পাতা:বাল্মীকি রামায়ণ - উপেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/৪১৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

S)&e অতি ঘোর রামরূপ পাতালমুখে পতিত হওয়া তোমার উচিত নহে। অতএব লঙ্কেশ্বর রাক্ষসেন্দ্র । প্রসন্ন হও এবং প্রসন্ন হইয়া লঙ্কায় গমন কর । তথায় তুমি নিত্য স্বকীয় স্ত্রীগণসহ বিহার কর, এবং রামও সভাৰ্য্য হইয়া বনমধ্যে আনন্দ উপভোগ করুন। মরিচ এইরূপ বলিলে, দশগ্ৰীব রাবণ লঙ্কায় প্রতিনিবৃত্ত হইয়া, আপনার উৎকৃষ্ট গৃহে প্রবেশ করিল। ৪২-৫০ দ্বাত্রিংশ সগ এক রাম-কর্তৃক ভীমকৰ্ম্ম চতুদশ সহস্র রাক্ষস নিহত হইয়াছে দেখিয়া এবং খর, দূষণ ও ত্রিশিরাকে হত দেখিয়া শূৰ্পণখা মেঘগম্ভীর স্বরে গর্জন করিতে লাগিল। অন্যের যাহ। নিতান্ত দুস্কর, রাম তাহ করিলেন দেখিয়া শূৰ্পণখা নিতান্ত উদ্বিগ্ন হইয়া, রাবণপালিতা লঙ্কানগরীতে গমন করিল। দেখিল, দীপ্ততেজা দশানন বিমনাগ্রে আসীন রহিয়াছে। দেবগণ যেমন ইন্দ্রের নিকট, মন্ত্রিগণ সেইরূপ তাহার সমীপে বসিয়া আছে। সুর্য্যসঙ্কাশ স্বর্ণময় উৎকৃষ্ট আসনে আসীন হওয়াতে, স্বর্ণময় বেদিমধ্যগত প্রভূততর হবি দ্বারা প্রজুলিত অগ্নির স্যায় তাহার শোভা হইয়াছে। দেব, গন্ধৰ্ব, ভূত ও মহাত্মা ঋষিগণ কেহই তাহাকে সেই বাদতানন ভয়ঙ্কর অন্তকের স্যায় সমরে জয় করিতে পারেন না । দেব ও অমুরগণের সহিত তাহার যে অনেকবার যুদ্ধ হইয়াছিল, তাহার চিহ্নস্বরূপ তাহার শরীরে বজ ও অশনিকৃত এ‘পরম্পর বিরাজ করিতেছে এবং ঐরাবতের দশনাগ্রের আঘাতচিহ্নও তাহার বক্ষঃস্থলে বিরাজ করিতেছে । তাহার বিংশ ভুজ, দশ গ্রীবা, পরিচ্ছদ পরমপরিপাটী, বক্ষঃস্থল বিশাল, এবং শরীর রাজলক্ষণযুক্ত। সে যে বৈদূর্ঘ্য-মণি ধারণ করিয়াছে, তদীয় দেহকান্তিও সেই বৈদূৰ্য্যমণি-সদৃশ। তাহার কুণ্ডল তপ্তকাঞ্চননিৰ্ম্মিত, বাহুসকল পরমসুন্দর, দশনপংক্তি বাল্মীকি-রামায়ণ শুক্লবৰ্ণ, বদনমণ্ডল অতীব মহান এবং পৰ্ব্বতপ্রতিম। দেবগণের সহিত শত শত যুদ্ধে বিষ্ণুচক্রের নিপতনে এবং অন্যান্য অনেক মহাযুদ্ধে শস্ত্র সকলের প্রহারে সে নিরতিশয় তাড়িত এবং তাছার অঙ্গ সমস্তও অমরগণের শস্ত্র দ্বারা আহত হইয়াছে। ক্ষুব্ধ হইবার নহে, এমন সমুদ্রগণেরও ক্ষোভসমুৎপাদনে তাহার বিশেষ ক্ষমতা আছে। সে পর্বতশৃঙ্গ সকলের ক্ষেপণকারী, সুর সকলের প্রমর্দনকারী, ধৰ্ম্ম সকলের উচ্ছেদনকারী, পরদার সকলের সতীধৰ্ম্মহরণকারী, দিব্যাস্ত্র সকলের প্রয়োগকারী ও সর্বযজ্ঞবিল্পকারী । সে ভোগবতীনগরে গমন করিয়৷ নাগরাজ বাসুকিকে ও তক্ষককে পরাজয় করিয়া তক্ষকের প্রিয়ভার্গ্যাকে হরণ করিয়াছে ; কৈলাসপার্বতে গমন ও নরবাহন কুবেরকে জয় করিয়া, তদীয় কামচারী পুষ্পকবিমান বলপূর্বক হরণ করিয়াছে; চৈত্ররথনামক দিব্য বন, নলিনী, নন্দনকানন এবং অন্যান্য দেবোদ্যান সকল ক্রোধে বিনষ্ট করিয়াছে। সেই পপর্বতোপম বার্ল্যবান রাবণ উদীয়মান মহাভাগ চন্দ্র সুর্ঘ্য দুই জনকে দুই বাহুতে নিবারণ করিয়া থাকে। পূর্ণেব সেই বীর মহাবনে দশসহস্ৰ বৎসর তপস্যা করিয়া, ব্রহ্মাকে আপনার শির সকল উপহার প্রদান করিয়াছিল। মনুষ্য ব্যতিরেকে দেব, দানব, গন্ধৰ্ব, পিশাচ, পতগ বা উরগ, আর কাহারও হস্তে যুদ্ধে তাহার মৃত্যুভয় নাই, এই বর লাভ করে। দ্বিজাতিগণ যজ্ঞে মন্ত্রোচ্চারণ-পূর্বক তাহার স্তব করেন। ঐ মহাবল রাবণ হোমশালায় গমন করিয়া, পবিত্র সোম নষ্ট ও দক্ষিণাদান-সময়ে যজ্ঞ সকল ধ্বংস করে ; সৰ্ব্বদা ব্ৰহ্মহত্য, ক্রুরকার্য্যের অনুষ্ঠান ও প্রজাগণের অহি তাচরণ করিয়া থাকে ; নানাপ্রকার উৎপীড়ন জন্য সর্ববলোকভয়াবহ বলিয়া লোকে তাহাকে রাবণ বলিয়া থাকে। রাক্ষস শূর্পণখা অবলোকন করিল, মহাবল, মহাভাগ, পৌলস্ত্য-কুলন্দন, রিপুনাশন রাক্ষসরাজ ভ্রাতা রাবণ দিব্য বস্ত্র, দিব্য আভরণ ও