পাতা:বাল্মীকি রামায়ণ - উপেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/৪৪৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

O আরণ্যকাগু বীৰ্য্যবান জটায়ু এইপ্রকার নীতিগর্ভ বাক্যপ্রয়োগ করিয়া, দশানন রাবণের পৃষ্ঠোপরি নিপতিত হইলেন । গজারোহী দুষ্ট গজে আরুঢ় হইয়া, যেমন তাহাকে অঙ্কুশাদি দ্বার তদীয় মস্তক বিদীর্ণ করে, তিনিও তেমনি রাবণকে আক্রমণ-পূর্বক খরতর নখরপ্রহারে সর্বিতোভাবে বিদারিত করিলেন । এইরূপে তুণ্ডাঘাতপূর্বক নখরপ্রহারে রাবণের পৃষ্ঠদেশ বিদীর্ণ করিয়া, পরে তিনি নখ, পক্ষ ও তুণ্ডায়ুধসহায়ে তাহার কেশ সমস্ত উৎপাটিত করিলেন। গুপ্ৰরাজের বারংবার আক্রমণে নিরতিশয় নিপীড়িত হইয়া ক্রোধভরে রাবণের অধরোষ্ঠ ও সর্বশরীর কম্পিত হইয়া উঠিল। তখন সে অতিমাত্র ব্যাকুল ও ক্রুদ্ধ হইয়া, বামক্রোড়ে জানকীকে গাঢ়তর আলিঙ্গন-পূর্বক জটায়ুকে করতল দ্বারা প্রহার করিল। শত্রুদমন জটায়ু সেই তলপ্রহার সহ্য করিয়া, তুণ্ড দ্বারা রাবণের দশ বাম বাহু ছিন্ন করিয়া ফেলিলেন । ছিন্নবান্ত হইলেও রাবণের দেহ হইতে বাহু সকল সহসা বহির্গত হইল। বোধ হইল, যেন বিষজ্বালা-যুক্ত সৰ্পসমূহ বস্মীক হইতে বহির্গমন করিল। বীৰ্য্যবান দশগ্রীব ক্রোধভরে সীতাকে ত্যাগ করিয়া, জটায়ুকে মুষ্টি ও চরণদ্বয় দ্বারা পীড়িত করিল। তখন অনুপমপরাক্রম গৃধ্ররাজ ও রাক্ষসরাজের তুমুল যুদ্ধ হইতে লাগিল । জটায়ু রামের উপকার জন্য পরাক্রমপ্রকাশে প্রবৃত্ত হইলে, রাবণ খড়গ উত্তোলন করিয়া তাহার দুই পক্ষ, দুই পদ এবং দুই পাশ্ব ছেদন করিয়া দিল । রৌদ্রকৰ্ম্ম নিশাচর পক্ষচ্ছেদন করিলে গুপ্ররাজ আসন্নমৃত্যু হইয়া তৎক্ষণাৎ ভূতলে পতিত হইলেন। তিনি রক্তাক্তদেহে ভূতলে পতিত হইলেন দেখিয়া সীত দুঃখিত হইয়া বন্ধুর স্যায় তাহার অভিমুখে দ্রুতবেগে গমন করিলেন। রাবণ নীল-মেঘসদৃশ বিপুলবীৰ্য্য পাণ্ডুরবক্ষ এবং ভূপতিত জটায়ুকে শান্ত দাবানলের স্বকন্যা গমনাপরাধে দণ্ড ভোগ করিয়াছেন। তুমি ঐশ্বৰামদে মত্ত হইয়৷ এই কৰ্ম্ম করিলে অচিরকাল মধ্যেই ইহার ফল ভোগ করিবে। Վ)Գ:Տ স্যায় দর্শন করিল। অনন্তর চন্দ্ৰবদন জনকদুহিতা সীতা রাব নিপীড়িত ও ভূপতিত জটায়ুকে বাহুদ্বয় দ্বারা গ্র}ণ করিয়া পুনঃপুনঃ রোদন করিতে লাগিলেন । ৩৬-৪৬ கம்பக দ্বিপঞ্চাশং সৰ্গ দশানন কর্তৃক গৃধ্ররাজ বিনষ্ট হইলেন দেখিয়া চন্দ্রমুখী সীতা অতীব দুঃখিত হইয়া এই বলিয়৷ বিলাপ করিতে লাগিলেন,—হে কাকুৎস্থ রাম ! চক্ষুস্পন্দনাদি রূপ লক্ষণ, কৃষ্ণপুরুষ দর্শনাদি-বিষয়ক স্বপ্ন, শকুনি–পিঙ্গল্যাদির স্বরবিজ্ঞান ও বাম-দক্ষিণে গমণ ইত্যাদি নিশ্চয়ই মনুষ্যদিগের ভাব সুখ-দুঃখ সুচনা করে দৃষ্ট হইতেছে। অধুনা নিশ্চয়ই মৃগ ও পক্ষিগণ এই বিপদ সূচনা করিয়া, আমার জন্য তোমার অভিমুখে ধাবমান হইতেছে ; তথাপি তুমি স্বীয় এই ব্যসন জানিতে পারিতেছ না । কাকুৎস্থ ! এই বিহঙ্গম জটায়ু কৃপা করিয়া আমার পরিত্রাণার্থ এখানে আগমন-পূর্বক আমারই ভাগ্যদোষে নিহত হইয়া, ভূমিতলে শয়ন করিয়ছেন । রাম ও লক্ষণ ! তোমরা এখন আমায় রক্ষা কর । এই বলিয়া রমণীরত্ব সীতা অতিশয় শঙ্কিত হইয়। উচ্চৈঃস্বরে ক্ৰন্দন করিতে লাগিলেন। নিকটবৰ্ত্তী লোকেরা তাহা শুনিতে লাগিল । তিনি মানমাল্যাভরণ হইয়া, অনাথের স্যায় বিলাপ করিতে আরস্ত করিলে, রাক্ষসাধিপতি রাবণ তাহার অভিমুখে ধাবমান হইল। তদর্শনে তিনি বরংবার ত্যাগ কর, ত্যাগ কর!’ বলিয়া বৃক্ষণদিকে লতার স্যায় বেষ্টনপূর্বক আলিঙ্গন করিতে লাগিলেন। এই অবস্থায় রাবণ র্তাহাকে প্রাপ্ত হইল। ঐ সময়ে তিনি রামবিরহে বনে বারংবার ‘রাম রাম' করিয়া চীৎকার করিতে লাগিলেন। সাক্ষাৎ যমসদৃশ রাবণ আত্মবিনাশার্থে তাহার কেশ ধারণ করিল । জানকী এইরূপ