পাতা:বাল্মীকি রামায়ণ - উপেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/৪০৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

O আরণ্যকাণ্ড হইতে লাগিল । রণভূমির সর্বত্রই সহস্ৰ সহস্ৰ রাক্ষস পতিত, ছিন্নভিন্ন, বিদারিত ও কণ্ঠগতপ্রাণ লক্ষিত হইতে লাগিল । উষ্ণীষসহিত মস্তক, কায়সমন্বিত বাহু, হস্ত, উরু, বিবিধ অলঙ্কার, প্রধান প্রধান হস্তী, অশ্ব, রথ, চামর, ব্যজন, ছত্র, ধ্বজ, শূল ও পটিশ, এই সকল রাশি রাশি রামের বাণাঘাতে ছিন্ন হইয়া ভূমিতে পতিত হইল। তাহাদিগকে নিহত দেখিয়া, হতাবশিষ্ট রাক্ষসগণ নিরতিশয় কাতর হইয়া, পরপুরবিজয়ী রামের সম্মুখে গমন করিতে আর সমর্থ হইল না । ৩১-৪৬ في وقصقصيصصدر كي تتC ষড়বিংশ সর্গ ’ মহাবান্ত দুষণ স্বীয় সৈন্য রাম-কর্তৃক নিহত হইতেছে দেখিয়া, ভীমবেশ, দুরাক্রম্য ও সমরে অগ্রবন্তী পঞ্চসহস্র রাক্ষসকে যুদ্ধার্থ আদেশ করিল। তাহারা চতুৰ্দ্দিক হইতে রামের উপরি অনবরত রাশি রাশি শূল, পটিশ, খড়গ, প্রস্তর, বৃক্ষ ও শর বর্মণ করিতে লাগিল। ধৰ্ম্মায়া রাম তীক্ষ বাণ সমূহ দ্বারা সেই প্রাণহারিণী সুবিপুল বৃক্ষ ও শিলাবৃষ্টি প্রতিগ্রহণ করিলেন। বৃন্ন যেমন নিমীলিতলোচনে বর্ণাধারা প্রতিগ্রহ করে, তক্রপে তাহ সহ্য করিয়া, সমুদায় রাক্ষসের বিনাশ নিমিত্ত নিরতিশয় ক্রোধাম্বিত হইলেন । অনন্তর ক্রোধাবিষ্ট ও তেজঃপ্রজুলিত হইয়া, বাণসমূহের দ্বারা দূষণের সহিত যাবতীয় রাক্ষসসৈন্যকে সর্বতোভাবে সমাকীর্ণ করিলেন। পরে শক্রদুয়ণ সেনাপতি দূষণ ক্রুদ্ধ হইয়া, বজসম শরসমূহ দ্বারা রামকে নিবারিত করিল। তখন রাম অত্যন্ত ক্রুদ্ধ হইয়া,ক্ষুরাস্ত্র দ্বারা দূষণের প্রকাণ্ড ধনু ছেদন করিয়া, চারি শরে চারি অশ্ব বিনাশ করিলেন। অশ্বদিগকে তীক্ষু শরে বধ করিয়া, ১। বড় বিংশ সঙ্গে খরের সর্ব্বসৈন্তবিনাশ বর্ণিত হইয়াছে। S)8S অৰ্দ্ধচন্দ্র বাণ দ্বারা সারথির মস্তক ছেদন এবং তিন শরে রাক্ষসের বক্ষঃস্থল বিদ্ধ করিলেন। দূষণ ছিন্নধনুঃ, বিরথ, হতসারথি ও হতাশ্ব হইয়া, রোমহর্ষজনক গিরিশৃঙ্গসদৃশ এক পরিঘ গ্রহণ করিল। উহা স্বর্ণময় পটবস্ত্রে বেষ্টিত, দেবসৈন্য-বিমৰ্দ্দন, লৌহনিৰ্ম্মিত সুতীক্ষু শঙ্কুসমূহ দ্বারা সমাকীর্ণ, বিপক্ষগণের বসায় অভিষিক্ত, বজ্র ও অশনির ন্যায় প্রাণহারী স্পর্শবিশিষ্ট এবং অনায়াসেই শক্রপক্ষের পুরদ্বার বিদীর্ণ করিয়া থাকে। ত্রদুরকর্ম নিশাচর দৃষণ বৃহৎ সপসদৃশ ঐ পরিঘ গ্রহণ করিয়া, রামের অভিমূপে ধাবিত হইল । রাম সেই ধাবমান অবস্থায় দুই শরে দূষণের অলঙ্কারযুক্ত দুই বাহু ছেদন করিলেন। হস্ত ছিন্ন হওয়াতে তাহার সেই বৃহদাকার পরিঘ স্বস্থানভ্ৰষ্ট হইয়া, ইন্দ্রধ্বজের ন্যায় সমরস্থলে পতিত হইল। ছিন্নহস্ত দূষণও বিশীর্ণদন্ত হস্তীর ন্যায় ভূতলে পতিত হইল । ১-১৫ দূষণ যুদ্ধে নিহত ও ভূপতিত হইল দেখিয়া প্রাণিমাত্রেই সাধু সাধু বলিয়া রামের প্রশংসা করিতে লাগিল । এই সময়ে সৈষ্ঠের অগ্রভাগবত্তী তিন জন নিশাচর পরস্পর মিলিত ও মৃত্যুপাশে বদ্ধ হইয়া, ক্রোধভরে রামের অভিমুখে ধাবিত হইতে লাগিল । ইহাদের নাম মহাকপাল, স্থূলাক্ষ ও মহাবল প্রমাম্বী । তন্মধ্যে মহাকপাল সুবিশাল শূল উদ্যত করিয়া, স্থূলাক্ষ পটিশ গ্রহণ করিয়া এবং প্রমার্থী পরশ্বধ গ্রহণ করিয়৷ ধাবমান হইল। রাম তীক্ষ্ণধার মুশাণিত সায়কপরম্পরা প্রয়োগ-পূর্বক সমাগত অতিথির স্যায় অভিমুখে ধাবমান সেই রাক্ষসত্রয়কে প্রতিগ্রহ করিয়া, পরে অসংখ্য শরবর্মণ দ্বারা মহাকপালের মস্তক ছেদন ও প্রমার্থীকে নিহত এবং স্থলাক্ষের স্থল লোচনায় পূরিত করিলেন। স্থূলাক্ষ তাহাতেই নিহত হইয়া শাখান্ধিত বৃহৎ বৃক্ষের স্যায় ভূতলে পতিত হইল। তখন রাম ক্রুদ্ধ হইয়া, পঞ্চসহস্ৰ বাণ দ্বারা দূষণের অনুগামী পঞ্চ সহস্ৰ