট রথে আরোহণ করিয়া, রামদর্শনাভিলাষে শীঘ্র প্রস্থিত হইলেন। সকল অমাত্য ও পুরোহিতগণ অশ্বযুক্ত স্বৰ্য্যরথসদৃশ প্রভাশালী রথে অধিরূঢ় হইয়া, ভরতের ত গ্রে তগে যাইতে লাগিলেন। যথাবিধি সুসজ্জিত হয়, সহস্র হস্তী সেই গমনকারী ইক্ষ্মাকুকুলনন্দন ভরতের অনুগামী হইল। এতদ্ভিন্ন ষাট হাজার রপ, বিবিধ অস্ত্রধারী ধম্বিগণ এবং অশ্বারোহি-সমেত শত সহস্ৰ অশ্ব সেই গমনকারী, যশস্বী, জিতেন্দ্ৰিয়, স ত্যপ্রতিজ্ঞ, রাজপুত্র, রঘুনন্দন ভরতের অনুগমন করিল। কৈকেয়ী, সুমিত্রা ও যশস্বিনী কৌশল্য ইহার রামকে অনিবার জন্য সস্তুস্ট হইয়া, পরম দীপ্তশালী রথে আরোহণ-পূর্বক প্রস্থান করিলেন। লাহ্মণাদি বণত্রয় রামবিষয়ক বিচিত্র বাক্য সকল প্রয়োগ করত প্রহৃষ্টচিত্তে প্রস্থিত হইলেন। তাহারা বলিলেন, কত দিনে তামরা জগতের শোকনিবারক, বশীকৃতচেতা, জলপরের ন্যায় শ্যামবর্ণ, মহাবান্ত, দৃঢ়ত্রত রামকে দর্শন করিব ? সুর্ন্য যেমন উদিত হইয়াই ত্রিভুবনের অন্ধকার নশ করেন, রামও তেমনি দৃষ্টিপথের পথিক হইয়াই আমাদের সকল শোক অপনয়ন করিবেন । তৎকালে নগরবাসী ব্যক্তিগণ হর্মসহকারে এইপ্রকার শুভ বাক্য সকল প্রয়োগ করত পরস্পর আলিঙ্গন-পূর্বক গমন করিতে লাগিলেন। ১-১০ অযোধ্যানগরে যে সকল প্রসিদ্ধ ও অপ্রসিদ্ধ বণিক ও রাজানুগত প্রজা বাস করিত, তাহারা maksm to-am ১। কৈকেয়ী ভরতের কার্ধ দর্শনে যখন বুঝতে পারিলেন, ভরতের মঙ্গলার্থ যাহা তিনি করিয়াছেন, উহা তাহার অহিতকর, তপন তিনি, আমি কি গৰ্হিত কাৰ্য্য করিয়াস্থি, এইরূপ খেদপ্রাপ্ত হইয়া পুনরায় পূর্বের দ্যায় রামের প্রতি স্নেহশালিনী হুইয়াছিলেন এবং হর্ষ সহকারে রামকে আনিতে ও নিজ দোষ ক্ষালনার্থ জগ্রে তিনিই গমন করেন ; এই জগুই তাহার নাম প্রথমে উল্লিখিত হইয়াছে ; অথবা প্রধান মহিণীক্ৰয় পুনরায় পূৰ্ব্বসৌহাৰ্বলাভ করায় এক যানে আরোহণ করিয়াই গমন করিয়াছিলেন । Հ8 (t সকলেই হর্মাবিষ্ট-চিত্তে রামকে আনয়ন করিতে গমন করিল। মণিকার, সুদক্ষ কুস্তকার, স্বত্রনিৰ্ম্মাণদক্ষ তন্ত্রপায়, কৰ্ম্মকার, ময়ূরপুচ্ছ-নিৰ্ম্মিত বাজনাদি-ব্যবসায়ী, করপত্র ( করাত ) -ব্যবসায়ী, মণিমুক্তাদির ছিদ্রকার, কাচাদি-নিৰ্ম্মাণকার, দন্তব্যবসায়ী, সুপকার, গন্ধবণিক, বিখ্যাত স্বর্ণকার, কম্বলকার, স্বীপক ( যাহারা স্নান করাইয়া দেয় ), তঙ্গমৰ্দ্দক, বৈদ্য, ধূপ-জীবী, মদ্যকার, রজক, সীবনকারক (সূচী দ্বারা সেলাই কার্ঘ্যে যাহাবা দক্ষ তাহারা ), গ্রাম ও তাম্ভীরপল্লীবাসী প্রধান ব্যক্তি, নট ও কেবর্তগণ সকলে স্ব স্ব স্ত্রীর সহিত গমন করিতে লাগিল ৷ ই সহস্ৰ সহস্ৰ সদাচারনিষ্ঠ সমাহিতচিত্ত বহ্মণের গোযোজিত রথে সেই ভরতের তনুমগন করিলেন । সকলেই সুন্দর বেশ, সুন্দর বস্ত্র, তামবর্ণ ও বিশুদ্ধ অনুলেপন ধারণ করিয়া, স্বন্দর যান সকলে আরোহণ-পূর্বক পীরে ধীরে ভরতের অনুগমন করিলেন । ১১-১৭ এইরূপে কৈকেয়ীনন্দন ভ্রাতৃবংসল ভরত রামকে আনিতে যাত্রা করিলে, প্রমোদ-সমন্বিত চতুরঙ্গিণী সৈন্য সকল পরম হর্মে ও আনন্দে অনুগমন করিল। রথ, যান, অশ্ব ও গজারোহণে বহু দূর অতিক্রম করিয়া, শৃঙ্গবেরপুরে গঙ্গানদীর নিকটে সকলে সমাগত হইল । রামের সখ শৃঙ্গবেরপতি বীর গুহ জ্ঞাতিগণে পরিবৃত হইয়া, সর্বদা অতি সাবধানে সেই প্রদেশ রক্ষাবিধান করত তথায় বাস করিতেন । ভরতের অমুগামিনী চতুরঙ্গিণী সেনা চক্ৰবাক ভূষিত ভাগীরথীতীরে উপনীত হইয়া গমনে ক্ষান্ত হইল। বাক্যবিন্যাসপটু ভরত সৈন্যদিকে গমনে ক্ষান্ত দেখিয়া এবং পুণ্যতোয় ভাগীরথীকে দর্শন করিয়া, মন্ত্রীদিগের সকলকেই বলিলেন,—আমি অভিপ্রায় করিয়াছি, অদ্য বিশ্রাম করিয়া, কল্য গঙ্গা পার হইয়া যাইব ; অতএব ২। মণিকার-পদ্মরাগাদি মণির সংস্কারকর্তা । দস্তুকার—হস্তিদত্তের দ্বারা যাহারা পুতুল-শিবিকাদি নিৰ্ম্মাণ করে।