পাতা:বাল্মীকি রামায়ণ - উপেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/৩৯১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আরণ্যকfগু জলাঞ্জলি দিয়া সৰ্ববান্তঃকরণে আপনাকেই আশ্রয় করিয়াছেন। হে বনবাসিন ! আপনার ভ্রাতা মহাত্মা ভরত তাপসধৰ্ম্ম আশ্রয় করিয়া বনবাসী না হইলেও আপনার অমুকারী হইয়া স্বৰ্গ জয় করিয়াছেন। মনুষ্য পিতৃস্বভাব প্রাপ্ত হয় না, মাতৃস্বভাবেরই অনুকরণ করে, এই ষে লোকপ্রবাদ প্রচলিত অাছে, ভরত তাহার অন্যথা করিলেন । কিন্তু রাজা দশরথ র্যাহার ভক্ট এবং সাধু ভরত যাহার পুত্র, সেই জননী কৈকেয়ী কিরূপে এ প্রকার ক্রসুরমুদ্ধি হইলেন ? ২৬-৩৫ ধাৰ্ম্মিক লক্ষণ ভ্ৰাতৃস্নেহবশতঃ এই প্রকার বলিলে পর রাম জননী কৈকেয়ীর সেই নিন্দাবাদ সহ করিতে না পারিয়া, কহিতে লাগিলেন,—ভাত । মধ্যম মাত কৈকেয়ীর নিন্দ করিও না । তুমি কেবল ইক্ষাকুনাথ ভরতেরই গুণের কথা সকল কীৰ্ত্তন কর। যদিও আমার বুদ্ধি একমাত্র বনবাসেই নিশ্চিত ও দৃঢ়ব্ৰত হইয়াছে, তথাপি ভরতের স্নেহে অভিভূত হইয়া মুহমান হইয়া থাকে। ভরতের প্রিয়, মধুর, হৃদয়ের অমৃতস্বরূপ ও মনের আহলাদজনক কথা সকল আমার মনে উদিত হইতেছে । না জানি, কত দিনে আবার মহাত্মা ভরত ও বীর শক্ৰয়ের সহিত মিলিত হইব । কাকুৎস্থ রাম এই প্রকার বিলাপ করিতে করিতে ভ্রাতা ও সাতার সহিত গোদাবরীতে গমন-পূর্বক স্নান করিলেন। পরে সকলে গোদাবরীসলিলে পিতৃদেবগণের তর্পণ করিয়া, উদিত সুৰ্য্য ও অপরাপর দেবগণের স্তব সমাধা করিলেন। ভগবান রুদ্র ভগবতী পাৰ্বতী ও ননদীর সহিত স্নানান্তে যে প্রকার শোভা পান, সীতা ও লক্ষণের সহিত কৃতস্নান হইয়া রামও সেইরূপ শোভা ধারণ করিলেন । ৩৬-৪৩ ২। বনবাসে সুনিশ্চিত বুদ্ধি ও ভরতম্বেছ প্রযুক্ত ক্রসমাপ্তির পূর্বেই ভরত দর্শনার্ধ ব্যাকুল হইয়া থাকে। లిఫిసి সপ্তদশ সগ রাম, সীতা, লক্ষণ সকলে কৃতমান হইয়া, সেই গোদাবরীতার হইতে স্বীয় অtশ্রমে প্রত্যাগমন করিলেন।” রাম তাশ্রমে আসিয়া, লক্ষণের সহিত পৌৰ্ব্বান্ত্রিককৰ্ম্ম সমাপনান্তে পণশালায় প্রবেশ করিলেন এবং মহর্ষিগণ-কর্তৃক পূজিত হইয়া তথায় সুখে বাস করিতে লাগিলেন। তৎকালে সীতার সহিত পণশালায় আসীন হওয়াতে মহাবাহু রাম চিত্রানব্ক্ষত্রসমন্বিত চন্দ্রের ন্যায় শোভা ধারণ করিলেন । অনন্তর ভ্রাল লক্ষণের সহিত নানাপ্রকার কথোপকথন আরম্ভ করিলেন । এইরূপে তিনি আসীন হইয়া কথাবাৰ্ত্তীয় নিবিষ্ট আছেন, এমন সময়ে কোন রাক্ষসী যদৃচ্ছাক্রমে তথায় আগমন করিল। ঐ রাক্ষসী দশানন রাবণের ভগিনী, নাম শূৰ্পণখা । সে দেবোপম রামের নিকটবর্তিনী হইয়া তাহাকে দর্শন করিল। দেখিল, তাহার মুখমণ্ডল প্রদীপ্ত, বাহু আজানুলম্বিত, লোচনযুগল পদ্মপত্রসদৃশ বিস্তৃত, গতি গজতুল্য, মস্তক জটামণ্ডলে মণ্ডিত, অঙ্গপ্রত্যঙ্গ অতিশয় কোমল, বলবিক্রম অসীম, শরীর রাজলক্ষণসম্পন্ন, বর্ণ নীলপদ্মের ন্যায় শ্যাম, প্রভা কন্দপের সদৃশ। এইরূপ সাক্ষাৎ ইন্দ্রের স্যায় রামকে দর্শন করিয়া, রাক্ষসী কামে মোহিত হইল। রাম সুমুখ, রাক্ষসী দুৰ্ম্ম গ্ৰী ; রামের মধ্যদেশ গোলাকার, রাক্ষসীর উদর অতি বৃহৎ ; রামের নয়নদ্বয় বিশাল, রাক্ষসীর নয়ন অতি কুৎসিত ; রাম মুকেশসম্পন্ন, রাক্ষসীর কেশ তাম্রবর্ণ; রাম প্রিয়রপ, রাক্ষসীর রূপ নিতান্ত কদৰ্য্য ; রামের স্বর অতি মিষ্ট, রাক্ষসীর স্বর নিতান্ত কর্কশ ও ভীষণ ভয়ঙ্কর ; রাম তরুণ, রাক্ষসী দারুণ বৃদ্ধ ; ১ । ১৬শ সর্গে হেমন্ত ঋতুর বর্ণন করিয়া তাহার পর তিন বৎসর অতীত হইলে কোন সময় চৈত্র মাসে ভাবী সকল রাক্ষসকুল নাশের কারণ পূৰ্পণখাবৃত্তান্ত ১৭শ সর্গে বর্ণিত হইয়াছে। এই স্থানে আশ্রম শব্দে তপোবন বুঝিতে হইবে। তপোবনে মঠে ব্ৰহ্মচৰ্যাদাবাশ্রমোহ খ্রিয়ামূ- ইভি ৰাণঃ।