পাতা:বাল্মীকি রামায়ণ - উপেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/৪২৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

6 وDNى বশত: ঈদৃশ পরুষবাক্য বলিতেছ। হে অমিতবিক্রম রাক্ষস ! আমি তোমাকে গুণ ও দোষ অথবা আত্মপক্ষের ক্ষয় হইতেছে কি না, জিজ্ঞাসা করিতেছি না ; তবে এতাবন্মাত্র বলিতেছি যে, তুমি এই কাৰ্য্যে আমার সহায়তা কর । ১-১৬ আমার বাক্যানুসারে মদীয় সাহায্যার্থে তোমাকে যে কাৰ্য্য করিতে হইবে, আমি তাহ বলিতেছি, শ্রবণ কর । তুমি রজতবিন্দু-বিচিত্রিত সুবর্ণময় মৃগ হইয়া, সেই রামের আশ্রমে যাইয়া, বিদেহ-রাজ-দুহিতা সীতার সম্মুখে বিচরণ ও র্তাহাকে প্রলোভিত করিয়া, যথাভিলধিত প্রদেশে গমন করিবে । বিদেহরাজদুহিতা সীতা তোমাকে মায়াময় স্বর্ণমৃগরূপী দর্শন করিয়া, বিস্ময়ান্বিত হইয়া রামকে শীঘ্র এই মৃগ আনিয়া দিতে বলিবে । অনন্তর কাকুৎস্থ-নন্দল রাম আশ্রম হইতে বহির্গত হইলে, তুমি বহুদূরে গমন করিয়া, অবিকল তদীয় স্বরে ‘হা সীতা ! হা লক্ষণ!” এরূপ বাক্য উচ্চারণ করবে। ঐ শব্দ শ্রবণ করিয়া, লক্ষণও সীতার আদেশে সসন্ত্রমে রামসমীপে গমন করিবে। এইরূপে রাম ও লক্ষণ উভয়ে স্থানান্তরে গমন করিলে, আমি মহেন্দ্রের শচীহরণের স্যায় জনকরাজ-দুহিতা সীতাকে সুখে হরণ করিব। হে সুব্রত নিশাচর মারীচ ! তুমি এইরূপ কাৰ্য্য সমাপা করিয়া যথেচ্ছা গমন করিবে । এই কাৰ্য্য সমাধা হইলে আমি তোমাকে অৰ্দ্ধেক রাজত্ব দিব । হে শুভদৰ্শন ! তুমি এই কাৰ্য্য পূর্ণ করিবার জন্য দণ্ডকারণ্যের পথে মঙ্গলে মঙ্গলে গমন কর ; আমি রধারোহণে তোমার অনুগামী হইতেছি । আমি তোমার সহিত রামকে বঞ্চনা-পূর্বক বিনাযুদ্ধে জনকদুহিতা সীতাকে লাভ করত কৃতকাৰ্য্য হইয়া পুনরায় লঙ্কাপুরীতে প্রতিগমন করিব । হে নিশাচর মারীচ । যদি তুমি মদীয় বাক্য অন্যথা কর, তাহা হইলে অম্ভ আমি তোমাকে হনন করিব। এ কার্য্য অনিচ্ছাতেও তোমাকে অবশ্যই করিতে হইবে । কোন ব্যক্তি বাল্মীকি-রামায়ণ রাজার বিরুদ্ধাচারী হইয়া সুখসমৃদ্ধি লাভ করিতে পারে না। এক্ষণে রামের নিকট গমন করিলে, তোমার জীবন সংশয়ান্বিত হইবে সত্য ; কিন্তু আমার সহিত বিরুদ্ধাচারণ করিলে এখনই তোমার নিশ্চয়ই মৃত্যু ঘটিবে। বুদ্ধি দ্বারা যথোচিত বিবেচনা করিয়া এ বিষয়ে যাহ করা কৰ্ত্তব্য, তাহাই কর । ১৭২৭ একচত্বারিংশ সগ রাক্ষসাধিপতি রাবণ-কর্তৃক রাজার মত অনভিপ্রেত বিষয়ে আদিষ্ট হইয়া, মারীচ শঙ্কাশূন্তচিত্তে তাহাকে এইরূপ পরুষবাক্য বলিল, হে রাক্ষসরাজ ! কোন পাপকৰ্ম্ম ব্যক্তি তোমায় রাজা, মন্ত্রিবর্গ ও পুত্রের সহিত বিনাশহেতু উপদেশ দিয়াছে ? কোন পাপাত্মা তোমার সুখে সুখী হইতেছে না ? কোন ব্যক্তি উপায়চ্ছলে তোমার এই মৃত্যুর উপায় নির্দেশ করিয়াছে ? হে রাক্ষসেশ্বর ! ৫োমার হীনবীৰ্য্য শত্রুরা নিশ্চয়ই তোমাকে বলবান ব্যক্তির সহিত বিরোধ করিয়া তোমাকে বিনষ্ট দেখিতে অভিলাষী হইয়াছে। হে রাবণ ! কোন দুন্টবুদ্ধি ক্ষুদ্রস্বভাব ব্যক্তি তোমাকে এরূপে উপদেশ দিল ? তুমি যে আপনার কৰ্ম্ম-প্রভাবে বিনষ্ট হও, ইহা তাহদের অভিলাষ হইয়াছে । হে নিশাচর রাবণ ! তোমার অমাত্যদিগকে বিনষ্ট করা কৰ্ত্তব্য হইলেও, তুমি তাহাদিগকে হনন করিতেছ না । দেখ, তুমি কামচারী হইয়া কুপথবর্তী হইয়ছ ; তথাপি তাহার তোমাকে সর্বতোভাবে নিগৃহীত করিতেছে না। যে ভূপতি যথেচ্ছাচার-সম্পন্ন ও কামচারী হইয়া কুপথবৰ্ত্তী হয়, সাধু অমাত্যেরা সর্বপ্রকারে তাহাকে নিগৃহীত করেন ; কিন্তু তোমাকে নিগৃহীত করা উচিত হইলেও, তাহারা তদ্বিয়ে উদাসীন রহিয়াছেন। ওহে রাক্ষসরাজ রাবণ । অমাত্যেরা স্বামীর অনুগ্রহে ধৰ্ম্ম, অর্থ, কাম ও যশ লাভ করিয়া থাকেন।