পাতা:বাল্মীকি রামায়ণ - উপেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/৪৫৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

O অরণ্যকাও সন্ধান-পূর্বক অনায়াসেই সেই শর-নিক্ষেপ করিয়া, ইহাকে আঘাত করিয়াছি । তাহাতে ঐ রাক্ষস মৃগতনু ত্যাগ করিয়া, বিকল-স্বরে কেয়ূরধারী নিশাচরকলেবর ধারণ করিয়াছে । তৎকালে আমার শরে আহত হইয়া, দূর হইতে শ্রবণ করা যায়, এইরূপে মদীয় স্বর অবলম্বন করিয়া এই রক্ষস আৰ্ত্তনাদ করাতে তুমি এক্ষণে জানকীকে ত্যাগ করিয়া এগানে আসিয়াছ । ১৭-২৭ ষষ্টিতম সর্গ আশ্রমে আসিবার সময় রামের বামনেত্রের অধোভাগ অত্যন্ত স্পন্দিত, পদদ্বয় স্খলিত ও শরীর কম্পিত হইতেছিল। তিনি বারংবার দুনিমিত্ত সকল দর্শন করিয়া, সাত কুশলে আছেন কি না, এই কথা বলিতে লাগিলেন। অনন্তর তিনি সীতার দর্শনলালসায় ত্বরিতপদে গমন করিয়া দেখিলেন, আশ্রম শুন্য রহিয়াছে । তদর্শনে তিনি উদ্বিগ্নমনা হইলেন। তিনি সবেগে হস্তাদিবিক্ষেপ ও ইতস্ততঃ ভ্রমণ-পূর্বক সমুদায় পর্ণশালার চারিদিক তন্নতন্ন করিয়া দেখিতে লাগিলেন । পণশালায় গমন করিয়া দেখিলেন, তথায় সীতা নাই । তাহাতে হেমন্তের সমাগমে পদ্মিনীর ন্যায় ঐ পণশালা নিতান্ত শ্রহীন অবস্থায় পতিত রহিয়াছে। দেবতারা উহাকে শ্ৰীশ্ৰষ্ট ও বিধ্বস্ত দেখিয়া একেবারেই তাহা ত্যাগ করিয়া গিয়াছেন। তত্ৰত্য মুগ, পক্ষী ও পুষ্পমাত্রেই মান হইয়াছে। বৃক্ষ সকূল যেন ক্ৰন্দন করিতেছে। অজিন ও কুশ-সকল ইতস্ততঃ বিক্ষিপ্ত এবং কুশাসনসমূহ ছিন্ন-ভিন্ন ও পতিত রহিয়াছে। পণশালার ১ । ইহার পূর্ব পর্ধান্ত সভোগপৃঙ্গার বর্ণিত হইয়াছে, এক্ষণে পুনঃ সীতাপ্রাপ্তি পৰ্যন্ত বিপ্রলভপৃঙ্গাররস বিস্তৃতভাবে বর্ণিত হইয়াছে, অস্তান্ত বীররসাদি ইহার মধ্যে বর্ণিত হইয়াছে। শৃঙ্গার-বিবিধ —সম্ভোগ ও বিপ্ৰলত নামক। বিপ্রলভে দশটি অবস্থা হয়, উছার জষ্টমাবস্থার নাম ॐग्रांश, मर्मजब ठाइन डाव७ बर्विउ श्रेबापष्ट । রবে পরিপূর্ণ হইয়া শোভা পাইতেছে । অগ্নি ھ ہج(Sہ তাদৃশ অবস্থা দৰ্শন করিয়া, তিনি বারংবার এই বলিয়া বিলাপ করিতে লাগিলেন,—সীতা নিশ্চয়ই অপহৃত, মৃতা, নন্ট বা কাহারও কর্তৃক ভক্ষিত হইয়া থাকিবেন ; কিংবা সেই ভীরুস্বভাবা লুকাইয়া আছেন, না হয়, অরণ্য-আশ্রয় করিয়া রহিয়াছেন ; অথবা তিনি ফল-পুপ চয়নার্থ গমন করিয়াছেন ; কিম্বা জলাগে সরোবরে বা নদীতে গমন করিয়া থাকিবেন । রাম এইরূপে যত্নসহকারে অন্বেষণ করিয়া ও বনমধ্যে প্রিয়াকে কোথাও প্রাপ্ত হইলেন না। তখন শোকে তাহার লোচন যুগল রক্তবর্ণ হইয়াছিল, তিনি উন্মত্তের ন্যায় প্রতীয়মান হইতে লাগিলেন। রাম শোক-সাগরে নিমগ্ন হইয়া তখন বৃক্ষ হইতে বৃক্ষান্তরে ধাবমান হইতে লাগিলেন এবং বিলাপ করিতে করিতে নদ, নদী ও পৰ্ববত সকল বিচরণ করিতে লাগিলেন । ১-১১ অনন্তর তিনি উন্মত্তের ন্যায় কদম্বাদি বৃক্ষ সকলকেও সাঁতার কথা জিজ্ঞাসা করিয়া কহিতে লাগিলেন, অয়ি কদম্ব ! তুমি সেই কদম্ববনপ্রিয়া আমার প্রিয়া কোথায় আছেন, দেখিয়াছ ? যদি জান, তাহা হইলে সেই শুভাননার কথা আমাকে বলিয়া দাও । অয়ি বিল্ব ! সেই বিল্পসদৃশস্তনী, পল্লবতুল্য কান্তিমতী, পীতকোঁষেয়পরিধান সীতাকে যদি দেখিয়া থাক, বল । অথবা অর্জন । প্রিয় তোমায় অতিশয় ভালবাসিতেন। সেই ক্ষীণতমু জনকদুহিতা জীবিত আছেন কি না, বল। অথবা এই ককুভবৃক্ষ ককুভেীরু সীতাকে নিশ্চয়ই অবগত আছে । কিম্বা, এই বনস্পতি লতা, কুসুম ও পল্লবসমূহে সমাকীর্ণ এবং ভ্রমরগণের সঙ্গীত ২। রামের উন্মত্তের মত ভ্রমণ, বিলাপ প্রভৃতি, সাধারণ লোকে স্ত্রীবিয়োগে বেঙ্কপ করিয়া থাকে, তাহাষ্ট দেখাইবার নিমিত্ত। পূৰ্ণব্ৰহ্ম সনাতন রামের শোকমিলাপাদি সভবপর নহে। এই জগুই শাস্ত্রকার বলিয়াছেন—“লোকবত্ত, লীলাকৈবল্যমৃ” । ভাগবতে এই কথাগুলি নবমে ও পঞ্চমে বিশেষভাবে বলিয়াছেন ।