পাতা:বাল্মীকি রামায়ণ - উপেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/৩১৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অযোধ্যাকাও হইয়া কহিতে লাগিলেন,—ভগবন ! শোকে ও উপবাসে শীর্ণদেহ ও নিতান্ত দুঃখিত পিতৃদেবের মহিষী এই যে দেবীকে সাক্ষাৎ দেবরূপিণীর স্যায় দেখিতেছেন, এই কৌশল্যাই, অদিতি যেমন উপেস্ত্রকে, তেমনি সিংহ-গতিসম্পন্ন পুরুষোত্তম রামকে প্রসব করিয়াছেন । ইহার বাম বাহু আশ্রয় করিয়া, এই যিনি ক্ষুণচিত্তে দণ্ডায়মান রহিয়াছেন, ইনি রাজার মধ্যম। মহিষী, দেবী সুমিত্র । পুষ্প সকল বিশীর্ণ হইলে, কণিকার বৃক্ষের শাখা যেমন বনমধ্যে শোভাহীন হইয়া থাকে, তেমনি ইনিও দুঃখিত আছেন। দেবতার ন্যায় রূপবান, বীৰ্য্যশালী, সত্যবিক্রম, সুকুমার লক্ষণ ও শক্রয় এই দেবী সুমিত্রার কুমাররূপে অবতরণ করিয়াছেন। আর র্যাহার জন্য পুরুষোত্তম রাম ও লক্ষণ মৃত্যুসম বিপদ প্রাপ্ত হইয়াছেন এবং রাজা দশরথ পুলহীন হইয়া স্বগে গমন করিয়াছেন, ক্রোধনা, অকৃতবুদ্ধি, গৰিলতা, সুভগমানিনী, ঐশ্বর্ণ্যের অভিলাষিণী, অনাৰ্য্যা হইয়াও আর্য্যবং প্রতীয়মান সেই এই কৈকেয়ী—পাপশিয়া নিষ্ঠুরা ও আমার জননী জানিবেন। আমি যে বর্তমানে বিষম সঙ্কটে পতিত হইয়াছি, ইনিই তাহার মূল । পুরুষশ্রেষ্ঠ ভরত বাপ-গদগদ বাক্যে এই প্রকার কহিয়া, রোষাবিষ্ট ভুজঙ্গের ন্যায় দীর্ঘ নিশ্বাস ত্যাগ করিতে করিতে আরক্তলোচন হইলেন । মহামতি মহর্ষি ভরদ্বাজ ভরতকে এই প্রকার কথা কহিতে দেখিয়া, সস্নেহে তাহকে কহিলেন । ২০-২৯ ভরত ! তুমি কৈকেয়ীকে দোষী বোধ করিও না; কেন না, এই রাম-প্রত্ৰজন পরিণামে মহান সুখহেতু হইবে।” রামের এই বনবাস উপলক্ষে দেব, দানব ও মহাত্মা ঋষিগণ সকলেরই হিত-সাধন হইলে । ৪। দেবগণের প্রেরণায় মন্থর দ্বারা কৈকেয়ীর বুদ্ধি লোপ পাইয়া ছিল । স্বতরাং এই ব্যাপারে উহার কোন দোষ নাই এবং রাবণাদিবধ দেবগণ ও ঋষিগণের অত্যন্ত কল্যাণপ্রদ বলিয়৷ এই বনগমন উত্তরকালে মুখপ্রদ হইবে। ত্রিকালজ্ঞ ঋষি এই বিষয় হৃদয়ে স্থির করিয়া ভরতকে दलिग्नांटझ्न । Ջ(tծ এই বলিয়া মহর্ষি আশীৰ্ব্বাদ করিলে, ভরত তদীয় অনুগ্রহলাভে কৃতকৃতাৰ্থ হইয় তাহাকে অভিবাদন, প্রদক্ষিণ ও আমন্ত্রণ করিয়া সৈন্যদিগকে সজ্জিত হইতে আজ্ঞা করিলেন । তখন বহুবিধ লোক বহুবিধ সুবৰ্ণভূষিত দিব্য অশ্ব-রথ যোজনা করিয়া প্রস্থানার্থ তাহাতে আরোহণ করিল । স্বর্ণময় গলবন্ধন-রজন্তু ও পতাকাবিশিষ্ট হস্তী ও হস্তিনী সকল গ্রীষ্মাবসনে শব্দীয়মান জলদমণ্ডলীর স্যায় দশ দিক নিনাদিত করত প্রস্থান করিল। ক্ষুদ্র মহং নানা প্রকারের বহুমূল্য যান সকল এবং পদাতিগণ পারচারে গমন করিতে লাগিল । অনন্তর কৌশল্যা প্রভৃতি রাজমহিষীগণ প্রমুদিত হইয়া, রামদর্শন-আকাঙ্ক্ষায় উৎকৃষ্ট যানসমূহে আরোহণ করিয়া প্রস্থান করিলেন। শ্রীমান ভরত সপরিবারে তরুণ চন্দ্র ও সুৰ্য্যের ন্যায় তাভাসমান শোভন শিবিকায় আরোহণ করিয়া গমন করিতে লাগিলেন। সেই গজবাজিসমাকুল মহতী সেনা সমুথিত মহামেঘের ন্যায় দক্ষিণদিক আচ্ছন্ন করিয়া প্রস্থান করিল। ঐ মহতী সেনা প্রস্থান-সময়ে ভাগীরথীর পশ্চিম তীরে সন্নিবিষ্ট পৰ্ববত ও নদী সকলে বিদ্যমান, মুগপক্ষি-সেবিত শোভন অরণ্য সকল অতিক্রম করিয়া চলিল। সৈন্যমধ্যে সে সকল হস্তী ও অশ্ব ছিল, তাহারা নিতান্ত আহলাদিত হইয়া উঠিল । বনমধ্যগত মৃগ ও পক্ষিসমূহ ঐ সৈন্য দর্শনে অতিমাত্র ভীত হইল। তৎকালে ভরতের বিপুলবাহিনী মহাবনে প্রবেশ করিয়া পরম শোভা বিস্তার করিল। ৩০-৪০ ত্রিনবতিতম সর্গ সেই মহতী সেনা ঐরূপে প্রস্থান করিলে, বনবাসী যুথপতি মত্ত হস্তী সকল তৎকর্তৃক নিপীড়িত হইয়া, দলে দলে চতুর্দিকে ধাবমান হইল । নদীতীরে, পৰ্ব্বত-শিখরে ও বনস্থলে ভলুকগণ, পৃষত ও রুরু