পাতা:বাল্মীকি রামায়ণ - উপেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/৪৭৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ول\ه 8 শরীরের গঠনভঙ্গী পৰ্য্যবেক্ষণ করিলে তাহকে যথার্থ কবন্ধ বলিয়া বোধ হয় । অনন্তর মহাবাহু কবন্ধ সুবিশাল ভুজ-যুগল প্রসারণ-পূর্বক রাম ও লক্ষণকে বল-সহকারে নিপীড়িত করিয়া একেবারে গ্রহণ করিল। দৃঢ় ধনু ও খড়গধারী তীব্রতেজ মহাবল মহাভুজ সেই উভয় ভ্রাতা কবন্ধ কর্তৃক আকৃষ্যমাণ হুইয়া অবশ হইলেন। রাম স্বভাবতঃ ধৈর্ণ্যশীল ও শৌৰ্য্যসম্পন্ন, সুতরাং ব্যথিত হইলেন না ; কিন্তু লক্ষণ বালক ও আধার বলিয়া একেবারেই ব্যথিত হইয়া উঠলেন এবং বিমগ্ন হইয়। রঘুনন্দন রামকে কহিলেন, হে বীর ! দেখুন, আমি বিবশ হুইয়া রাক্ষসের বশতপন্ন হইয়াছি । ২১-৩৮ অতএব আপনি একমাত্র আমাকে প্রদান করিয়াই মুক্ত হউন এবং তামায় ইহাকে বলিস্বরূপ প্রদান করিয়া যথাসুখে পলায়ন করুন। হে কাকুৎস্থ রাম ! আমার নিশ্চয় বোধ হইতেছে, আপনি বৈদেহীকে প্রাপ্ত হইবেন এবং পিতৃপিতামহপ্রাপ্ত রাজ্যও সত্বর লাভ করিবেন। এক্ষণে প্রার্থনা, আপনি রাজপদে প্রতিষ্ঠিত হইয়। সৰ্ব্বদাই আমাকে স্মরণ করিবেন। লক্ষণ এই প্রকার বাক্য প্রয়োগ করিলে, রাম তাহাকে কহিলেন,—বীর । বৃথা ভীত হইও না ; তোমার ন্যায় ব্যক্তি কখন বিষণ্ণ হয় না। উভয় ভ্ৰাতায় এই প্রকার কথোপকথন হইতেছে, এমন সময় ক্রুরস্বভাব মহাবাহু দানবশ্রেষ্ঠ কবন্ধ তাহাদিগকে কহিতে লাগিল, তোদের স্কন্ধ বৃষের স্যায় এবং হস্তে স্বৃহৎ খড়গ ও শরাসন ধারণ করিয়াছিস্ ! তোরা কে? তোরা দৈবামুসারেই এই ভয়ঙ্কর প্রদেশে আসিয়া আমার নয়নগোচর হইয়াছিস্ । তোদের এখানে কি কাৰ্য্য আছে এবং কি জন্যই ব৷ তোরা এখানে আসিয়াছিস্ ? বল । আমি ক্ষুধাৰ্ত্ত হইয় অবস্থিতি করিতেছি। তোরা ধনু, শর ও খড়গ ধারণ-পূর্বক তীক্ষশৃঙ্গ বৃষভের সদৃশ হইয়া এখানে আগমন করিয়াছিস্ ; তোদের জীবিত থাকা দুলভ হইবে। দুরাত্মা বাল্মীকি-রামায়ণ কবন্ধের এই কথা শুনিয়া রাম শুষ্কবদন হইয়া লক্ষণকে কহিলেন, হে সত্যবিক্রম ! প্রিয়া সীতাকে না পাইয়া যে বিষম বিপদ উপস্থিত হইয়াছে, তাহাতে নিশ্চয়ই প্রাণসংশয় সম্ভাবনা ; কন্টের পর কষ্ট উপনীত হইতেছে। হে নয়শ্রেষ্ঠ লক্ষণ ! কাল সমুদায় প্রাণী হইতেই সমধিক বীৰ্য্য-সম্পন্ন ; দেখ, আমরাই কালের প্রভাবে ব্যসনে মোহিত হইলাম । হে লক্ষণ ! প্রাণিগণকে দুঃখ প্রদান করিতে কালের কিছুই বেগ পাইতে হয় না। কাল কর্তৃক আক্রান্ত শৌর্য্যসম্পন্ন কৃতাস্ত্র পুরুষগণ ও বালুকনিৰ্ম্মিত সেতুর ন্যায় সমরাঙ্গনে অবসন্ন হইয়া থাকে। সত্য ও দৃঢ়বিক্ৰম-সম্পন্ন, প্রতাপশালী, মহাযশা দশরথনন্দন ধীমান রাম সৌমিত্রিকে দীনভাবাপন্ন লক্ষ্য করিয়া, এই প্রকার বলিতে বলিতে জ্ঞান-প্রভাবে স্বীয় চিত্ত স্থির করিলেন । ৩৯-৫১ সপ্ততিতম সর্গ রাম ও লক্ষণ উভয় ভ্রাতাকে বাহুপাশে বদ্ধ ও তথায় অবস্থিত দেখিয়া কবন্ধ তাহাদিগকে কহিল,— অরে ক্ষত্রিয়শ্রেষ্ঠদ্বয়! আমি ক্ষুধাৰ্ত্ত হইয়াছি ; বিধাতা তোমাদিগকে হতচৈতন্য করিয়া আমার আহারার্থ প্রেরণ করিয়াছেন। অতএব আমাকে দেখিয়া তোমরা কি জন্য আর অপেক্ষা করিতেছ ? সেই বাক্য শ্রবণ করিয়া লক্ষণ দুঃখিত ও বিক্রমপ্রকাশে কৃতনিশ্চয় ইয়া তৎকালোচিত বাক্যে রামকে বলিলেন,—এই রাক্ষসাধম আমাদের দুই জনকেই গ্রহণ করিবে ; অতএব আসুন, আমরা ইতিমধ্যেই অসিযুগল দ্বারা ইহার গুরুতর হস্তদ্বয় ছেদন করি । এই মহাকায় ভীষণ রাক্ষস একমাত্র বাহুর সাহায্যেই বিক্রম প্রকাশ করত লোকসকলকে সৰ্ব্বতোভাবে পরাজিত করে, আমাদিগকেও হনন করিতে উষ্ঠত হইয়াছে। কিন্তু রাজন। যজ্ঞীয় পশুগণের স্থায় নিশ্চেষ্ট হইয়া,