পাতা:বাল্মীকি রামায়ণ - উপেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/৪৩১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আরণ্যকাও স্বীয় গর্ভ যেমন অশ্বতরকে বিনষ্ট করে, পূর্বে এই অরণ্যে রাক্ষস বাতাপিও তেমনি উদরন্থ হইয়া, তপস্বী ব্রাহ্মণগণকে পরিভব করিয়া হনন করিত।” বহুকাল পরে কোন সময়ে সেই বাতাপি তেজস্বী মহামুনি অগস্ত্যকে প্রাপ্ত হইয়া, তাহার ভক্ষ্য হইয়াছিল। পরে শ্রাদ্ধাবসানে বাতাপিকে রাক্ষসরূপ ধারণ করিতে ইচ্ছুক দেখিয়া, ভগবান অগস্ত্য ঈষৎ হাস্য করিয়া বলিয়াছিলেন, বাতাপি ] তুমি তেজে হতজ্ঞান হইয়া, এই জীবলোকে অনেক দ্বিজশ্রেষ্ঠকে বধ করিয়াছ ; সেই জন্য আমি তোমায় জীর্ণ করিলাম। লক্ষণ ! যে মাদৃশ ধৰ্ম্মনিরত ও জিতেন্দ্রিয় ব্যক্তিকে অতিক্রম করে, বাতাপির ন্যায় সেই রাক্ষসেরও প্রাণ বিনষ্ট হইয়া থাকে। অতএব মারীচ আমার নিকট আগত হইয়া, অগস্ত্য কর্তৃক নিহত বা তাপির ন্যায়, মৎকর্তৃক নিহত হইবে। আমাদিগের কৰ্ত্তব্য কাৰ্য্য জানকীতে আয়ত্ত রহিয়াছে ; অতএব তুমি সাবধানে অবস্থিতি কর । আমি এই মুগকে হয় সংহার, না হয় গ্রহণ করিব । হে সৌমিত্রে! এই মৃগচৰ্ম্মে জানকীর অতিমাত্র অভিলাষ উপস্থিত হইয়াছে, দেখ ; অতএব আমি সত্বরই আনয়নার্থে গমন করিব ; এই মৃগের ত্বক সৰ্ব্বাপেক্ষা উৎকৃষ্ট ; অন্ত নিশ্চয়ই ইহার প্রাণত্যাগ ঘটিবে । লক্ষণ ! আমি যতক্ষণ না এই মৃগকে হনন করিতেছি, তাবৎ তুমি সীতার সহিত অপ্ৰমত্তভাবে আশ্রমস্থ থাক । আমি একবাণেই শীঘ্ৰ ইহাকে হত্যা করিয়া, চৰ্ম্ম লইয়া আসিব। লক্ষণ ! তুমি জানকীকে লইয়া, অতি বলবান, বুদ্ধিমান,সৎকাৰ্য্যদক্ষ, বলিশ্রেষ্ঠ জটায়ুর সহিত শঙ্কিত ও সাবধান হইয়া অবস্থিতি কর । ৪১ ৫১ ৬ । অশ্বতরী শৰে গৰ্দভ হইতে অগার গর্ভে উৎপন্ন, এই অর্থ তীর্থ করিয়াছেন । অশ্বতরী কর্কটকী, ইহা কেছ কেহ বলেন । অশ্বতরী বৃশ্চিক1, S)N30: চতুশ্চত্বারিংশ সর্গ পরমতেজস্ব রঘুনন্দন রাম ভ্রাতা লক্ষণকে এইপ্রকার আদেশ করিয়া, স্বর্ণময় মুঃিসম্পন্ন খড়গ ধারণ করিলেন। অনন্তর যাহার তিন স্থলে অবনত, ঈদৃশ স্বীয় অলঙ্কারস্বরূপ ধনু গ্রহণ ও তৃণীরদ্বয় বন্ধন করিয়া প্রচণ্ড-পরাক্রমে প্রস্থান করিলেন। রাজেন্দ্র রামকে অভিমুখে আগমন করিতে দেখিয়া, সেই বনের রাজা মৃগবর, ভয়বশতঃ আন্তহিত হুইয়া, পুনরায় তাহার দর্শনগোচরে উপনীত হইল। রামও ধনু-খড়গ ধারণ করিয়া যে দিকে মৃগ, সেই দিকে ধাবমান হইলেন এবং অবলোকন করিলেন, মৃগ স্বীয় রূপে চতুৰ্দ্দিক আলোকময় করিয়া যেন সম্মুখেই বিরাজ করিতেছে, কখনও ধনুপাণি রামকে বারংরার অবলোকন করিয়া, অরণ্যমধ্যে ধাবমান হইতেছে ; কখন যেন লম্ফপ্রদান-পূর্বক দূরে যাইতেছে ; কখন যেন শঙ্কিত ও সমুদপ্রান্ত হইয়া, আকাশে উল্লম্ফন করিতেছে ; কখনও বা অদৃশ্ব ও কোথাও বা দৃশ্যমান হইতেছে ; এবং কখনও বা বিচ্ছিন্নমেঘসমূহে পরিব্যাপ্ত শারদীয় চন্দ্রমণ্ডলের ন্যায় মুহূৰ্ত্তমাত্র অদৃশ্য ও মুহূৰ্ত্তমাত্রেই দূরে প্রকাশিত হইতেছে। এইরূপে মৃগরূপী মারীচ কখনও দৃষ্ট এবং কখনও বা অদৃষ্ট হইয়া, রামকে আশ্রম হইতে বহু দূরে লইয়া গিয়াছিল । রাম তদীয় মায়ায় মোহিত ও নিতান্ত বিবশ হুইয়া, ক্রোধে আক্রান্ত হইলেন এবং অতীব পরিশ্রান্ত হইয়া, ছায়া আশ্রয়-পূর্বক হরিদ্বর্ণ দুৰ্ব্বাক্ষেত্রে অবস্থান করিলেন ২ মৃগরূপী মারীচ র্তাহাকে উন্মাদিত করিয়াছিল। সে পুনরায় অন্যান্য মৃগগণে পরিবৃত হইয়া, অদূরে র্তাহার দর্শন-গোচরে ১। এই ধমুই বৈষ্ণবধমু—যাহ। মহৰ্ষি অগস্ত: রামকে দিয়াছিলেন। ২। বিকশ শব্দে,চৰ্ম্মলোভপরবশ, অতএব রাম, মারীচমায়ায় বঞ্চিত হইয়াছিলেন । ইহা কতক কছেন। • ইহার মধ্যে প্রথমার্থই শ্ৰেষ্ঠ। অৰতরী নিজ গর্ভ দ্বারাই মৃত হয়। উহার উদর বিদারণ বাতীত সন্তান নিঃস্থত হয় না । ইহাই সৰ্ব্বজনপ্রসিদ্ধি ।