পাতা:বাল্মীকি রামায়ণ - উপেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/৫২৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কিষ্কিন্ধ্যাকাণ্ড পতিকে মৃত্যুপাশে আবদ্ধ দেখিয়া রোদন করিতে লাগিলেন। সুগ্ৰীব কুররীর স্যায় রোদনশীল। তারাকে এবং তৎপুত্র অঙ্গদকে অবলোকন করিয়া অত্যন্ত বিষাদ-সাগরে নিমগ্ন হইল । ১৮-২৯ বিংশ সগ চন্দ্রীননা তারা রামের শরাসন-নিক্ষিপ্ত প্রাণান্তকর শর দ্বালা নিহত বালকে দেখিয়া, তাহার নিকটে গমন করিয়া তাহাকে আলিঙ্গন করিলেন ; কুঞ্জরতুল্য পর্বতপ্রভ উন্মলিত তরুর ন্যায় বানর বালীকে দেখিয়া, শোকসস্তপ্ত-হৃদয়ে বিলাপ ও পরিতাপ করিতে লাগিলেন। হে দারুণবিক্রম বানরশ্রেষ্ঠ বীরবর! এখন তুমি অত্যন্ত তপরাধিনী তামাকে অভিভাষণ করিতেছ না কেন ? হে বানরশ্রেষ্ঠ ! গত্রোথনি করিয়া উত্তম শয্যায় শয়ন কর। নৃপতিবরগণ ভূমিতলে এরূপ শয়নে শয়ন করেন না । হে বহুধাধিপ ! এই বসুন্ধর তোমার অত্যন্ত প্রিয়তম ; যে হেতু আমাকে পরিত্যাগ-পূর্বক প্রাণ পরিত্যাগ করিয়াও তুমি গাত্র দ্বারা বসুন্ধরাকে সেবা করিতেছ। তুমি ধৰ্ম্মানুসারে আমার সহিত মিলিত হইয়া, মধুগন্ধি বনমধ্যে আমার সহিত যে বিহার করিতে, জানিলাম, অদ্য অবধি তুমি তাহার শেষ করিলে । আমি নিরাশা, নিরানন্দ ও শোকসাগরে নিমগ্ন হইলাম। আমার হৃদয় অতিশয় কঠিন ; যে হেতু তোমাকে নিহত ও ভূমিতলে নিপতিত দেখিয়া, শোকে সন্তপ্ত হইয়া সহস্রধা বিদীর্ণ হইল না। তুমি সুগ্ৰীবের ভাৰ্য্যা হরণ করিয়া, তাহাকে বিবাসিত করিয়াছ, হে বানরেন্দ্র । অন্ত তাহার ফল তুমি প্রাগু হইলে । আমি তোমার কুশলীকাঙিক্ষণী ও হিতৈষিণী হইয়া হিতকর বাক্য বলিয়াছিলাম ; ভূমি তাহাতে আমার নিন্দা করিয়াছিলে, হে আৰ্য্য ! এক্ষণে বোধ হইতেছে 8(? O যে, তুমি রূপযেীবনসম্পন্ন অনুকূল নায়িক তাপসরাগণের চিত্ত প্রমথন করিবে সন্দেহ নাই । হে বার ! আমি নিশ্চয় জানিলাম যে, জীবনান্তকর কাল উপস্থিত হইয়াছে ; যে হেতু সুগ্ৰীবের অজেয় হইয়াও তুমি কালকবলে নিপতিত হইলে । তুমি অন্যের সহিত যুদ্ধ করিলেও কাকুৎস্থকুলতিলক রামচন্দ্র অধৰ্ম্মের অনুসারী হইয়া তোমার নিধনসাধন-পূর্বক সন্তাপ করিতেছেন না, ইহা অযুক্ত । আমি পূর্বে কিছুমাত্রই দুঃখ প্রাপ্ত হই নাই ; এক্ষণে তামি অত্যন্ত দান, কৃপণা ও অনুকম্পার্হ হইয়া, শোকসন্তপ্ত-সলয়ে অনাথিনী হইয়া, বৈধব্য-যন্ত্রণা ভোগ করিতে থাকিব সন্দেহ নাই। সুকুমার, সুখে সম্বদ্ধিত, আমাকর্তৃক লালিত কুমার অঙ্গদ, উহার পিতৃব্য মৃগ্রীব ক্ৰোধপরিপূর্ণ হইলে কি অবস্থা প্রাপ্ত হইবে ? বাঢ়িবার তাশা নাই । বৎস পুত্ৰ ! তুমি এক্ষণে তোমার ধৰ্ম্মবংসল পিতাকে উত্তমরূপে দর্শন করিয়া লও ; যে হেতু এখন হইতে র্তাহার দর্শন তোমার একান্তই সুলভ হইল। হে বীরবর! তুমি এখন চিরপ্রবাসে গমন করিতেছ ; অতএব এই পুত্রকে আশ্বাসিত কর, আমার প্রতি আদেশ কর এবং এই পুত্রের মস্তক আত্রাণ কর । তোমাকে নিহত করিয়া রামচন্দ্র মহৎ কৰ্ম্ম করিয়াছেন ; তিনি ইহা দ্বারা সুগ্ৰীবের সহিত যে প্রতিজ্ঞ করিয়াছেন, তাহা হইতে নিস্কৃতি লাভ করিলেন । সুগ্ৰীব ! তোমার শত্ৰ—ভ্রাতা নিহত হইয়াছে, এক্ষণে তুমি সফলমনোরথ হইয়া রুমাকে লাভ কর এবং উদ্বিগ্নশূন্ত হইয়া রাজ্য শাসন কর। হে খনিরেশ্বর ! আমি তোমার প্রিয় ভাৰ্য্যা, সম্মুখে রোদন করিতেছি, তুমি কেন প্রত্যুত্তর প্রদান করিতেছ না ? এই দেখ, আরও বহুতর ভাৰ্য্যা আসিয়া বিলাপ করিতেছে । বানরীর এইরূপ বিলাপবাক্য শুনিয়া অন্যান্য বানরীগণ অঙ্গদকে গ্রহণ করিয়া, দীনা ও দুঃখিত হইয়া রোদন করিতে লাগিল। হে