পাতা:বাল্মীকি রামায়ণ - উপেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/৪৬৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আরণ্যকাও ও চন্দ্র জগতের নেত্র ও সাক্ষাৎ ধৰ্ম্মস্বরূপ এবং যাহাতে সমুদায় সংসার প্রতিষ্ঠিত আছে, সেই মহাবল চন্দ্র-মুৰ্য্যেরও গ্রহণ হইয়া থাকে। হে পুরুষশ্রেষ্ঠ ! এইরূপে অতি মহৎ ভূত এবং দেবগণও যখন দৈবের বশীভূত, তখন সামান্য দেহীদিগের কথা আর কি বলিব ? অধিক কি, ইন্দ্রাদি দেবগণের মধ্যেও নীতি ও অনীতি শ্রত হইয়া থাকে ; অতএব হে নরসিংহ ! আপনি আর ব্যথিত হইবেন না । হে রঘুনন্দন ! জানকী মৃত ও অপঙ্গত হইলেও, প্রাকৃত পুরুষের ন্যায় আপনার শোক করা বিধেয় নহে। হে বীর । আপনার স্যায় সর্বদর্শী ও হিতদশী মানবের। সচরাচর সুমহৎ বিপৎপাতেও শোক করেন না। হে নরশ্রেষ্ঠ ! আপনি সবিশেষ বিচার-পূর্বক যথার্থরূপে শুভাশুভ চিন্তা করুন। আপনার ন্যায় মহাপ্রাজ্ঞ পুরুষগণ বুদ্ধি দ্বারা বিবেচনা করিয়া, শুভাশুভ বিশেষরূপে অবগত হয়েন । যাহাদের গুণ ও দোষ আপাততঃ প্রত্যক্ষ দৃষ্ট নহে, তাদৃশ অধ্রুব কৰ্ম্ম সকলের অনুষ্ঠান ব্যতিরেকে কখন ইষ্টফলপ্রাপ্তির সম্ভাবনা নাই।ই হে বীর । আপনিই পূর্বে আমাকে অনেকবার এই প্রকার উপদেশ দিয়াছেন। আপনাকে উপদেশ দিতে সাক্ষাৎ বৃহস্পতিও পারেন না । হে মহাপ্রাজ্ঞ । দেবগণও আপনার বুদ্ধির ইয়ত্তা করিতে পারেন না। অধুনা আপনার সেই জ্ঞান শোকে আচ্ছন্ন হইয়াছে, আমি তাহার উদ্বোধন করিতেছি মাত্র। হে ইক্ষাকুপ্রবর! আপনি স্বীয় দিব্য ও মানুষ পরাক্রম বিবেচনা করিয়া শক্রসংহারে প্রবৃত্ত হউন। হে পুরুষশ্রেষ্ঠ ! আপনার সমুদায় লোক সংহার করিবার প্রয়োজন কি ? আপনি সেই পাপ চারী শক্রকে অবগত হইয়া, সীতাকে উদ্ধার করুন । ১-২০ ২। কৰ্ম্মের অভীষ্ট ফুল অঙ্গুষ্ঠান বাতীত পাওয়া যায় না, পূর্বকৰ্ম্মা মুষ্ঠান ব্যতীত ইদানীং ফলও উৎপন্ন হইতে পারে না, সুতরাং কৰ্ম্মের ফল উৎপন্ন হইলে তজত জমুশোচনা করিয়া লাভ কি ? (t? পূৰ্ব্বকৃত সপ্তষষ্টিতম সর্গ লক্ষণ এইরূপে নিরতিশয় সারগর্ভ সুন্দর বাক্য প্রয়োগ করিলে, সারগ্রাহী মহাবাহু রাম তাহ পরিগ্রহ করিলেন । অনন্তর তিনি স্বীয় প্রবৃত্ত ক্রোধ নিবারণ করিয়া, বিচিত্র ধনু ধারণ করত লক্ষণকে বলিতে লাগিলেন, বৎস । আমরা এখন কোথায় যাইব, কি করিব, কি উপায়েই বা সীতাকে দেখিতে পাইল, এই সকল চিন্তা কর। লক্ষণ নিরতিশয় পরিতপ্ত রামকে কহিলেন, এই জনস্থানেই সীতার অন্বেষণ করা আপনার বিধেয় ; বহুসংখ্য রাক্ষসগণে সমাকীর্ণ ও বিবিধ লতাবৃক্ষে সমাবৃত এই জনস্থানে অনেক গিরিদুর্গ, কন্দর, খণ্ডপাষাণ, নানাজাতীয় মৃগগণে সমাকুল ভয়ঙ্কর গুহা, কিন্নর ও গন্ধৰ্ব্বগণের আবাস ও ভবনসকল প্রতিষ্ঠিত আছে। আপনি আমার সহিত সমাহিত হইয়া,ঐ সকল অন্বেষণ করুন। আপনার সদৃশ বুদ্ধিসম্পন্ন মহাত্মা নরবরের আপংকালে, বায়ুবেগে আচলরাজির স্যায় কখনও বিচলিত হয়েন না। রাম এই কথা শুনিয়া, ক্রুদ্ধ হইয়া, ধনুতে ক্ষুরধার ভয়ঙ্কর শরসন্ধানপুরঃসর লক্ষণের সহিত সেই সমগ্র বন বিচরণ করিতে লাগিলেন । অনন্তর তিনি পৰ্ব্বতকূটসদৃশ মহাভাগ বিহঙ্গমশ্রেষ্ঠ জটায়ুকে শোণিতসিক্ত শরীরে ভূতলে পতিত দেখিতে পাইলেন । সেই পর্বতশৃঙ্গ সদৃশ বিশালদেহ জটায়ুকে দর্শন করিয়া রাম লক্ষণকে বলিলেন । ১-১০ স্পষ্টই প্রতীয়মান হইতেছে যে, এই গুপ্ররূপী কাননচর নিশাচরই জানকীকে ভক্ষণ করিয়াছে, ইহাতে আর সন্দেহ নাই। এই রাক্ষস সেই বিশা","ক্ষীকে ভক্ষণ করিয়া যধামুখে বিশ্রাম করিতেছে ; অতএব আমি অবক্রগামী প্রদীপ্তাগ্র ভয়ঙ্কর শরসমূহে উহাকে বধ করিব। রাম এই বলিয়া > লক্ষ্মণ কনিষ্ঠ হইলেও প্তাহার বাকী अठाख श्नौडिशृर्न সারগর্ড বলিয়া সারগ্রাহী রাম নিয়ত পরোপদেষ্ট হইলেও যুক্তিযুক্ত বিবেচনায় গ্রহণ করিয়াছিলেন। শাস্ত্রে আছে—বালাদপি স্বভাষিতম্ গ্রাহাম্।”