পাতা:বাল্মীকি রামায়ণ - উপেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/৩৯৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

O জারণ্যকাও জনের রক্ত পান করিব। শূৰ্পণখা এই কথা কহিলে পর খর ক্রুদ্ধ হইয়া যমসদৃশ মহাবল চতুর্দশ রাক্ষসকে আদেশ করিল,—শ্মশ্রীধারী চারপরিধারী ও কৃষ্ণাজিনবাসা দুই জন মানুষ প্রমদার সহিত ঘোর দণ্ডকারণ্যে প্রবেশ করিয়াছে। তোমরা তাহাদিগের দুই জনকে ও সেই দুঃশীলা প্রমদাকে সংহার করিয়া প্রতিনিবৃত্ত হও ; আমার এই ভগিনী তাহাদিগের রুধির পান করিবে । হে রাক্ষসগণ ! তোমরা শীঘ্ৰ গমন করত বল দ্বারা সেই দুই জনকে নিহত করিয়া, আমার ভগিনীর এই মনোরথ পূর্ণ কর। তোমরা তাহাদিগের দুই ভ্রাতাকে যুদ্ধে নিহত করিয়াছ, অবলোকন করিয়া এই ভগিনী অতিশয় হৃষ্ট ও তুষ্ট হইয়া, যুদ্ধস্থলে তাহীদের রুধির পান করিবে। এই প্রকার আজ্ঞা পাইয়া, ঐ চতুর্দশ রাক্ষস বায়ুপ্রেরিত মেঘের স্যায় শূৰ্পণখা সমভিব্যাহারে ঐ স্থানে যাত্রা করিল । ১৪-২৬ বিংশ সগ অনন্তর শূৰ্পণখা রাঘবের আশ্রমে আগত হইয়া, রাক্ষসদিগকে সীতাসমভিব্যাহারা দুই ভ্রাতাকে দেখাইয়া দিল । তাহারা পর্ণশালামধ্যে মহাবল রামকে সীতার সহিত উপবিষ্ট ও লক্ষণ-কর্তৃক সেবিত হইতে অবলোকন করিল। শ্রমান রঘুনন্দন ঐ সকল রাক্ষসদিগকে উপস্থিত দেখিয়া, দীপ্ততেজা ভ্রাতা লক্ষণকে কহিলেন,—সৌমিত্রে । মুহূৰ্ত্তকাল সীতার নিকটে অবস্থান কর। আমি রাক্ষসীর পক্ষপাতী এই ৩ । শাস্তিপর্কে ভীষ্ম বলিয়াছেন, যাজ্ঞবল্কোর তিন পুত্র ;–চন্দ্রকান্ত, মহামেঘ, ও বিজয় । ইহার অভিশাপে পর-দূষণ ও ত্রিশিরা নামে রাক্ষস হইয়াছিল, প্রথমে ভগবদ্বিজ্ঞান ছিল না, পরে শাপান্তে স্মরণে ভগবৎস্বরূপ বিজ্ঞান হওয়ায় উহার যুক্ত হয়, শ্লোক কয়েকটি এই— যাজ্ঞবল্কাস্বত্তা রাজস্থয়ে। বৈ লোকবিশ্রতা: | চলাকাণ্ড-মহামেঘ-বিজয়া ব্ৰাহ্মণোত্তমাঃ । পরশ দূষণশ্চৈব ত্রিশিরা ব্রহ্মবিভমাঃ । আসংস্তেষাঞ্চ শিষ্যাশ্চ চতুর্দশ সহস্রধা ॥ HIV সমস্ত রাক্ষসদিগকে সংহার করিব। তখন লক্ষণ আত্মজ্ঞ রামের বাক্য শ্রবণ করিয়া, তথাস্তু বলিয়া, তাহার কথা শিরোধার্য্য করিলেন। এ দিকে ধৰ্ম্মাত্মা রামচন্দ্রও সুবর্ণভূষিত মহাধনুতে জ্যারোপণ করিয়া, ঐ সকল রাক্ষসকে কহিলেন,—আমরা দুই ভ্রাতা রাম ও লক্ষণ, দশরথের পুত্র ; সীতাসমভিব্যাহারে দুর্গম দণ্ডকারণ্যে প্রবেশ করিয়াছি। আমরা ফলমূলাহারী, জিতেন্দ্রিয়, তাপস ও ধৰ্ম্মচারী হইয়া দণ্ডকারণ্যে বাস করিতেছি, তোমরা কি নিমিত্ত আমাদিগকে হিংসা করিতেছ? তোমরা পাপায়, মহাবনে ঋষিদিগের তাদেশানুসারে তোমাদিগকে বিনাশ করিবার জন্য ধনুর্হস্তে আগমন করিয়াছি। সন্তুষ্ট হইয়া ঐ স্থানেই অবস্থিত হও, আর অগ্রবত্তী হইও না । নিশাচরগণ । যদি প্রাণে প্রয়োজন থাকে, তাহা হইলে নিরস্ত হও । ১-১০ ব্রহ্মঘাতী শূলধারা লোহিতলোচন কঠোরভাষী ভীষণাকৃতি ঐ চতুর্দশ রাক্ষস রামের ঐ বাক্য শ্রবণ করিয়া, সাতিশয় ক্রুদ্ধ হইল এবং পরাক্রমে অনভিজ্ঞতাবশতঃ হস-সহকারে সংরক্তলোচন মধুরভাষী রামকে কহিল,-তুমি আমাদিগের প্রভু মহাত্ম। খরের ক্ৰোধোৎপাদন করিয়াছ ; অতএব এখনই যুদ্ধে আমাদিগের দ্বারা নিহত হইয়া তোমাকে সদ্যই প্রাণ পরিত্যাগ করিতে হইবে । তুমি একাকী, আর আমরা বহু ; অতএব রণস্থলে যুদ্ধ করা দূরে থাকুক, আমাদিগের সম্মুখেই থাকিতে পারিবে না । আমাদিগের এই সমস্ত বাহুপ্রযুক্ত পরিঘ, শূল ও পট্টিশ দ্বারা আহত হইয়া, তোমাকে প্রাণ, বাস্য ও হস্তধৃত ধনু ত্যাগ করিতে হইবে। ঐ চতুর্দশ রাক্ষসেরা এইরূপ বলিয়া, সাতিশয় ক্রুদ্ধ হইয়া, আয়ুধ ও খড়গ উদ্যত করিয়া, রামের অভিমুখে ধাবিত হইল এবং ঐ সকল দুৰ্জ্জয় শূল রামের উপর নিক্ষেপ করিল। মহাতেজ রাম ঐ চতুর্দশ শলই চতুর্দশসংখ্যক স্বর্ণভূষিত শর দ্বারা ছেদন করিয়া ফেলিলেন । তদনন্তর মহাতেজ