পাতা:বাল্মীকি রামায়ণ - উপেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/৫৫২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কিষ্কিন্ধ্যাকাণ্ড রাবণের সহস্র মধ্য ও ষষ্টি সহস্ৰাধিক ত্রিলক্ষ এবং ছত্রিশ সহস্র ও ছত্রিশ শত সৈন্য আছে । সেই সমস্ত দুৰ্দ্ধৰ্ষ কামরূপী রাক্ষস-সৈন্যকে নিহত না করিয়া সীতাহরণকারী রাবণকে বধ করিতে পারা যাইবে না। হে লক্ষণ ! সুগ্ৰীবকে সহায়রূপে প্রাপ্ত না হইলে, রাম ক্ররকর্ম রাবণকে নিহত করিতে সমর্থ হইবেন না। সেই অভিজ্ঞ কপিরাজ বালী আমাকে এই সকল কথা বলিয়াছিলেন ; আমি তাহার নিকট হইতে শুনিয়াই বলিতেছি, রাবণের ঐ প্রকার বলপ্রাপ্তির কথা আমি জানি না । আপনার সাহায্যের নিমিত্ত প্রধান প্রধান বানরগণ প্রেরিত হইয়াছে, তাহারা বহুতর বীর্য্যশালী বানরগণকে দিগ দিগন্ত হইতে আনয়ন করিবে। এই কপীশ্বর সেই সকল মহাবল দিক্রান্ত কপিগণের অপেক্ষা করিতেছেন, তাহারা না আসিলে, রামের কার্য্যসিদ্ধির নিমিত্ত নিৰ্গত হইবেন ন। স্বগ্রীব পূর্নেল যেরূপ স্থব্যবস্থা করিয়াছেন, তাহাতে অদ্যই সেই সমস্ত মহাবল বানর-সৈন্তাগণ আগমন করিবে । হে অরিন্দম ! আপনি কোপ পরিত্যাগ করুন, অতি সত্বর অদ্যই কোটি সহস্র ভল্লুক ও শতকাটি গোলাঙ্গুল এবং শতকোটি কপিসৈন্য আগমন করিবে । লক্ষণ ! আপনার এই ক্ৰোধ-প্রদীপ্ত অনিন ও রক্তবর্ণ নয়নদ্বয় নিরীক্ষণ করিয়া বানররাজের বনিতা সকল শান্তিলাভ করিতে পারিতেছেন না, সকলেই শঙ্কিত হইয়াছেন । ১-২৩ است. بع .بM--- ৩ । যে হেতুক অসহায় রাম তাহাদিগকে মারিতে পারিবেন না এবং রাবণও ক্রক তীব্রপরাক্রাভ, স্বতরাং স্বগ্রীবের প্রয়োজন আছে এবং সেন সংঘটনেরও প্রয়োজন আছে, সকল রাক্ষসই মন্ত্রবাবধা নহে, কতকগুলি বানরৰধা। এই রোকের ব্যাখ্যায় তীর্থ বলেন, সুগ্ৰীৰমাত্র সহায়ে সেই রাক্ষসগণকে রাম বধ করিতে পারিবেন না, এই কথা বালী জামাকে বলিয়াছেন। এইরূপ অন্ধয় । 8', 'O ষট্ত্রিংশ সর্গ তারা বিনীতভাবে এইরূপ ধৰ্ম্মসংযুক্ত বাক্য বলিলে, লক্ষণ মৃদুভাব ধারণ-পূর্বক তাহার বাক্য গ্রহণ করিলেন। লক্ষণ তারার বাক্য গ্রহণ করিলে সুগ্ৰীব তখন আর্দ্রবস্ত্রের স্যায় সুমহং ত্ৰাস পরিত্যাগ করিল। অনন্তর বানররাজ সুগ্ৰীব কণ্ঠস্থিত বহুগুণ বিচিত্র মাল্য ছিন্ন করিয়া মদগৃন্য হইল । তৎপরে বানরসত্তম সুগ্ৰীব মহাবল লক্ষণকে হৰ্ষিত করিয়া, ভাবে বাক্য বলিতে লাগিল । সুমিত্রানন্দন ! আমি স্ত্রী, কীৰ্ত্তি ও স্থিরতর রাজ্য হারাইয়াছিলাম, এক্ষণে রামের প্রসাদে তৎসমস্ত লাভ করিয়াছি । হে নৃপনন্দন! কোন ব্যক্তি সেই সুকৰ্ম্ম দ্বারা বিখ্যাত দেবস্বরূপ রামের উপকারের কিঞ্চিদংশেরও প্রতিকণর করিতে সমর্থ হইবে ? ধৰ্ম্মাত্মা রামচন্দ্র আমার সহায়তামাত্র লাভ করিয়া, স্বকীয় তেজোদ্বারাই রাবণকে বধ করিবেন এবং সীতাকে প্রাপ্ত হইবেন । যিনি একটিমাত্র বাণ দ্বারাই সপ্ত মহা তরু, গিরি ও বহুধা বিদারণ করিয়াছেন, তাহার আবার অন্য সহায়ে কি প্রয়োজন আছে ? হে লক্ষণ ! সাহার ধনুবিস্ফারণের শব্দ দ্বারা সশৈল ভূমি কম্পিত হয়, র্তাহার আবার সহায়ে প্রয়োজন কি ? হে নরশ্রেষ্ঠ ! নরবর রামচন্দ্র বৈরী রাবণের বধের নিমিত্ত গমন করিবেন, আমি তাহার অনুগমন করিব । আমি র্তাহার দাস বিশ্বাস ও প্রণয়-হেতু যদি কিছু অপরাধ করিয থাকি, তবে এই অজ্ঞাবৰ্ত্তীর অপরাধ ক্ষম করা কৰ্ত্তব্য ; যেহেতু যে দাস অপরাধ করে না, তাদৃশ দাসই অসম্ভব হয়। মহাত্মা সুগ্ৰীব এই প্রকার বাক্য বলিলে তাহা শুনিয়া লক্ষণ প্রীত হইলেম এবং প্রণয়-সহকারে তাহাকে কহিলেন,—হে বানরেশ্বর ! আমার ভ্রাতা তোমাকে বিনীত মিত্র ও সহায়রূপে প্রাপ্ত হইয়া সৰ্ব্বথা সনাথ হইয়াছেন। স্বগ্রীব ! তোমার যেরূপ প্রভাব এবং যেরূপ সরলভাব, তাহাতে