পাতা:বাল্মীকি রামায়ণ - উপেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/৪৭৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আরণ্যকাণ্ড হে নরোত্তম । আপনিও বানরদিগকে দেখাইবেন । সন্ধ্যাকালে ভ্ৰমণ করিতে করিতে জললোভে নদীতীরে সমাগত বৃষের স্যায় গভীর নিনাদকারী উল্লিখিত স্থূলকায় বানরদিগকে অবলোকন করিবেন ; এবং তত্ৰত্য পুষ্পিত বৃক্ষ-সমূহ ও সুশীতল জল দর্শন করিয়া শোক-বিহীন হইবেন । হে রঘুনন্দন ! তত্রস্থ পুষ্পভারাবনত তিলক, নক্তমালক এবং প্রফুল্ল পঙ্কজ ও উৎপল সকল ও আপনার শোক নিবারণ করিবে । তথায় এমন কেহ মনুল্য নাই যে, ঐ সমস্ত পুষ্পের মাল্য ধারণ করে। হে রঘুকুমার ! মঙ্গশিষ্য পধি সকল পরম সমাহিত হইয়া, তথায় বাস করিয়াছিলেন ; তজ্জন্য তত্ৰত্য কুসুমগ্রথিত মালা সমস্ত কখন মলিন বা শীর্ণ হয় না। ঐ সকল শিষ্ট ঋষি গুরুর নিমিত্ত বিবিধ বন্যভার আহরণ করত নিতান্ত ভারাক্রান্ত হইয়া তাপিত হইলে, র্তাহাদের শরীর হইতে যে ঘৰ্ম্ম-বিন্দু ভূতলে পতিত হইত, তাহারাষ্ট তথকালে তাহাদের তপঃপ্রভাবে মাল্যদামরূপে পরিণত হইয়াছে । হে রাঘব ! ঋষিগণের স্বেদবিন্দু হইতে সমুখি ত বলিয়া, সেই মাল্য সকল অবিনশ্বর হইয়াছে। ঋষিগণ যদিও ত; হইতে তান্তহিত হইয়াছেন, কিন্তু অদ্যাপি র্তাহীদের পরিচারিণী শ্রমণী-নাম্নী চিরজীবিনী শবরী তথায় দৃষ্ট হয়েন । রাম ! আপনি সাক্ষাৎ দেবতার স্যায় সকল লোকের নমস্কত। নিত্যধৰ্ম্মনিরতা শ্রমণী আপনাকে অবলোকন করিয়া স্বর্গে গমন করিবেন। হে ককুৎস্থনন্দন! আপনি পম্পার পশ্চিম তীর আশ্রয় করিলেই মহর্ষি মতঙ্গের গুহ আশ্রম অবলোকন করিবেন । ১-২৮ পৃথিবীতে ঐ আশ্রম অতুল্য। মতঙ্গ মুনির প্রভাব-বশতঃ নাগগণ ঐ আশ্রমকানন অতিক্রম করিতে সমর্থ হয় না ; এই জন্য উহা মতঙ্গবন বলিয়া বিখ্যাত হইয়াছে। রাম । ঐ সমস্ত আশ্রম বিবিধ বিহঙ্গমপূর্ণ, নন্দনাদি দেবকানন-সদৃশ ; অতএব আপনি তথায় সন্তুষ্টচিত্ত হইয়া বিহার করিবেন । পম্পার সম্মুখেই 8 > > কুসুমিত বৃক্ষসমূহে সুশোভিত ও অতিশয় দুরারোহ ঋষ্যমূক পৰ্বত। ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র সর্প সকল (কিম্বা বালগজ সকল ) ঐ পর্বত রক্ষা করিতেছে। উহা ব্ৰহ্মা-কর্তৃক নিৰ্ম্মিত। ঔদার্প্যাম্বিত ঐ পর্বতশৃঙ্গে যে ব্যক্তি শয়ন করিয়া, স্বপ্নে যে ধনলাভ করে, সে জাগরিত হইয় তাহ প্রাপ্ত হয়। অধৰ্ম্মানুষ্ঠাননিরত পাপকৰ্ম্ম পুরুষ উহাতে তারোহণ করিলে, রাক্ষসগণ নিদ্র। যাইবার সময় তাহাকে ধারণ পূর্বক সেইখানেই প্রহার করিয়া থাকে । রাম ! অনন্তর আপনি মতঙ্গাশ্রম-নিবাসী পম্পাবিহারী শিশু নাগগণের তুমুল শব্দ শ্রবণগোচর করিবেন । এতদভিন্ন তথায় ঈষদরক্ত বর্ণ মদধারাসমম্বিত মেঘবর্ণ বেগসম্পন্ন মগু-মাঙ্গ সকল দলবদ্ধ হইয়া পৃথক পৃথক ইতস্ততঃ বিচরণ করিতেছে, দেখিতে পাইবেন । ঐ সকল বনচর মহাগজ পম্পীর অত্যন্ত সুখম্পর্শ, অতীব গন্ধসমন্বিত, মনোহর, সুনিৰ্ম্মল জল পান করিয়া, প্রতিনিবৃত্ত হইয়া বনমধ্যে প্রবেশ করে ; আপনি তথায় পক্ষ, দ্বীপী এবং নীলমণি-সদৃশ কোমলকান্তি-বিশিষ্ট রুরু-মৃগদিগকে অবলোকন করিয়া, শোক পরিত্যাগ করিবেন । ঐ সকল মৃগ সাতিশয় নির্বিবরোধ এবং মনুষ্য দেখিলে কখনও পলায়ন করে না । হে রাম ! ঐ পৰ্ব্বতের গুহ অতি প্রকাণ্ড ও শোভমান এবং উহা শিলা দ্বারা আচ্ছাদিত ; উহাতে প্রবেশ করা অত্যন্ত কন্টজনক। ঐ গুহার সম্মুখদ্বারে সুশীতল সুবিস্তৃত হ্রদ বিবিধ বৃক্ষসমূহে পরিব্যাপ্ত এবং বহুবিধ ফলমূলে রমণীয়। ধৰ্ম্মাত্মা সুগ্ৰীব বানরদিগের সহিত সেই গুহায় বাস করেন । তিনি কখন কখন পৰ্ব্বভশখরেও বাস করিয়া থাকেন। স্বৰ্য্যসদৃশ প্রদীপ্ত, মাল্যধারী, বীৰ্য্যশালী কবন্ধ রাম ও লক্ষণ উভয়ের নিকটে এইরূপ নির্দেশ করিয়া আকাশে অবস্থান করত শোভিত হইল। এইরূপে মহাভাগ্যবান কবন্ধ স্বৰ্গারোহণে সমুদ্যত হইলে, রাম ও লক্ষণ তাহাকে কহিলেন, আমরা এক্ষণে সুগ্ৰীবের নিকট