পাতা:বাল্মীকি রামায়ণ - উপেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/৩১৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Հ(t8 রামের রাজ্য অকণ্টকে ভোগ করিবার জন্ত, লক্ষণের সহিত এই সময়ে তাহার অনিষ্ট করিতে তোমার ত অভিলাষ হয় নাই ? ভরদ্বাজের কথা শুনিয়া দুঃখবশতঃ অশ্রীপূর্ণ-নয়নে গদগদবাক্যে ভরত প্রত্যুত্তর করিলেন,—ভগবন! আপনি সর্বিজ্ঞ হইয়াও যদি আমাকে এই প্রকার পাষণ্ড ভাবেন, তাহা হইলে আমার জীবন জন্ম সকলই বৃথা । আমা হইতে এই উপস্থিত বিপদ সংঘটন হয় নাই এবং ইহা অামি কখন মনেও ভাবি নাই ; অতএব আমার প্রতি এরূপ শ্রীতিকটু আজ্ঞা করিবেন না। আমার রাজ্যাভিষেক এবং রামের বনবাস বিষয়ে মাত যাহা রাজাকে বলিয়াছেন, তাহা কোনমতেই আমার অভিমত নহে এবং তাহাতে আমি কোন অংশেই সস্তুষ্ট বা সম্মতও নহি । এই জন্য আমি সেই পুরুষোত্তমকে প্রসন্ন করিব বলিয়া, তাহার চরণদ্বয় বন্দনা করিতে আসিয়াছি এবং তাহাকে অযোধ্যায় লইয়া যাইতে তন্নিকটে আসিয়াছি । ভগবন ! ইহাই আমার একমাত্র উদ্দেশ্য জানিয়া আপনি প্রসন্ন হউন এবং বলুন, মহাপতি রাম সম্প্রতি কোথায় আছেন ? অনন্তর বশিষ্ঠাদি ঋত্বিকগণের প্রার্থনায় ভগবান ভরদ্বাজ প্রসন্ন হইয়া, ভরতকে বলিলেন,–১০-১৯ হে পুরুষসিংহ ! সুপ্রসিদ্ধ রঘুকুলে যখন তোমার জন্ম হইয়াছে, তখন গুরুসেবা, জিতেন্দ্রিয়তা এবং সাধুগণের আনুগত্য এই তিনটি তোমাতেই সম্ভব হয়। তোমার যে ঈদৃশ মনোগত ভাব, তাহা আমি .ানি, তথাপি তাহা অনেকের সাক্ষাতে ব্যক্ত হইয়া দৃঢ়তর হউক এবং তদার তোমার কীৰ্ত্তিও সম্যকরূপে বন্ধিত হউক, এই কারণেই আমি ওরূপ জিজ্ঞাসা করিয়াছি । সীতা ও লক্ষণের সহিত ধৰ্ম্মজ্ঞ রামকেও আমি জানি। তিনি এখন মহাগিরি চিত্ৰকূটে বাস করিতেছেন। হে ইষ্টপ্রদ ধীমন। কল্য তথায় যাইও ; আজি মন্ত্রিগণের সহিত এই স্থানে অবস্থান করিয়া, আমার এই অভীষ্ট সাধন করিতে হইবে । বাল্মীকি-রামায়ণ তখন উদার-দর্শন প্রসিদ্ধযশাঃ রাজনন্দন ভরত যে আজ্ঞ বলিয়া মহৰ্ষির আশ্রমে রাত্রিবাস করিতে মনস্থ করিলেন ২০-৩০ g একনবতিতম সর্গ কৈকেয়ানন্দন ভরত এইরূপে রাত্রিবাসে কৃতমতি হইলে, মহর্ষি তাহকে আতিথ্য-সৎকারার্থ নিমন্ত্রণ করিলেন । ভরত র্তাহাকে কহিলেন,—ভগবন ! বনে যেরূপ দ্রব্য দ্বারা আতিথ্য করা উচিত, সেই সকল পাদ্য অর্ঘ্য দ্বারা আপনি আমার যথেষ্ট আতিথ্য করিয়াছেন। অনন্তর ভরদ্বাজ হাসিতে হাসিতে ভরতকে কহিলেন,—আমি জানি যে, তুমি আমার প্রতি প্রীতি সংযুক্ত, এবং যে কোন দ্রব্যে আতিথ্য করিলেই তুমি সন্তুষ্ট হইবে । তোমার সেনাদিগকে ভোজন করাইতে আমার ইচ্ছা হইতেছে । হে নরেশ্বর ! আমি যেরূপ, করিয়া সস্তুষ্ট হইতে পারি, তোমাকে সেইরূপই করিতে হইবে । হে পুরুষপ্রবর! তুমি কি জন্য সৈন্যদিগকে দূরে রাখিয়া একাকী আমার আশ্রমে আসিলে ? সসৈন্তে না আসিবার কারণ কি ? ভরত কৃতাঞ্জলি হইয়া মহৰ্ষিকে প্রভুত্তর করিলেন,—ভগবন! আশ্রমপীড়া হইবে, এই ভয়েই সসৈন্তে এখানে আসি নাই । রাজা বা রাজপুত্রের কৰ্ত্তব্য যে, যত্বপূর্বক আশ্রমপীড়া পরিহার করেন। ভগবন! প্রধান প্রধান অশ্ব, মনুষ্য এবং উৎকৃষ্ট মত্ত হস্তী সকল একেবারে অনেক স্থান ব্যাপ্ত করিয়া, আমার অনুবন্তী হইয়াছে। তাহারা আশ্রমের বৃক্ষ, জলাশয়, ভূমি ও পণশালাসকল নন্ট না করে, এই ভাবিয়াই তাহাদিগকে দূরে রাখিয়া আমি একাকী আসিয়াছি। ১-৯ মহর্ষি কহিলেন—সেনাদিগকে এই স্থানে আনয়ন কর । ভরত এই আজ্ঞা পাইয়া, সৈন্যদিগকে নিকটে আনয়ন করাইলেন। তখন মহর্ষি অগ্নিগৃহে প্রবেশ