পাতা:বাল্মীকি রামায়ণ - উপেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/৩০৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অযোধ্যাকাণ্ড রজনী অতিবাহিত হইল। প্রাতঃকালে সুনিৰ্ম্মল সুর্য্যমণ্ডল সমুদিত হইলে, এই ভাগীরথী তীরে উভয়ের জটা নিৰ্ম্মাণ করিয়া দিয়া, আমি সুখে দুই জনকে গঙ্গা পার করাইলাম। তখন সেই হস্তিযুথপতিসদৃশ মহাবল তেজস্বী শত্রুদমন রাম ও লক্ষণ আর অপেক্ষা না করিয়া, জটবন্ধল ধারণ এবং উৎকৃষ্ট তৃণীর ও ধনুগ্রহণ-পূর্বক সীতার সহিত ইতস্ততঃ দৃষ্টি নিক্ষেপ করিতে কবিতে গমন করিলেন । ১০-২৫ সপ্তাশীতিতম সর্গ ভরত গুহের মুখে এই নিতান্ত অপ্রিয় কথা শুনিয়া সেই স্থানেই গভীর চিন্তায় নিমগ্ন হইলেন।” তাহার ভুজযুগল অতিবিশাল, স্বন্ধ সিংহের ন্যায় উন্নত, লোচনদয় পদ্মপত্রের ন্যায় আয়ত এবং তিনি অতিমাত্র ধৈৰ্য্যশীল, সুকুমার, যুব ও প্রিয়দর্শন। এই কথা শুনিয়া, তাহার মন অতিশয় ব্যাকুল হইয়া উঠিল। অনন্তর মুহূৰ্ত্তকাল পরে তিনি কথঞ্চিৎ ধৈর্য্যলাভ করিয়া, পুনরায় অস্কুশ দ্বারা বিদ্ধ-হৃদয় হস্তীর ন্যায় সহসা অবসন্ন হইয়া পড়িলেন । ভরতকে মূচ্ছিত দেখিয়া নিষাদরাজের মুখ মলিন হইল এবং তিনি, ভূমিকম্পে বৃক্ষের ন্যায় ব্যথিত হইলেন। সন্নিহিত শক্রত্ন ও তদবস্থ ভরতকে আলিঙ্গন করিয়া শোকাচ্ছন্ন ও সংজ্ঞাহীন হইয়া, উচ্চৈঃস্বরে রোদন করিতে লাগিলেন। তদর্শনে ভরতের মাতৃগণ সকলেই তথায় উপস্থিত হইলেন । র্তাহারা উপবাসে ও ভর্তুবিয়োগে নিতান্ত শীর্ণকায় এবং যার-পর-নাই দীনভাবাপন্ন ছিলেন। সকলে আসিয়া ভূপতিত ভরতের চতুদিক বেষ্টন করিয়া রোদন করিতে লাগিলেন। কৌশল্য নিকটে আসিয়াই নিতান্ত ব্যাকুল-চিত্তে গাঢ়রূপে ১। ভরতের গভীর চিপ্তার কারণ—রাম জটাদি ধারণ করিয়া পুণ্য আরণ্যক ব্ৰতে দীক্ষিত হইয়াছেন, সুতরাং তাছার প্রত্যাবৰ্ত্তম সম্ভবপর নহে, এই সকল ভাৰিয়া তিনি ধ্যামপরায়ণ হইয়াছিলেন! 93 Հ 8:Տ তাহাকে আলিঙ্গন করিলেন। অনন্তর সেই পুত্রৎসলা তপস্বিনী কৌশল্য, আপনার পুত্রকে যেমন, ভরতকেও তেমনি আলিঙ্গন করিয়া, শোক-পরায়ণ৷ হইয়া, রোদন করিতে করিতে র্তাহাকে জিজ্ঞাসা بی-دِ 1 )sfats|Fة বৎস! কোন ব্যাধি ত তোমার শরীরে অস্থখ দিতেছে না ? তাহ ! এই রাজকুলের যে আর কেহই নাই ! এক্ষণে তুমিই একমাত্র ইহার জীবনের অবলম্বন । বৎস । রাম ভ্রাতার সহিত বনবাসী হইয়াছেন ; মহারাজ দশরথ স্বগগত ; আমরা তোমারই মুখ চাহিয়া কেবল বঁচিয়া আছি। এক্ষণে আমাদের সকলকে রক্ষা করে,তোমা ব্যতীত এমন দ্বিতীয় ব্যক্তি নাই । বৎস! লক্ষণের ত কোনরূপ অকুশল সংবাদ শুন নাই ? অথবা, এক পুল্ল ভিন্ন আমার আর পুত্ৰ নাই, সেই পুত্ৰও আবার স্ত্রীর সহিত বনে গিয়াছেন। র্তাহারও ত কোন কুঘটনা শুন নাই ? পরমযশস্বী ভরত মুহূৰ্ত্ত পরে প্রকৃতিস্থ হইয়া, রোদন করিতে করিতে কৌশল্যাকে সান্থনা করিয়া, গুহকে এই কথা বলিলেন,–হে গুহ ! আমার ভ্রাতা রাম কোথায় রজনী যাপন করিয়াছিলেন এবং কি থাইয়া কিরূপ শয্যায় ঘুমাইয়াছিলেন ? সীতা এবং লক্ষণ ইহারাই বা কোথায় ছিলেন ? আমাকে বল নিষাদরাজ গুহ রামের ন্যায় প্রিয় ও উপকারী অতিথির প্রতি যেরূপ ব্যবহার করিয়াছিলেন, সহৰ্মে ভরতের নিকট তাহা বর্ণন করিয়া কহিলেন,—আমি ভক্ষণার্থ নানা প্রকার অন্ন, ভোজনীয় অপুপদি ও বহু ফলমূল রামকে উপহার দিয়াছিলাম । সত্যপরাক্রম রাম আমার প্রতি অনুগ্রহ জন্য তৎসমস্ত বাক্যমাত্রে গ্রহণ করিয়া, পুনরায় আমাকেই দিলেন ; ক্ষত্ৰধৰ্ম্ম স্মরণ করিয়া প্রতিগ্রহ করিলেন না । আমাকে এই কথা বলিলেন,—সখে ! আমরা ক্ষত্রিয়, আমাদের প্রতিগ্রহ করিতে নাই। পরস্তু সৰ্ব্বদা আমাদিগের দান করা উচিত। এই বলিয়া সেই মহাত্মা আমাদের সকলকে