পাতা:বাল্মীকি রামায়ণ - উপেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/৩৯৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

O অরণ্যকাগু ○"》 দারপরিগ্রহ হয় নাই।” ইনি পূর্বে কখন স্ত্রীমুখসস্তোগ করেন নাই। এইজন্য বিবাহার্থী হইয়াছেন। বিশেষতঃ ইনি যুব, অতএব তোমার অনুরূপ স্বামী হইবেন। হে বিশালাক্ষি ! সূৰ্য্যপ্রভা যেমন সুমেরুকে ভজনা করে, তুমিও তেমনি সপত্নীবিহীন হইয়া, আমার এই ভ্রাতাকে স্বামিরূপে সেবা কর । কামমোহিত রাক্ষসী রামের এই কথা শুনিয়া, তাহাকে ত্যাগ করিয়া, সহসা লক্ষণকে গিয়া বলিতে লাগিল,—আমি রমণীকুলের মধ্যে বরবর্ণিনী ; অতএব তোমার এই রূপের উপযুক্ত ভাৰ্য্যা । তুমি আমার সহিত সুখে সমুদায় দণ্ডককানন বিচরণ করিবে । অনন্তর বাক্যবিশারদ স্বমিত্রাস্থত লক্ষণ রাক্ষসীর এই কথায় মৃদুমন্দ হাস্য করিয়া, তাহাকে এই যুক্তিযুক্ত বাক্য কহিলেন,—১-৮ অয়ি কমলবর্ণিনি ! আমি দাস ; অতএব তুমি আমার ভাৰ্য্যা হইয়া, কিরূপে দাসী হইতে অভিলাষিণী হইয়াছ ? আমি এই জ্যেষ্ঠ ভ্রাতা রামের দাসত্বে নিযুক্ত আছি । হে বিশালাক্ষি ! তুমি সিদ্ধকমা ও প্রমোদাম্বিত হইয়া, সৰ্ব্বতেভাবেই সমৃদ্ধ্যর্থ আম্য রামের কনিষ্ঠ সহধৰ্ম্মিণী হও । তাহা হইলে ইনি এই বিরূপ, অসতী, করালা, নতোদরী ও বৃদ্ধ ভাৰ্য্যকে পরিত্যাগ করিয়া, তোমাকেই ভজনা করিবেন। অয়ি বরবর্ণিনি ! অয়ি বরারোহে ! কোন বিচক্ষণ ব্যক্তি তোমার এই শ্রেষ্ঠ রূপে অনাদর-পূর্বক মানুষীতে আসক্ত হইতে পারে ? লক্ষণ এইপ্রকার কহিলে, লম্বোদরী, সৰ্ব্বলোকভয়ঙ্করী, নিশাচরী শুপণখ, সেই পরিহাস বুঝিতে না পারিয়া, তাহার কথা সত্য বলিয়া বোধ s । चङ्कउनोत्र नंटल अनब्रिहिछनोज्ञ, बझै अर्थ-अथवा 'शिंमস্থলে মিখা দোষালহ নহে, এই জঙ্গই রামের এতাদৃশ উক্তি। রাম অত্যন্ত দয়ালু, তিনি সাহস প্রতাখান করিলে অতিশয় কষ্ট পাইলে বিবেচনায় এইরূপ পরিহাসকণার প্রবর্তন করিয়াছিলেন। ২ । লক্ষ্মণের বাক্যের অর্থ-বিরূপা—বিশিষ্ট্ররূপ ত্ৰৈলোকfহজরী। অসতী—সৰ্ব্বাপেক্ষ উৎকৃষ্ট সতী, করালা—দস্তুরা, নতোদরী— কুশমধ্য, বৃদ্ধ—জ্ঞানবৃদ্ধ । করিল। অনন্তর সে কামে মোহিত হইয়া, পর্ণশালায় সীতার সহিত উপবিষ্ট, পরন্তপ দুর্জেয় রামকে কহিতে লাগিল,—তুমি এই বৃন্ধা, বিরূপ, নিম্নোদরী, ভয়ঙ্করী, অসতী স্ত্রীতে আসক্ত হইয়া, আমাকে সম্মান করিতেছ না ; অতএব তোমার সমক্ষেই এই মুহূর্তে আমি এই মানুষকে ভক্ষণ করিব এবং সপত্নীহীন হইয়া যথাসুখে তোমার সহিত বিচরণ করিব। এই বলিয়া, প্রজ্বলিত-অঙ্গর সদৃশ লোচনশালিনী নিশাচরা অতীব ক্রোধাম্বিত হইয়া, রোহিণীর প্রতি মহতী উস্কার স্তায় মৃগ শাবক-লোচনা সীতার অভিমুখে ধাবমান হইল । ৯-১৭ সেই যমপাশ-সদৃশী রাক্ষসীকে অভিমুখে আসিতে দেখিয়া, মহাবল রাম রোষভরে নিগৃহীত করিয়া লক্ষণকে কহিলেন,—সৌমিত্রে | ক্রুরস্বভাব অনাৰ্য্যগণের সহিত পরিহাস করাও কোনরূপে কৰ্ত্তব্য নয়। দেখ, এই পরিহাস-প্রযুক্তই জানকীর জীবনংশয় ঘটিয়াছে। “ হে পুরুষশ্রেষ্ঠ ! এক্ষণে তুমি এই কামমত্তা মহোদরী, বিরূপ, অসতী রাক্ষসীকে আরও বিরূপ করিয়া দাও । মহাবল লক্ষণ এই কথায় ক্রুদ্ধ হইয়া, খড়গ উত্তোলন করিয়া, রামের সমক্ষেই রাক্ষসীর নাসাকৰ্ণ ছেদন করিয়া দিলেন । ছিন্ননাসাকৰ্ণ, ঘোরস্বভাবা সেই রাক্ষসী তখন বিকটস্বরে চীৎকার করিতে করিতে যেখান হইতে আসিয়াছিল, সেই বনাভিমুখে দ্রুতপদে ধাবমান হইল। অতি ভয়ঙ্করাকার বিরূপ রাক্ষসী শোণিতলিপ্তাঙ্গী হইয়া, বর্ষাকালান মেঘের ন্যায় বিবিধ নাদে শব্দ করিতে লাগিল । অনন্তর সে বাহু উদ্যত করিয়া, রুধির ক্ষরণ ও গৰ্জ্জন করিতে করিতে মহাবনে প্রবেশ করিল। তথায় প্রবেশ করিয়া, সেই বিরূপিত বেশে, রাক্ষসগণে পরিবেষ্টিত জনস্থানবাসী উগ্রতেজ ৩ । অনাৰ্যাগণের সহিত পরিহাসের দোষ—প্ৰত্যক্ষসিদ্ধ সীতার জীবনহানি সভাবনা, ইহা রামাদির পরিহাসের পরিণাম, এবং পরিহাসছলে মিখা বলায় রামের সকল অনার্থ মূল ঘটিয়াছিল।