পাতা:বাল্মীকি রামায়ণ - উপেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/৪৯৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কিষ্কিন্ধ্যাকাণ্ড পূর্বে বহুতর ধনাদি দান করিয়া বহুতর যশোভাজন হইয়াছেন। ইনি পূর্বে লোকগণের অধিনাথ হইয় এক্ষণে সুগ্ৰীবের আশ্রয় গ্রহণ করিতেছেন। সীতা র্যাহার পুত্রবধূ এবং যিনি লোকগণের শরণ্য ও ধৰ্ম্মবৎসল, সেই লোকগণের আশ্রয়রাপ দশরথের পুত্র স্বগ্রীবের শরণ গ্রহণ করিতেছেন। যে ধৰ্ম্মাত্মা পূর্বে লোকগণের শরণ্য ও আশ্রয়স্বরূপ ছিলেন, সেই এই রাঘব রামচন্দ্র সুগ্ৰীবের শরণ গ্রহণ করিতেছেন । যাহার প্রসন্নতায় সমস্ত লোক প্রসন্ন থাকি ত, সেই রামচন্দ্র বানররাজের প্রসন্নতা আকাঙক্ষা করিতেছেন। রাজা দশরথ যে সকল গুণযুক্ত পৃথিবীপতিগণের সম্মান করিয়াছেন, তাহার সর্ববলোকবিখ্যাত এই জ্যেষ্ঠপুত্র রামচন্দ্র বানরেন্দ্র সুগ্ৰীবের শরণ গ্রহণ করিতেছেন ; অতএব সমস্ত যুথপতিগণের সহিত এক্ষণে শোকাবিষ্ট, শোকপীড়িত রামচন্দ্রের প্রতি প্রসন্ন হইয়া, র্তাহার কার্য্য-সম্পাদন সুগ্ৰীবের একান্ত কৰ্ত্তব্য ৬-২৪ বাক্য-বিশারদ হনুমান লক্ষণের সেই অশ্রপরিপ্লত বাক্য শ্রবণ করিয়া তাহাকে প্রত্যুত্তরবাক্যে কছিলেন, জিতেন্দ্রিয়, জিতক্রোধ, বুদ্ধিসম্পন্ন ঈদৃশ মহাত্মা ব্যক্তির সহিত সাক্ষাৎ করা স্বগ্রীবের একান্ত কৰ্ত্তব্য ; যে হেতু, ঈদৃশ ব্যক্তিসকল ভাগ্যবশেই নিকটে উপস্থিত হইয়া থাকেন সন্দেহ নাই। সেই সুগ্ৰীবও রাজ্যভ্রষ্ট, বালীর সহিত বৈরভাব-বিশিষ্ট, তৎকর্তৃক উপদ্রুত এবং ভয়গ্রস্ত হইয়া বনমধ্যে বাস করিতেছেন। বালী তাহার ভাৰ্য্যা ও অপহরণ করিয়াছে। সেই স্বৰ্য্যপুত্র স্বগ্রীব আমাদের সহিত মিলিত হইয়া, সীতার অন্বেষণ-বিষয়ে অবশ্যই সাহায্য করিবেন। হনুমান স্বমধুর ও কোমল বাক্যে এই সমস্ত কহিয়া, রামচন্দ্রকে কছিলেন, বীর । এক্ষণে আমরা সুগ্ৰীবের নিকট গমন করিব। হনুমান এইরূপ বলিলে, ধৰ্ম্মাত্মা লক্ষণ হনুমানকে যথাযোগ্য পূজা করিয়া রামকে কহিলেন, রাঘব । এই বানর পবনাত্মজ যেরূপ হৃষ্ট @8 8 ←☾ হইয়া কহিতেছে ইহাতে বোধ হয়, সুগ্ৰীবও কাৰ্য্যার্থী হইয়াছে ; অতএব বোধ হয়, আপনিও এ বিষয়ে কৃতকাৰ্য্য হইতে পারিবেন। মরুৎপুত্র হনুমান যেরূপ হৃষ্ট হুইয়া প্রসন্নবদনে বাক্য বিন্যাস করিয়াছেন, তাহাতে বোধ হয় যে, এ ব্যক্তি কদাচই মিথ্যা বাক্য বলেন নাই। অনন্তর মহাপ্রাজ্ঞ মরুৎপুত্র হনুমান সেই রঘুবীরদ্বয়কে গ্রহণ-পূর্বক লইয়া চলিলেন। মারুতি ভিক্ষুকরুপ পরিত্যাগ-পূর্বক বানররূপ ধারণ করিয়া, পৃষ্ঠে আরোপণ করাইয়া, বীরদ্বয়কে লইয়া সুগ্ৰীবের নিকট গমন করিতে লাগিলেন। সেই বিপুলযশস্বা, কপিবার, বিপুলবিক্রম ও বিমলচিত্ত পবনপুত্ৰ কুতকুত্যের ন্যায় হট হুইয়া, রাম ও লক্ষণের সহিত সেই গিরিবরে গিয়া উপস্থিত হইলেন । ২৫-৩৫ পঞ্চম সর্গ হনুমান পৰ্য্যমূক হইতে মলয়-গিরিতে গমন করিয়া, সুগ্ৰীবকে রাম ও লক্ষণের আগমন-বিষয় নিবেদন করিয়া কহিলেন, ইনিই মহাপ্রাজ্ঞ সত্যবিক্রম ও বিপুলবৰ্য্য রামচন্দ্র; ইনি ভ্রাতা লক্ষণের সহিত এই স্থানে আগমন করিয়াছেন। এই রাম ইক্ষ কুদিগের বিশুদ্ধ বংশে দশরথের ঔরসে জন্মগ্রহণ করিয়াছেন । ইনি স্বধৰ্ম্মপ্রতিপালন নিমিত্ত আদিষ্ট হইয়া, তৎপ্রতিপালনে যত্নবান হইয়াছেন । সেই রাজশ্রেষ্ঠ দশরথ রাজসূয় ও অশ্বমেধাদি যজ্ঞ দ্বারা বহ্নির তৃপ্তিসাধন করিয়াছেন এবং তাহতে শত সহস্ৰ ধেমুও দক্ষিণ প্রদান করিয়াছেন । তিনি তপস্যা ও সত্যবাক্য দ্বারা পৃথিবী পালন করিয়াছেন, তাহার স্ত্রীর নিমিত্ত তৎপুত্র এই রামচন্দ্র বনে আগমন করিয়াছেন। অনন্তর এই মহাত্মা বনমধ্যে বাস করিতেছিলেন, কোন সময়ে রাবণ আসিয়া ইহার ভার্ষ্যা হরণ করিয়া লইয়া গিয়াছে। ইনি এক্ষণে তোমার শরণ গ্রহণ করিতেছেন। এই রাম-লক্ষণ পূজনীয়গণের অগ্রগণ্য,