পাতা:বাল্মীকি রামায়ণ - উপেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/৩০৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

૨8b জ্যেষ্ঠ ভ্রাতা রামের চিন্তা করিয়া, নিতান্ত ক্ষুন্নমনা হইলে, নিষাদরাজ র্তাহাকে আশ্বাস প্রদান করিতে লাগিলেন । ১১-২২ Noumangsman ষড়তিশীতম সর্গ অনন্তর গহনবাসী গুহ অমিত-গুণশালী ভরতেব নিকট রামের প্রতি মহাত্মা লক্ষণের সদ্ভাব কীৰ্ত্তনপূর্বক বলিতে লাগিলেন,–গুণশালী লক্ষণ রামের রক্ষণজন্য উৎকৃষ্ট ধনুৰ্ব্বাণ হস্তে জাগিয়া রহিলে, আমি র্তাহাকে কহিলাম,—তাত রঘুনন্দন ! আপনার জন্য এই সুখদায়িনী শল্য রচনা করা হইয়াছে, আপনি সুখে ইহাতে শয়ন করুন, রামের জন্য আপনার কোন শঙ্কা নাচ । আপনি চিন্তা ও শোক ত্যাগ করুন। এই সকল সাধারণ লোক—ইহারা দুঃখসহনে অভ্যস্ত, এবং আপনি সুখে সংবন্ধিত, অতএব হে ধৰ্ম্মাত্মন! আমরাই রামের জন্য জাগরণ করিব । অথবা আপনার অগ্রে সত্য করিয়া বলিতেছি, রাম অপেক্ষা প্রিয়তম পৃথিবীতে আমার আর কেহই নাই। আপনি রামের রক্ষার জন্য রাত্ৰিজাগরণে সমুখস্থক হইবেন না। রামের প্রসাদে ইহলোকে আমি বিপুল যশ এবং ধৰ্ম্ম, অর্থ ও কাম লাভের প্রত্যাশা করি ; তাতএব আমি সমুদায় জ্ঞাতিগণের সহিত ধনুধৰ্পরণ-পূর্বক সীতার সহিত নিদ্রান্বিত প্রিয়সখা রামের রক্ষা করিব। আমি সৰ্ব্বদা এই বনে বিচরণ করিয়া থাকি ; সুতরাং এখানকার কিছুই আমার অবিদিত নাই; বিশেষতঃ যুদ্ধে আমি চতুরঙ্গ সৈন্তেরও বেগসহনে সক্ষম। এ প্রকার কহিলে, ধৰ্ম্মনিষ্ঠ মহাত্মা লক্ষণ আমাদের সকলকে অনুনয় করিয়া বলিলেন,– ১-১ দশরথনন্দন রাম সীতার সহিত ভূমিতে শয়ন করিয়া থাকিতে, আমি কিরূপে নিদ্রা বা জীবনোপায়ভুত মুখ সমস্ত ভোগ করিতে সমর্থ হই ? সমুদয় দেব ও দানব যুদ্ধে যাহার কীৰ্ঘ্য সহনে অক্ষম, হে বাল্মীকি-রামায়ণ গুহ ! সেই রাম আজি সীতার সহিত তৃণমধ্যে শয়ন করিয়া আছেন, দর্শন কর। এই রামই রাজা দশরথের অনুরূপ লক্ষণবিশিষ্ট একমাত্র পুল, বিবিধ পরিশ্রমে ও বিস্তর তপস্ত করিয়া রাজা ইহাকে পাইয়াছেন। অতএব ইনি বনবাসী হওয়াতে রাজা অধিক দিন বঁচিবেন না। পৃথিবী নিশ্চয়ই অতি শীঘ্ৰ বিধবা হইবেন । অদ্য রাজমহিলারা সমস্ত দিবস উচ্চৈঃস্বরে চীৎকার করিয়া, অধুনা শ্রান্ত হইয়া নিবৃত্ত হইয়াছেন। নিশ্চয়ই সমুদায় রাজভবন একেবারে নিঃশব্দ হইবে। ফাতঃ কৌশল্যা, রাজা এবং জননী সুমিত্র, ইহারা যে বাচিবেন, কোনমতেই আশা করিতে পারি না । যদি বাচেন, এই রাত্রিমাত্র, আর নহে ; অথবা দেবী সুমিত্রা শক্রকে দেখিবার আশায় বাচিতে পারেন ; কিন্তু বীরজননী কৌশল্যা এই প্রকার দুঃখের অবস্থায় প্রাণত্যাগ করিবেন, তাহাতে সন্দেহ নাই । পিতা বামকে রাজ্য দিতে মনোরথ করিয়া, একেবারেই তাহাতে বঞ্চিত হইয়াছেন ; সুতরাং তিনি রামকে রাজা করিতে না পারিয়া, নিশ্চয়ই বিনষ্ট হইবেন। সেই সময় উপস্থিত হইলে, পিতা যখন পরলোকগমন করিবেন, যাহারা তাহার সমুদায় প্রেতকাৰ্য্যে যোগদান করিবেন, তাহারাই যথার্থ ভাগ্যবান মহাপুরুষ । আহা ! পিতার রাজধানী অযোধ্যা রমণীয় চত্বর সংস্থান, সুবিভক্ত মহীপথ, হৰ্ম্ম্য ও প্রাসাদ এবং সর্বপ্রকার রত্ব সকলে বিভূষিত ; গজ অশ্ব ও রথসমূহে পরিপূর্ণ ; বিবিধ বাছাধবনিতে প্রতিধ্বনিত ; সর্বপ্রকার কল্যাণ বিশিষ্ট ; সৰ্ব্বদাই হৃষ্টপুষ্ট লোক সকলে পরিব্যাপ্ত এবং উদ্যান, উপবন, সমাজ ও উৎসব-পরম্পরায় বিরাজমান। যাহারা তথায় বিচরণ করিবে, তাহারাই সুখী। হে গুহ ! চতুর্দশ বৎসর ব্ৰতপালনান্তে আমরাও কি সত্যপ্রতিজ্ঞ রামের সহিত নিরাপদে ঐ অযোধ্যায় প্রবেশ করিয়া সুখী হইতে পারিব ? রাজপুত্র মহাত্মা লক্ষণ ধনুৰ্ব্বাণ হস্তে দণ্ডায়মান হইয়া, এই প্রকার বিলাপ করিতে লাগিলে