পাতা:বাল্মীকি রামায়ণ - উপেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/৪৬৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

O আরণ্যকাণ্ড চন্দ্র অন্তৰ্হিত, বায়ু অগ্নি ও সুর্য্য প্রভৃতি প্ল্যতিসমূহের বিনাশবশতঃ গাঢ় অন্ধকারে সমুদায় আবৃত, শৈলশিখর সমস্ত বিনিৰ্ম্মথিত, সাগর সকল শুষ্ক, বৃক্ষ লত। ও গুল্ম সমুদায় বিধ্বস্ত এবং কানন-সকল এককলেই বিনিপাতিত হইবে। হে সৌমিত্ৰে ! ইন্দ্রাদি ঈশ্বরগণ যদি মঙ্গলে মঙ্গলে সীতাকে প্রদান না করেন, তাহা হইলে মদীয় পরীক্রম অবলোকন করিবেন। আর কেহই আকাশে উৎপতিত হইতে পারিবে না । ৫১-৬৩ লক্ষণ ! দেখ, অন্ত আমার চাপমুখ-বিনিৰ্ম্ম ত্ত জাবলোকের দুর্নবারণীয় শরজালে নিরন্তর মদিত হইয়া, সমস্ত জগৎ নিরতিশয় ব্যাকুল ও মর্য্যাদাশূন্য হুইবে, এবং মৃগ ও বিহঙ্গম সকল সৰ্বতোভাবে ভ্রান্ত ও বিনষ্ট হইবে । অদ্য আমি সাতার নিমিত্ত আকর্ণস্পষ্ট বাণ-পরম্পরায় বিশ্বসংসার রাক্ষস ও পিশাচ শূন্য করিব। ইহ-সংসারে কেহই আমার ঐ শর নিবারণ করিতে পারিবে না । মদ্য দেবগণ অবলোকন করিবেন, রাশি রাশি শর মৎকর্তৃক অমর্নভরে প্রযুক্ত ও বিযুক্ত হইয়া দূরে গমন করিতেছে। আমার ক্রোধে ভুবন বিনষ্ট হইলে দেব, দানব, পিশাচ ও রাক্ষস, কেহই রক্ষা পাইবে না। ফলতঃ সুর, অসুর, যক্ষ ও রাক্ষস-লোক সমুদায় আমার বাণজালে খণ্ড খণ্ড হইয়া নিপতিত হইবে। অদ্য আমি শরসমূহ প্রয়োগ করিয়া এই সমস্ত লোক মৰ্য্যাদাশূন্ত করিব। প্রিয়া বৈদেহী মরিয়াই যান বা অপহৃতাই হউন, ব্রহ্মাদি ঈশ্বরগণ র্তাহাকে তদবস্থায় প্রত্যপণ না করিলে, আমি সচরাচর এই জগৎ বিনাশ করিব এবং তাহাকে যাবৎ দেখিতে না পাইব, তাবৎ সায়কসমূহে চরাচর সন্তাপিত করিব। এই বলিয়া ক্রোধে তাহার চক্ষুদ্বয় তাম্রবর্ণ হইয় উঠিল এবং অধরোষ্ঠ স্ফীত হইতে লাগিল। “ তিনি বল্কল, অজিন ও জটাজুট বন্ধন করিলেন। তৎকালে ধীমান রাম ক্রুদ্ধ రిస్సా হইয়া, ঐরূপ অনুষ্ঠান করিলে, পূর্বে ত্রিপুরবধোন্তত রীদের দ্যায় তদীয় দেহ প্রতিভাত হইতে লাগিল । অনন্তর তিনি লক্ষণের নিকট হইতে কাৰ্ম্মক গ্রহণ ও দৃঢ় করে ধারণ করিয়া, সৰ্পসদৃশ ঘোর প্রদীপ্ত সায়ক তাহাতে সন্ধান করিলেন এবং যুগান্তকালান অগ্নির ন্যায় ক্রোধভরে কহিতে লাগিলেন, লক্ষণ! জরা, মৃত্যু, কাল ও বিধি এই সকল যেমন প্রাণিমাত্রের প্রতি কোন কালে প্রতিহত হইবার নহে, সেইরূপ আমি ক্রুদ্ধ হইয়াছি, নিঃসন্দেহেই কেহ তামাকে নিবারণ করিতে পরিবে না । মিথিলারাজমন্দিনী সীতাকে প্রকৃত অবস্থায় প্রাপ্ত না হইলে, তামি দেল, গন্ধৰ্ব্ব, মনুষ্য, পমগ ও পর্লনত সহিত সমুদায় জগৎ পরিমদিত করিব।” ৬৪-৭৬ পঞ্চষষ্টিতম সর্গ সীতাহরণকাতর রাম সন্তপ্ত হইয়া সংবর্তক অনলের ন্যায় লোকবিনাশে উদ্যত হইলে, এবং প্রলয়কালে সমস্ত জগৎ দগ্ধ করিতে অভিলাষী মহাদেবের ন্যায় বারংবার নিশ্বাস ত্যাগ করিয়৷ জাযুক্ত শরাসনে দৃষ্টিপাত করিতে আরম্ভ করিলে, লক্ষণ তাহার সেই অদৃষ্টপূর্ব ক্রোধ দর্শন করিয়া, শুল্কমুখে কৃতাঞ্জলিপুটে কহিতে লাগিলেন,—আপনি পূর্বে মৃদু, দান্ত ও সৰ্ব্বভূতহিতানুষ্ঠানে রত ছিলেন। এক্ষণে ক্রোধের বশীভূত হইয়া, স্বীয় স্বভাব ত্যাগ করা যুক্তিযুক্ত হয় না। চন্দ্রে ত্র, মুর্য্যে প্রভা, বায়ুতে গতি, পৃথিবীতে ক্ষমা এবং আপনাতে অনুত্তম যশ ২। রামের ঈদৃশ ক্ৰোধ অভিনয়মাত্র, অস্তথা রাবণ রামকে মনুষ্য বুঝিত না ; রামের এই সকল প্রতিজ্ঞ কেবল ক্রোধব্যঞ্জক মাত্র, স্বতরাং তাহা পালম না করায় দোষ হয় নাই। সীতাকে না পাইলে জগৎ সংস্থার করিব এবং আমার এই কার্ধোর নিদাও কেহ করিবে না। হনুমান স্বাক্ষরকাণ্ডে সীতাকে দর্শন করার পর বলিয়াছেন যে, এই সীতার জন্ত যদি রাম সসাগর। পৃথিবীর পরিবর্তন সাধন করিতেন, তাহা হইলেও উহা যুক্তই হইত।