পাতা:বাল্মীকি রামায়ণ - উপেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/৫২৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কিষ্কিন্ধ্যাকাণ্ড সাগরে নিমগ্ন হইলাম। আমি বিবেচনা করি, আমার হৃদয় অত্যন্ত কঠিন ও লৌহময় ; যে হেতু প্রিয়তম ভৰ্ত্তাকে নিহত দেখিয়া এখনও শতধা বিদীর্ণ হইল না। হায় ! আমার প্রিয়ভৰ্ত্তা স্বভাবতঃই আমার প্রিয়, প্রহরে পরাক্রমশালী ও শূর, তিনিও পঞ্চত্র প্রাপ্ত হইলেন । যে নারী পতিহীনা, সে পুল্লবী ও ধনধান্তবিশিষ্ট হইলেও বুধগণ তাহাকে বিধবা বলিয়া থাকেন। আপনি পূর্বে লাক্ষারাগভুল্য আস্তরণবিশিষ্ট দিব্য শয্যায় শয়ন করিতেন, এক্ষণে স্বীয় গাত্রনির্গত রুধিরব্যাপ্ত পৃথিবী-শয্যায় শয়ন করিয়া রহিয়াছেন । হে বানরেন্দ্ৰ ! আপনার গাত্র রেণু ও শোণিত দ্বাবা পরিব্যাপ্ত হইয়াছে, আমি বাহুযুগল দ্বারা আলিঙ্গন করিতে সমর্থ হইতেছি না। এই অতি দারুণ বৈরবিষয়ে সুগ্ৰীব কৃতকৃত্য হইল ; যে হেতু রামপ্রযুক্ত একটি শর দ্বারাই তাহার ভয় দূরীভূত হইল । আপনি পঞ্চত্র প্রাপ্ত হইলে, আপনার গাত্র স্পর্শ করিতে গিয়া হৃদয়ে লগ্ন শর দ্বারা বারিত হইয়া আপনাকে নিরীক্ষণ করিতেছি। ১-১৬ তারার সেই বিলাপবাক্য শুনিয়া নীলবীর বালীর বক্ষঃস্থল হইতে গিরিগহবরস্থিত প্রদীপ্ত ভুজঙ্গের স্যায় সেই বাণ উদ্ধত করিল। অস্তাচলের মস্তকস্থিত দিনকরের রশ্মির ন্যায় সেই উদ্ধত বাণের দীপ্তি প্রকাশিত হইতে লাগিল। ধরাধর হইতে তাম্র ও গৈরিক-সংযুক্ত নিপতিত ধারার স্যায় বালীর ক্ষতস্থান হইতে শোণিতধারা নির্গত হইয়া চারি দিকে পতিত হইতে লাগিল। তার অস্ত্র দ্বারা আহত, শূরবর, রণরেণু দ্বারা পরিব্যাপ্ত বালীকে নয়নজাত অশ্রবারিসেচন দ্বারা মাৰ্জ্জন করিতে লাগিলেন । নিহত পতির সর্ববঙ্গে রুধির দ্বারা পরিব্যাপ্ত দেখিয়া, তারা পিঙ্গলনেত্র পুত্র অঙ্গদকে বলিলেন,—পুল ! পূর্বতন পাপনরত তোমার পিতার শেষ অবস্থা অবলোকন কর, এক্ষণে প্রাণবিনাশের পর ইহার বৈরভাবের অবসান হইল। পুত্র। তরুণ মুর্ঘ্যের স্থায় কাস্তিবিশিষ্ট, @b" 8(tፃ যমভবনে গত, নরপতি, মানদ পিতার বন্দনা কর। “এই আমি অঙ্গদ চরণ বন্দনা করি,” এই বলিয়া অঙ্গদ গাত্রোথান করিয়া, স্কুল ও সুবৃত্ত ভুজদয় দ্বারা পিতার চরণ গ্রহণ করিল। তখন তারা বলিলেন,—বানরবর ! এই অঙ্গদ অভিবাদন করিতেছে, তুমি পূর্বের স্যায় ইহাকে ‘পুত্র । দীর্দায়ু হও’ এই বলিয়া আশীর্ববাদ করিতেছ না কেন ? তুমি গতচেতন হুইয়াছ, তামি পুত্রের সহিত সিংহ-কর্তৃক নিপাতিত বুষের সলৎসা গাভীর দ্যায় তোমার নিকটেই অবস্থিতি করিতেছি । তুমি সংগ্রামযজ্ঞ নিম্পন্ন করিয়াছ, এক্ষণে পত্নী ব্যতিরেকে রামের তাস্বরূপ বারি দ্বারা তোমার যজ্ঞান্ত-মান কিরূপে সম্পন্ন হইবে ? দেবরাজ সংগ্রামে সম্বষ্ট হইয়া তোমাকে যে কাঞ্চনী মালা প্রদান করিয়াছিলেন, সেই মালা আমি এখানে দর্শন করিতেছি না । হে মানদ ! আবর্তমান সুৰ্য্যের প্রভা যেমন অস্তাচলকে পরিত্যাগ করে না, তুমি গত প্রাণ হইলেও রাজশ্ৰী তোমাকে পরিত্যাগ করিতেছেন না । হায় ! আমি তোমাকে যে তুিতকর বাকা বলিয়াছিলাম, তাহা তুমি গ্রহণ কর নাই, তার আমি তোমাকে নিবারিত করিয়া রাথিতেও সমর্থ হই নাই, এক্ষণে যুদ্ধস্থলে নিহত তোমার সহিত সপুত্র আমিও বিনষ্ট হইলাম ; হায় । এক্ষণে লক্ষনীদেবী আমাকে পরিত্যাগ করিলেন । ১৭-৩০ চতুৰ্বিবংশ সর্গ অত্যন্ত বেগশালী দুস্তর অতুলনীয় শোক-মহার্ণব দ্বারা পরিপ্লতা তারাকে বিলাপ করিতে দেখিয়, বালীর অনুজ ভ্রাতা বলবান সুগ্ৰীব ভ্রাতার বধহেতু অত্যন্ত সন্তাপিত হইল। তারাকে বাষ্পপূর্ণনয়ন দর্শন করিয়া, সেই মনস্বী অত্যন্ত দুঃখিত ও