পাতা:বাল্মীকি রামায়ণ - উপেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/৪১২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

একত্রিংশ সগ অনন্তর অকম্পন নামে রাক্ষস অতিদ্রুত জনস্থান হইতে বেগে প্রস্থান করিয়া লঙ্কায় প্রবেশ করিয়াছিল এবং রাবণকে কহিল,—” রাজন | জনস্থানবাসী অনেক রাক্ষস এবং স্বয়ং খরও যুদ্ধে নিহত হইয়াছে, আমি কোনরূপে বঁচিয়া আসিয়াছি। সে এই কথা কহিলে, ক্রোধাভরে রাবণের চক্ষু রক্তবর্ণ হইয় উঠল এবং স্বীয় তেজে যেন তাহাকে দগ্ধ করত বলিল,— কোন ব্যক্তির আয়ুঃশেষ হইয়াছে ? ত্রিলোকমধ্যে কাহার আশ্রয় ভুলভ হইয়াছে, সেই জন্য সে হামার সেই ভয়ঙ্কর জনস্থান ধ্বংস করিয়াছে ? অামার অপ্রিয় কাৰ্য্য করিয়া ইন্দ্র, যম, কুবের অথবা বিষ্ণু ও স্বখলাভে সমর্থ হয়েন না । আমি কালের ও কাল, আমি অগ্নিকেও দগ্ধ করি এবং মৃত্যুরও মৃত্যুবিধান করিতে পারি। আমি ক্রুদ্ধ হইলে তেজোবলে অগ্নি ও সুর্মকে দগ্ধ এবং স্বীয় বেগে বায়ুরও বেগ রুদ্ধ করিতে পারি। দশগ্ৰাব রাবণ এই প্রকারে ক্রুদ্ধ হুইলে, অকম্পন ভয়ে কৃতাঞ্জলি হইয়। অভয় প্রার্থনা করিল। রাক্ষসশ্রেষ্ঠ দশানন তাহাকে অভয় প্রধান করিলে সে জার্শ্বস্ত হইয়া, সুস্পষ্ট বাক্যে কহিতে লাগিল । ১-১০ দশরথের রাম নামে এক পুত্ৰ আছেন ; তিনি যুবা, মহৎ-স্কন্ধবিশিষ্ট এবং সাতিশয় শ্রমান ; তাহার অঙ্গ ও রূপ অত্যুৎকৃষ্ট ; ভুজৰয় মৃবৃত্ত ও স্ববিস্তৃত ; বর্ণ শুামল, যশ বহুবিস্তৃত এবং তাহার বলবিক্রমের উপমা নাই। তিনিই জনস্থানে দূষণ ও খরের সংহার করিয়াছেন । রাক্ষসাধিপতি রাবণ অকম্পনের কথা শুনিয়া, নাগরাজের স্যায় নিশ্বাস ত্যাগ করিয়া কহিতে লাগিলেন ;–অকম্পন ! তুমি বলিতে পার, রাম সমুদায় দেবতা ও ইন্দ্রের সহিত মিলিত হইয়া কি ১ । সম্পূর্ণ দণ্ডকারণাকে জনস্থান বলে, অতএব গোদাবরীতীর হইতে গমন করিলেও জনস্থান হইতে গত এইরূপ উক্ত হইয়াছে, খর সংগ্রামে হত, অকম্পন পূৰ্পণখার গমনের পূৰ্ব্বে লঙ্কায় গিয়াছিল। বাল্মীকি-রামায়ণ জনস্থানে আগমন করিয়াছেন ? অকম্পন রাবণের সেই কথা শুনিয়া তাহার নিকটে পুনরায় মহাত্মা রামের বল ও বিক্রম কীৰ্ত্তন করিয়া কহিল,—রাম মহাতেজ, সমুদায় ধনুৰ্দ্ধারীর শ্রেষ্ঠ । তাহার অমুজ লক্ষণও তাহার সমান বলবান । তাহার স্বর দুন্দুভির ন্যায় সুগভীর, চক্ষুদ্বয় রক্তবর্ণ এবং তাহার মুখমণ্ডল পূর্ণচন্দ্র সদৃশ । বায়ু যেমন অগ্নির সহিত মিলিত হইলে সকল ধবংস করিতে সমর্থ হয়, শ্ৰীমান রাজশ্রেষ্ঠ রামও তেমনি লক্ষণের সহিত মিলিত হইয়া, জনস্থান ধ্বংস করিয়াছেন । মহাত্মা দেবগণ তথায় আগমন করেন নাই । রামই কেবল পত্রযুক্ত সুবর্ণপুখ শর সকল সন্ধান করিয়াছেন ; সুতরাং এ বিষয়ে সন্দেহের প্রয়োজন নাই। রামের শর সকল পঞ্চমুখ সৰ্প হইয়া রাক্ষসদিগকে ভক্ষণ করিয়াছে। রাক্ষসগণ যুদ্ধসময়ে শুষ্কপ্রায় হইয়া, যে যে দিকে পলায়ন করিতে লাগিল, সেই সেই দিকেই দেখিতে পাইল, রাম তাহদের পুরোবৰ্ত্তী রহিয়াছেন । হে নিষ্পাপ | এই প্রকারে তিনি আপনার অধিকৃত জনস্থান বিনাশ করিয়াছেন। অকম্পনের কথা শুনিয়া রাবণ কহিলেন, আমি রামলক্ষণের বিনাশ-কারণ জনস্থানে গমন করিব । ১১-২১ রাবণ এইপ্রকার বলিলে অকম্পন কহিতে লাগিল, রাজন। রামের যাদৃশ বল, পৌরুষ ও চরিত্র, তাহ শ্রবণ করুন। মহাযশী রাম ক্রুদ্ধ হইলে বিক্রম দ্বারা তাহাকে আয়ত্ত করা ব্রহ্মাদিরও সাধ্য নহে । তিনি জলপূর্ণ নদীবেগ ও শরসমূহে নিবারণ করিতে পারেন ; আকাশমণ্ডল হইতে গ্রহ, নক্ষত্র ও তারকা সকল পাতিত করিতে পারেন ; অবসন্না পৃথিবীকেও উদ্ধার করিতে পারেন ; বেলাভূমি ভগ্ন করিয়া লোক সকল জলপ্লাবিত করিতে পারেন ; বাণসমূহ দ্বারা সাগরের অথবা বায়ুরও বেগ রোধ করিতে পারেন । কিম্বা সেই মহাযশী শ্ৰীমান পুরুষ-শ্রেষ্ঠ স্বকীয় বিক্রম দ্বারা সমস্ত লোক সংহার করিয়া পুনরপি প্রজা স্থঃি