পাতা:বাল্মীকি রামায়ণ - উপেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/৫২১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কিষ্কিন্ধ্যাকাণ্ড আপনি রক্ষণ করিবেন । অঙ্গদের প্রতি স্বগীবের মেহবুদ্ধি প্রবর্তিত করুন, আপনিই কাৰ্য্য ও অকার্য্য-বিধিতে অবস্থিত হইয়া রক্ষণ ও শাসন করুম নরেশ্বর ! আপনার ভরত ও লক্ষণের প্রতি যেরূপ মেহবুদ্ধি, সেইরূপ স্বগ্রীব ও অঙ্গদের প্রতিও প্রবৰ্ত্তিত করিবেন । আমি দোষ করিয়াছি বলিয়া যেন তারাকে দোষিণী করা না হয় ; সুগ্ৰীব যাহাতে সেই শোচনায় বমণীকে প্রতিপালন করে, আপনি তাহার ব্যবস্থা করিয়া দিবেন। আপনার বশে থাকিয়া, আপনার চিত্তের অনুবৰ্ত্তী ও আপনার অনুগ্রহ-ভাজন হইয়া বানর-রাজ্য শাসন করিতে এবং সমস্ত পৃথিবী পালন করিতে ও স্বৰ্গলাভ করিতে সমর্থ হইবে সন্দেহ নাই ; আমি আপনার হাতে মরিবার ইচ্ছায় তারা-কর্তৃক বারিত হইয়াও, ভ্ৰাত সুগ্ৰীবের সহিত যুদ্ধে মিলিত হইয়াছি। বানররাজ বাল রামকে এই বলিয়া বিরত হইল ৷ ৪১-৬৩ তখন রামচন্দ্র ধৰ্ম্মার্থ-সংযুক্ত সাধুসন্মত বাক্য দ্বারা জগতজ্ঞান বালীকে আশ্বাস প্রদান করিলেন । হে হরিসত্তম বালিন। আমরা গুপ্তবধরূপ অকাৰ্য্য করিয়াছি, এরূপ মনে করিও না ; তুমি ভ্রাতার ভাণ্য হরণ করিয়াছ বলিয়া নিজের জন্যও চিন্তা করিও না ; আমরা তোমা অপেক্ষা পরিশুদ্ধ বুদ্ধি দ্বারা ধৰ্ম্ম ও শাস্ত্রানুসারেই কাৰ্য্য করিয়া থাকি, ইহাও তুমি মনে মনে বিবেচনা কর । যে ব্যক্তি দণ্ডনীয় ব্যক্তিকে দণ্ডপাতন করে, দণ্ড্য ব্যক্তি যাহা-কর্তৃক দণ্ডিত হয়, তাহার কার্য্যসিদ্ধি ও কারণসিদ্ধি উভয়ই অবসাদ প্রাপ্ত হয় না ; অতএব তুমি দণ্ডগ্রহণ করিয়া,** পাপ হইতে মুক্তিলাভ করিলে এবং দণ্ড-নিদিষ্ট পথ দ্বারা ভূমি স্বকীয় ধৰ্ম্ম-সংযুক্ত প্রকৃতি প্রাপ্ত হইলে। হে বানরশ্রেষ্ঠ ! তুমি হৃদয়স্থিত শোক, মোহ ও ভয় পরিত্যাগ কর। তুমি পূর্বকত কৰ্ম্ম ১৮। কার্বা বধিতে রক্ষাকৰ্ত্ত, অকার্য কf.লে শাসনকর্তা । ১১ । স্বাধা দণ্ড গ্রহণ করিয়া তুন নিষ্পাপ হইলে এবং তাদৃশ দণ্ড বিধান করিয়াছি বলিয়। আমিও অকাৰ্য্য করি নাই । 8(t> কদাচই অতিক্রম করিতে সমর্থ হইবে না । অঙ্গদ তোমার নিকট যেরূপ ছিল, সুগীব ও আমার নিকটেও সেইরূপ থাকিবে সন্দেহ নাই । বালী সেই মহাত্মা রণজয়ী রামচন্দ্রের ধৰ্ম্মানুযুক্ত বিহিত মধুর বাক্য শ্রবণ করিয়া বলিল,—হে ইন্দ্ৰোপম ভীমবিক্রম রামচন্দ্র । আমি শরাঘাতে বিচেতন ও হতবৃদ্ধি হইয়া এবং না জানিয়া যাহা বলিয়াছি, আপনি প্রসন্ন হইয়া আমার সেই অপরাধ ক্ষমা করুন | ৬১-৬৮ கா উনবিংশ সগ শরপীড়িত শায়িত বানররাজ বালী হেতু-যুক্ত বাক্য দ্বারা প্রত্যুক্ত হইয়া আর প্রত্যুত্তর করিল না। সে প্রস্তরাঘাতে বিদীর্ণাঙ্গ এবং বৃক্ষসমূহ দ্বারা আহত ও রামবাণ দ্বারা আক্রান্ত হইয়া, দীর্ঘনিশ্বাস পরিত্যাগ-পূর্বক মোহ প্রাপ্ত হইল। বালী রণস্থলে রাম-নিক্ষিপ্ত শর দ্বারা নিহত হইয়াছে, এই বাৰ্ত্তা বালীর ভার্য্যা তারা অন্তঃপুরে থাকিয়া শ্রবণ করিলেন । পুলের সহিত তারা ভৰ্ত্তার নিদারুণ বধ-বার্তা শুনিয়া, উদ্বিগ্নচিত্তে গিরিকন্দর’ হইতে সহসা নিৰ্গত হইলেন । অঙ্গদের যে সকল মহাবল সহচর ছিল, তাহারা ধনুদ্ধারা রামকে দেখিয়া ভয়ে পলায়ন করিতে লাগিল। তদনন্তর তারা দেখিতে পাইলেন, যুথপতি নিহত হইলে যুথভ্রষ্ট মৃগগণের ন্যায় বানরগণ ভীত হইয়া পলায়ন করিতেছে। সুদুঃখিত! তারা, শরদ্বারা অনুস্বতের স্যায় দুঃখিত রাম কর্তৃক ত্ৰাসিত বানরগণের নিকটে গমন-পূর্বক কহিতে লাগিলেন, —হে বানরগণ ! তোমরা যে রাজসিংহের অগ্রবত্তী হইয়া যুদ্ধ করিতে, র্তাহাকে পরিত্যাগ করিয়া সন্ত্রান্তচিত্তে কি নিমিত্ত পলায়ন করিতেছ ? রাজ্যলোভে র্তাহার ক্র রতর ভ্রাতা স্থগ্রীব ১। গিরিকলার পদে কিঙ্কন্ধ্য। নামক গরিগুহা, এই কথা পূৰ্ব্বেও বলা হইয়াছে।