পাতা:বাল্মীকি রামায়ণ - উপেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/৩৮২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

రిషిe অভিলাষ করিয়া থাক, তাহা হইলে অদ্যই গমনে কৃতসংকল্প হও । ৩৪-৪৩ এই কথা শুনিয়া, রাম তাহাকে অভিবাদন-পূর্বক ভ্রাতা ও ভাৰ্য্যার সহিত অগস্ত্যের উদ্দেশে প্রস্থান করিলেন। পথে যাইবার সময় বহুসংখ্য বিচিত্র বন, মেঘ সদৃশ পর্বত এবং নদী ও সরোবর সকল তাহার দৃষ্ট্রিপথে উপস্থিত হইতে লাগিল। এইরূপে তিনি সুতীক্ষুের উপদিষ্ট পথে যথাস্থথে গমন করিয়া, পরম আহলাদিত হইয়া, লক্ষণকে কহিলেন,—নিশ্চয়ই পুণ্যকৰ্ম্ম মহানুভব অগস্ত্য ঋষির ভ্রাতার আশ্রম ঐ দেখা যাইতেছে। কেন না, যেমন শুনিয়াছিলাম, সেইরূপই পথিমধ্যে এই অরণ্যে যাইতে যাইতে ফলপুপভারে অবনত সহস্ৰ সহস্ৰ বৃক্ষ আমার নয়নপথে পতিত হইতেছে। ঐ দেখ, পক্ক পিপপলী-ফলের কটু গন্ধ পবন-কর্তৃক উৎক্ষিপ্ত হইয়া আসিতেছে। স্থানে স্থানে সঞ্চিত কাষ্ঠরাশি এবং ছিন্ন বৈদুৰ্য্যমণিবর্ণ কুশ সকলও লক্ষিত হইতেছে। আশ্রমস্থ অগ্নির ঐ সেই ধূমশিখা কৃষ্ণ-মেঘযুক্ত পৰ্ব্বতশিখরের ন্যায় বনমধ্যে দেখা যাইতেছে এবং ঐ দ্বিজাতিগণ মুনিৰ্ম্মল তীর্থসলিলে স্নান করিয়া, স্বয়ং আহত কুসুমসমূহে ইষ্টদেবের আরাধনা করিতেছেন। হে সৌম্য ! মহর্ষি স্বতীক্ষের প্রমুখাৎ যেরূপ শ্রবণ করিয়াছিলাম, তদনুসারে এই সকল দর্শন করিয়া, আমার নিশ্চয় বোধ হইতেছে, ইহাই অগস্ত্যের ভ্রাতার আশ্রম f ৪৪-৫৩ মহৰ্ষি অগস্ত্য লোক সকলের হিতমানসে বর্ণপূর্বক সাক্ষাৎ মৃত্যুসম দৈত্যকে নিগৃহীত করিয়া, এই দক্ষিণদিককে সকলের বাসযোগ্য করিয়াছেন। এইরূপ প্রসিদ্ধি আছে, পূর্বে একদা মহাস্থর ব্রাহ্মণঘাতী বাতাপি ও ইল্বল নামে দুই ক্ররক ভ্রাত একত্র এই অরণ্যে বাস করিত। উহাদের মধ্যে নির্দয় ইহুল শ্রাদ্ধ উদ্দেশে ব্রাহ্মণবেশ ধারণ ও সংস্কৃত উচ্চারণপূর্বক ব্রাহ্মণদিগকে নিমন্ত্রণ বাল্মীকি-রামায়ণ করিত। ব্রাহ্মণের উপস্থিত হইলে, স্বীয় ভ্রাত মেষরূপী বাতাপিকে শ্রাদ্ধবিহিত অনুষ্ঠানামুসারে উত্তমরূপে পাক করিয়া, তাহাদিগকে ভোজন করাইত। অনন্তর ব্রাহ্মণগণ ভোজন করিলে, ইল্বল অতি উচ্চৈঃস্বরে ‘বাতাপি । নির্গত হও, এই কথা বলিত। বাতাপি ভ্রাতার কথা শুনিয়া, মেষের ন্যায় শব্দ করিতে করিতে ব্রাহ্মণদিগের শরীর ভেদ করিয়া বিনিগত হইত। সেই ইচ্ছানুরূপ মূৰ্ত্তিধারী মাংসাশী অসুরের এইরূপে প্রতিদিন পরম্পর মিলিত হইয়া সস্রে সহস্ৰ ব্ৰহ্মহত্যা করিত । তদর্শনে মহর্ষি অগস্ত্য দেবগণের প্রার্থনাপরতন্ত্র হইয়া, শ্রাদ্ধব্যাপার অনুভব করত মহাসুর বাতাপিকে ভক্ষণ করেন, এইরূপ জনশ্রুতি আছে। পরে শ্রাদ্ধ সম্পন্ন হইল, এইপ্রকার কহিয়া, ব্রাহ্মণগণকে হস্তপ্রক্ষালনার্থ জলদানপূর্বক বহির্গত হও, বলিয়া, ইহুল ভ্রাতাকে আবাহন করিতে লাগিল। তদর্শনে মুনিসত্তম ধীমান অগস্ত্য হাস্ত করিয়া বিপ্রঘাতী ইল্বলকে কহিলেন, আমি তোমার মেঘরূপী ভ্রাতা বাতাপিকে জীর্ণ করিয়াছি ; সে যম-ভবনে গমন করিয়াছে ; তাহার বাহির হইবার সামর্থ্য কোথায় ? নিশাচর ইল্বল ভ্রাতৃনিধন বার্তা শ্রবণ করিয়া ক্রোধ সহকারে মহর্ষি অগস্ত্যকে ধর্ষণ করিতে উদ্যত হইল। অনন্তর সে আক্রমণ করিবামাত্র দীপ্ততেজা মহর্ষির প্রজ্বলিত অগ্নি তুল্য দৃষ্টিপাতে একবারেই দগ্ধ হইয়া প্রাণত্যাগ করিল। যিনি ব্রাহ্মণগণের প্রতি অমুকম্প-বশতঃ এইপ্রকার দুষ্কর অনুষ্ঠান করিয়াছিলেন, সেই অগস্ত্যের ভ্রাতৃদেবেরই এই তড়াগ-সমন্বিত শোভন আশ্রম । রাম লক্ষণের সহিত এইপ্রকার কথোপকথন করিলে ভগবান ভাস্কর অস্তাচলচুড়া অবলম্বন করিলেন, সন্ধ্যা আগমন করিল। তখন তিনি ভ্রাতার সহিত বিধিবৎ সায়ংসন্ধ্যা সমাপন করিয়া, অগস্ত্যভ্রাতার আশ্রমে প্রবেশ ও তাহাকে অভিবাদন করিলেন এবং ঋষি-কর্তৃক বিশিষ্টরূপে