পাতা:বাল্মীকি রামায়ণ - উপেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/৩৮১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Ö আরণ্যকাণ্ড প্রবৃত্ত হইল। মুনির সহিত ক্রীড়াপরায়ণ সেই অপ্সরাগণেরই এই সুমধুর বাদ্যশব্দ এবং বলয়াদি ভূষণধ্বনি-মিশ্রিত এই মনোহর সঙ্গীতধ্বনি শ্রত হইতেছে । মহাযশা রাম ভ্রাতা লক্ষণের সহিত বিশুদ্ধচিত্ত মহর্ষির এই কথায় আশ্চৰ্য্য বোধ করিলেন এবং “কি আশ্চর্ম্য ব্যাপার ” এই বলিতে বলিতে চতুর্দিকে কুশ চার-পরিব্যাপ্ত এবং ব্রাহ্মী-শোভাসমম্বিত আশ্রমমণ্ডল তাহার দর্শনগোচর হইল । তিনি অবিলম্বে ভ্রাতা ও ভাৰ্য্যার সহিত সেই শোভাসম্পন্ন আশ্রণমণ্ডলে প্রবেশ-পূর্বক মহর্ষিগণ-কর্তৃক পূজ্যমান হইয়া, পরম মুখে তথায় অবস্থিতি করিলেন । ১১-২২ অনন্তর তিনি পৰ্য্যায়ক্রমে সমুদায় ঋষিরই আশ্রমে পদার্পণ করিলেন । সেই মহাস্ত্ৰবিং রাম পূর্বে র্যাহীদের আশ্রমে বাস করিয়াছিলেন, এই উপলক্ষে র্তাহীদেরও আশ্রমে পুনরায় গমন করিলেন। তিনি কোন আশ্রমে পূর্ণ দশ মাস, কোথাও সম্পূর্ণ এক বৎসর, কোথাও চারি মাস, কোথাও পাঁচ মাস, কোথাও ছয় মাস, কোথাও এক বৎসরের অধিক, কোথাও মাসাদ্ধের অধিক, কোথাও তিন মাস এবং কোথাও বা আট মাস অবস্থিতি করিলেন । সর্বত্রই তাহার সুখে অতিবাহিত হইল। তলং অtশ্রমবাসকালে ঋষিগণের আনুকূল্যে সীতার সহিত ধৰ্ম্মতত্ত্বজ্ঞ রাঘবের দশ বৎসর অতীত হইয়া গেল। এইরূপে ধৰ্ম্মজ্ঞ রাম সীতার সহিত সমুদায় পুণ্যাশ্রম পর্য্যটন-পূর্বক পুনরায় মহৰ্ষি মুর্তক্ষের আশ্রমপদে আগমন করিলেন। তথায় সমাগত হইলে, ঋষিগণ-কর্তৃক সম্মানিত হইয়া, তিনি কিঞ্চিৎকাল তথায় বাস করিলেন। অনন্তর ঐ আশ্রমে অবস্থিতি করিতে করিতে, কোন সময়ে মহৰ্ষি সুতীক্ষের নিকটে অবস্থিত হইয়া বিনয়-পূর্বক জিজ্ঞাসা করিলেন, ভগবন । আমি লোকের মুখে নিত্যই শুনিতে পাই, মুনিসত্তম অগস্ত্য এই অরণ্যেই অবস্থিতি করেন, రిసి লোকে কথোপকথনসময়ে এইপ্রকার বলিয়া থাকে। কিন্তু এই অরণ্য অতিশয় বৃহৎ বলিয়া তাহার আশ্রম আমার জানা নাই। অতএব ধীমান মহর্ষি অগস্ত্যের রমণীয় আশ্রমপদ কোথায়, বলিয়া দিন। আমি ভ্রাতা ও ভাৰ্য্যার সহিত মিলিয়া, তদীয় অনুগ্রহলাভ ও অভিবাদনার্থ গমন করিব, এবং তথায় গিয়া স্বয়ং মুনিবরের শুশ্ৰুষা করিব ; এইপ্রকার মহান মনোরথ মদীয় হৃদয়ে উৎপন্ন হইয়াছে । ২৩-৩৩ মহর্ষি সুতীক্ষ্ণ পরমধাৰ্ম্মিক দশরথতনয় রামের এই কথা শুনিয়া প্রত্যুত্তর করিলেন,–হে রঘুনন্দন! এক্ষণে তুমি সীতার সহিত ভগবান অগ্রস্ত্যের শরণাপন্ন হও, এই কথা আমিও তোমাকে ও লক্ষণকে বলিবার জন্য বাসনা করিয়াছিলাম । ভাগ্যবশতঃ তুমি নিজমুখেই এই কথা ব্যক্ত করিলে। রাম ! মহৰ্ষি অগস্ত্য যে প্রদেশে অবস্থিতি করেন, তাহা বলিতেছি ;—তাত ! এই আশ্রম হইতে দক্ষিণদিকে চারি যোজন পথ গমন কর ; পরে অগস্ত্য মুনির ভ্রাতার আশ্রম দেখিতে পাইলে । যে আশ্রম স্থলবহুল, যেখানে পিপপলী বৃক্ষের বন শোভা পাইতেছে ও নানাজাতীয় বিহঙ্গম শব্দ করিতেছে, তাদৃশ পরম মনোহর ও বিবিধ পুষ্পফল-সমন্বিত বনবিভাগে ঐ আশ্রমপদ প্রতিষ্ঠিত । তথায় স্বচ্ছসলিলসম্পন্ন বিবিধ সরোবর হংস ও কারগুবগণে পরিপূর্ণ এবং চক্রবাকসমূহে শোভান্বিত রহিয়াছে। রাম ! সেই আশ্রমে এক রাত্রি বাস করিয়া, তন্নিকটবৰ্ত্তী বনের পার্শ্বভাগ দিয়া, প্রভাতে দক্ষিণদিক আশ্রয় করিয়া গমন করিবে। এক-যোজন পথ গমন করিলেই বিবিধ বৃক্ষশোভিত রমণীয় বনবিভাগে মহৰ্ষি অগস্ত্যের আশ্রমপদ দেখিতে পাইবে । সীতা ও লক্ষণ তোমার সহিত তথায় অবস্থিতি করিয়া পরম খ্ৰীতি প্রাপ্ত হইবেন ; কেন না, সেই নানাবিধ বৃক্ষযুক্ত আরণ্যপ্রদেশ অতি রমণীয়। আয়ি মহামতে । মহর্ষি অগস্ত্যকে দর্শন করিতে যদি