পাতা:বাল্মীকি রামায়ণ - উপেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/৪৬০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

రిస్చా বনস্পতি ! তুমি সমুদায় বৃক্ষের প্রধান। জানকীও সকল রমণীর শ্রেষ্ঠ ; অতএব তিনি কোথায়, বলিয়া দাও ; অথবা প্রিয়া তিলকপুপ অতিশয় ভালবাসিতেন, অতএব এই তিলকবৃক্ষ নিশ্চয়ই র্তাহার বিষয় বিদিত আছে। হে অশোক ! তুমি শোকাপনোদন করিয়া থাক ; অতএব শোকোপহতচেতা আমাকে প্রিয়ার সহিত সাক্ষাৎকার করাইয়া তোমার নামটি সার্থক কর। হে তাল! যদি তুমি সেই পক্কতালোপম-স্তনযুক্ত সীতাকে দেখিয়া থাক এবং যদি আমার প্রতি তোমার দয়া থাকে, তাহা হইলে সেই বরারোহা কোথায়, বলিয়া দাও। হে জম্বু জাম্বুনদপ্রভাময়ী প্রিয়াকে যদি দেখিয়া থাক, তাহা হইলে নিঃশঙ্কচিত্তে আমায় বল। হে কণিকার । অদ্য তুমি পুপিত হইয়া অত্যন্ত শোভা পাইতেছ, প্রিয়াও তোমায় অতিশয় স্নেহ করিতেন ; যদি সেই সাধবীকে দেখিয়া থাক, বল । ১২-২০ এইরূপে মহাযশী রাম চুত, নীপ, মহাশাল, পনস, কুরর, দাড়িম্ব, বকুল, পুন্নাগ, চন্দন ও কেতক প্রভৃতি বৃক্ষদিগের নিকটে যাইয়া সীতার কথা জিজ্ঞাসা করিতে করিতে উন্মত্তের স্যায় বনমধ্যে বিচরণ করিতে লাগিলেন । অনন্তর তিনি মৃগপ্রভৃতি পশুদিগকেও জিজ্ঞাসা করিতে আরক্ত করিলেন। কহিলেন, অয়ি মৃগ ! তুমি কি সেই মৃগশিশুনয়ন সীতার বিষয় বিদিত আছ ? অথবা সেই যুগলোচনা মৃগীগণের সহিত মিলিত হইয়া থাকিবেন । হে গজ ! তোমার স্থায় তাহার নাসা ও উরু। যদি তাহাকে দেখিয়া থাক, বল ; আমার বোধ হইতেছে, তুমি তাহার বিষয় জান। অতএব হে গজরাজ ! আমাকে বলিয়া দাও, তিনি কোথায় ? অয়ি ব্যাঘ্র । সেই চন্দ্ৰবদন প্রিয়া মৈথিলীকে যদি দেখিয়া থাক, বিশ্বস্তচিত্তে বল, তোমার ভয় নাই। অয়ি প্রিয়ে । অয়ি কমলেক্ষণে । তুমি আর কি জন্য ধাবমান হইতেছ? আমি নিশ্চয়ই তোমাকে দেখিয়াছি। তুমি কি নিমিত্ত ঐ বাল্মীকি-রামায়ণ বৃক্ষের অন্তরালে লুক্কায়িত হইয়া আমাকে জিজ্ঞাসা করিতেছ না ? অয়ি বরারোহে ! আমি বারংবার বলিতেছি, তুমি অপেক্ষা কর, আর ধাবমান হইও না । আমার প্রতি তোমার কি দয়া নাই ? তুমি ত কখন আমার সহিত অত্যন্ত বিক্রপ কর না ? আমি তোমার পীতকোঁষেয় বসন দেখিয়া জানিতে পারিয়াছি এবং তুমি ধাবমান হইতেছ,দেখিতে পাইয়াছি; অতএব যদি তোমার প্রণয় থাকে, তাহা হইলে নিবৃত্ত হও, আর ধাবমান হইও না । অথবা, অয়ি চারুহাসিনি ! আমি যাহাকে দেখিলাম, সে তুমি নহ; নিশ্চয়ই তোমাকে বিনষ্ট করিয়াছে ; তাহা না হইলে, এই দারুণ ক্লেশের সময়েও তুমি কি কখন জামায় উপেক্ষা করিতে পার? স্পষ্টই বোধ হইতেছে, মাংসভোজী রাক্ষসগণ তাম। কর্তৃক বিরহিত হওয়াতে অঙ্গ সকল খণ্ড খণ্ড করিয়া, প্রিয়াকে ভক্ষণ করিয়াছে । আহা ! তাহার সেই মনোহর দন্তযুক্ত, উৎকৃষ্ট নাসিকা-বিশিষ্ট, শুভকুণ্ডলসমন্বিত পূর্ণচন্দ্রসদৃশ বদন রাক্ষসগ্রস্ত হইয়া নিশ্চয়ই তাহা প্রভাবিহীন হইয়াছে । তাহার গ্রীলা কোমল ও গ্রীবা-ভূষণে ভূষিত এবং বর্ণের জ্যোতি চন্দনবৎ স্বস্নিগ্ধ ও সুবিশদ । রাক্ষসগণ তাদৃশ মনোহর গ্রীবাও ভক্ষণ করিয়াছে । ভক্ষণসময়ে প্রেয়সী আমার না জানি কতই বিলাপ করিয়াছেন । র্তাহার বাহুযুগল পল্লবসদৃশ কোমল এবং হস্তাভরণ-সমূহে সুশোভিত । নিশ্চয়ই রক্ষসেরা ইতস্ততঃ বিক্ষেপ করিয়া তাহাও ভক্ষণ করিয়াছে। তৎকালে ঐ বাহুযুগলের অগ্রভাগ নিশ্চয়ই কম্পিত হইয়াছিল। আহা ! আমি কি রাক্ষসগণের ভক্ষণজন্যই তাহাকে একাকিনী পরিত্যাগ করিয়া আসিয়াছিলাম ! সেই জন্য তিনি বহুবান্ধব। হইয়াও সামর্থ্যহীনার স্যায় রাক্ষসগণের উদরন্থা হইলেন ! হে লক্ষণ! তুমি কি প্রেয়সীকে দেখিয়াছ ? হা প্রিয়ে । হা ভদ্রে । হা সীতে । তুমি কোথায় গেলে । এইরূপে বারংবার বিলাপ করিতে করিতে রাম বনে বনে সবেগে ভ্রমণ করিতে লাগিলেন";