পাতা:বাল্মীকি রামায়ণ - উপেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/৪৭০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8 o R ক্রোধাবিষ্ট হইয়া, সাগরান্তা মেদিনীকে চালিত করিয়া শরাসনে ক্ষুরাস্ত্র যোজনা পূর্বক তাহাকে দেখিতে ধাবিত হইলেন । পরে পক্ষিরাজ জটায়ু সফেন রুধির বমন করিতে করিতে নিরতিশয় কাতর বাক্যে সেই দশরথাত্মজ রামকে কহিলেন, আয়ুষ্মন! তুমি ওষধির স্যায় র্যাহাকে এই মহাবনে অন্বেষণ করিতেছ, সেই দেবী জানকী ও মদীয় প্রাণ, এই উভয়ই রাবণকর্তৃক অপহৃত হইয়াছে। অয়ি রঘুনন্দন ! মহাবল দশানন আপনার ও লক্ষণের অনুপস্থিতিতে দেবী জানকীকে হরণ করিয়াছে, ইহা আমি দেখিতে পাই । সেই সময়ে আমি সীতার পরিত্রাণার্থে সম্মুখে সমাগত হইয়া যুদ্ধে রাবণের রথ ও ছত্র বিনষ্ট করিলে, রাবণ ধরাতলে পতিত হইল । ঐ উহার ভগ্ন শর ও সাংগ্রামিক রথ পতিত রহিয়াছে ; এবং এই তাহার সারথি মদীয় পক্ষপুটের আঘাতে নিহত হইয়া ধরাতল আশ্রয় করিয়াছে। পরিশেষে আমি পরিশ্রান্ত হইলে, রক্ষোবর দশানন খডগাঘাতে আমার পক্ষদ্বয় ছেদন ও সীতাকে গ্রহণ করিয়া আকাশ-পথে গমন করিয়াছে। পূর্বে আমি রাক্ষসকর্তৃক আঘাতিত হইয়াছি, এক্ষণে আর আমায় বধ করা আপনার উচিত হয় না । ১১-২০ রাম জটায়ুর মুখে সীতা-বিষয়ক প্রিয়রাক্য শ্রবণে তৎক্ষণাৎ মহাধনু ত্যাগ করিয়া তাহাকে তালিঙ্গন করিলেন এবং শোকে অবশ ও ধরাতলে নিপতিত হইয়া, লক্ষণের সহিত রোদন করিতে লাগিলেন। তিনি সাতিশয় ধীর হইলেও দ্বিগুণীকৃত-সন্তাপে অভিভূত হইয়া উঠিলেন। অসহায় জটায়ু তৎকালে শ্বাসকৃচ্ছে পতিত হইয়া, অসহায় অবস্থায় বারংবার নিশ্বাস ত্যাগ করিতে লাগিলেন দেখিয়া, রাম শোকাওঁ হইয়া লক্ষণকে কহিলেন,-আমার রাজ্যভ্রংশ, বনবাস, সীতার নিরুদেশ এবং জটায়ুর মৃত্যু হইল ; আমার দুষ্কৰ্ম্মজনিত অলক্ষনী অগ্নিকেও দগ্ধ করিতে পারে। মদীয় সৌভাগ্যের কথা আর কি বলিব । বাল্মীকি-রামায়ণ আমি এই দুঃখসন্তাপ-শাস্তির জন্য অতলস্পর্শ অকুল মহাসাগরেও যদি অবগাহন করি, তাহা হইলে সেই সরিৎস্বামী সমুদ্রও নিশ্চয়ই আমার দুর্ভাগ্য-প্রভাবে একেবারেই শুষ্ক হইয়া উঠিবেন। চরাচর লোকমধ্যে আমা অপেক্ষা সমধিক মন্দভাগ্য আর কেহই नांझे ! তু, আমি এই মহৎ ব্যসন প্রাপ্ত হইলাম। এই মহাবল গৃধ রাজ আমার পিতার প্রিয়সখা । ইনিও আমার ভাগ্যদোষে তাহত হইয়া ধরাতলে শয়ন করিয়াছেন। রঘুনন্দন রাম এইরূপ বহু বাক্য প্রয়োগ করিয়া, লক্ষণের সহিত পিতৃস্নেহপ্রদর্শন করত জটায়ুকে স্পর্শ করিলেন । পরে তিনি সেই ছিন্নপক্ষ ও রক্তসিক্তদেহ গৃধ রাজ এটায়ুকে আলিঙ্গণ-পূর্বক আমার প্রাণসম মৈথিল, কোথায় গিয়াছেন, এই বলিয়া ধরাতলে পতিত হইলেন । ২১-২৯ வாவிடி অস্টযষ্টিতম সর্গ ভয়ঙ্কর-রাক্ষস-কর্তৃক ভূমিতলে পাতিত জটায়ুকে দর্শন করিয়া, রাম পরমমিত্র সৌমিত্রিকে কহিলেন, নিশ্চয়ই এই পক্ষী আমার জন্য যত্ন করিয়া আমারই নিমিত্ত রাক্ষস-হস্তে নিহত হইয়। প্রাণত্যাগ করিতেছেন। লক্ষণ ! ইহার স্বর হীন ও দৃষ্টি ক্ষীণ হইয়া আসিয়াছে এবং প্রাণও অতিমাত্র খিন্ন হইয়া কথঞ্চিৎ ইহার দেহে অবস্থিতি করিতেছে। হে জটায়ু! আপনার কুশল হউক, যদি পুনর্বার বাক্যনিঃসরণের ক্ষমতা থাকে, তাহা হইলে সীতাহরণ-বৃত্তান্ত এবং আপনিও বা কিরূপে নিহত হইলেন, বলুন । রাবণই বা কি নিমিত্ত আৰ্য্যা জানকীকে হরণ করিল ? আমিই বা তাহার কি অপরাধ করিয়াছিলাম যে, সে প্রিয়তমাকে হরণ করিল ? হে বিহগবর ! হরণ-সময়ে সীতার সেই পূর্ণশশিসদৃশ মনোহর মুখমণ্ডল কিরূপ হইয়াছিল ?