পাতা:বাল্মীকি রামায়ণ - উপেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/৩৯৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Jó8 রাম রাক্ষসগণের প্রতি দৃষ্টিনিক্ষেপ করিয়া, পরম ক্রোধাম্বিত হইয়া, ধনুরানমন-পূর্বক শিলাশাণিত সুৰ্য্য তুল্য চতুর্দশ নারীচ গ্রহণ করিলেন ; পরে ইন্দ্র যেমন বজ্র নিক্ষেপ করেন, তেমনি লক্ষ্য উদ্দেশ করিয়া,নারাচ সকল নিক্ষেপ করিলেন। ঐ সকল বাণ বেগে রক্ষিসগণের বক্ষ বিদীর্ণ করিয়া, রুধিরাক্ত হইয়া, বল্মীকমধ্য হইতে সৰ্পগণের ন্যায় ভূমিতে পতিত হইল। রাক্ষসগণও ঐ সকল বাণ দ্বারা বক্ষঃস্থলে বিদ্ধ, শোণিতে স্নাত, বিকৃত ও বিগতপ্রাণ হইয়া, ছিন্নমুল বৃক্ষ সকলের গায় ভূপৃষ্ঠে পতিত হইল। তাহাদিগকে পতিত দেখিয়া, রাক্ষসী শূৰ্পণখা ক্রোধে অধীর হইয়া, খরের নিকটে গমন করিয়া, পুনরায় কাতরভাবে পতিত হইল ; তখন তাহার গাত্রের রক্ত কিঞ্চিৎ শুষ্ক হইয়াছিল ; অতএব সে নিৰ্য্যাসযুক্ত লতার স্যায় দৃষ্ট হইতেছিল। রাক্ষসী ভ্রাতার নিকটে শোকে কাতর হইয়া, ঘোর চীৎকার করিল এবং বিবর্ণ মুখে বিকৃত স্বরে ক্রন্দন করিতে লাগিল। খরের ভগিনী শৰ্পণখা রাক্ষসদিগকে নিপাতিত দর্শন করত বেগে দৌড়িয়া আসিয়া কহিল, রাক্ষসগণ সকলেই বিনষ্ট হইয়াছে। ১১-২৫ একবিংশ সগ অনর্থের নিমিত্ত আগত শূৰ্পণখাকে পুনরায় ভূতলে পতিত দেখিয়া, খর ক্রোধভরে পুনর্বার স্পষ্টস্বরে বলিতে লাগিল,—“আমি তোমার প্রিয় সম্পাদনার্থে মাংসাণী বীর রাক্ষসদিগকে আদেশ করিয়াছি ; তবে তুমি কি জন্য আবার রোদন করিতেছ? ঐ সকল রাক্ষস আমার ভক্ত, অমুর কক্ত ও সর্বদাই হিতকারী ; হস্যমান হইয়াও কোনমতে নিহত হয় না এবং সবান্তঃকরণে আমার আজ্ঞা পালন করিয়া থাকে। অতএব কি জঙ্গ তুমি পুনরায় 'হ নাথ বলিয়া চাংকার করত সৰ্পের স্যায় লুষ্ঠিত হইতেছ ? ইহার কারণ কি, জানিতে অভিলাষ করি। আমি বাল্মীকি-রামায়ণ তোমার রক্ষক থাকিতে তুমি কি জন্য অনাথার ন্যায় বিলাপ করিতেছ ? উথিত হও এবং শোক পরিত্যাগ কর । খর এই প্রকার কছিয়া বিশেষরূপে সত্ত্বনা করিলে দুৰ্দ্ধৰ্ম শূৰ্পণখা নয়নদ্বয় মার্জনা করিয়া তাহাকে বলিল,— ১-৬ আমার নাসাকৰ্ণ উভয়ই গিয়াছে এবং রক্তাক্তকলেবর হইয়াছি। এই অবস্থায় আমি পূর্বের স্যায় পুনরায় তোমার সমীপস্থ হইলাম ; তুমিও আমাকে সবিশেষ সাম্ভুনা করিলে। কিন্তু তুমি আমার প্রিয়ানুষ্ঠান-কামনায় লক্ষণের সহিত ভয়ানকস্বভাব রামকে বধ করিবার জন্য যে চোঁদ জন বীর রাক্ষস প্রেরণ করিয়াছিলে, রাম মৰ্ম্মভেদী বাণ সকল দ্বারা শূল-পট্টিশ-পাণি, অমর্মপরায়ণ সেই রাক্ষসদিগের সকলকেই যুদ্ধে নিহত করিয়াছে। নিরতিশয় তেজস্বী রাক্ষসগণ ক্ষণমধ্যেই ভূতলে পতিত হইল এবং রাম মহৎ কার্য্য সাধন করিল দেখিয়া আমার অত্যন্ত ভয় উপস্থিত হইল। হে নিশাচর ! আমি ভাত, উৎকষ্ঠিত ও বিবঃ হইয়াছি, এবং সর্বত্র রামমূৰ্ত্তি দর্শন করিতেছি, সেই জন্য পুনরায় তোমার শরণাথিনী হইয়াছি। তুমি কি জন্য আমার উদ্ধার করিতেছ না ? আমি বিষাদরূপ কুম্ভীর ও মহাভয়রূপ তরঙ্গমালায় পরিপূর্ণ সুগভীর শোক-সাগরে মগ্ন হইয়াছি। যে সকল মাংসভোজী রাক্ষস আমার অনুগামী হইয়াছিল, রাম নিশিত শরসমূহ দ্বারা তাহাদের সকলকেই হনন করিয়াছে। যদি আমার প্রতি এবং সেই সকল রাক্ষস-সন্তানগণের প্রতি তোমার দয়া থাকে, অথবা রামের সহিত যুদ্ধ করিতে তোমার যদি তেজ ও শক্তি থাকে, তাছা হইলে রাক্ষসকুলের কণ্টকস্বরূপ দণ্ডকবাসী রামকে হনন কর । আর যদি অন্ত সেই শক্রহন্তা রামকে সংহার না কর, তাহা হইলে আমি নিল জ্জা হইয়া তোমার সমক্ষেই প্রাণত্যাগ করিব। আমি বুদ্ধি দ্বারা স্পষ্টই দেখিতে পাইতেছি যে, তুমি চতুরঙ্গ বল লইয়াও