পাতা:বাল্মীকি রামায়ণ - উপেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/৫৭০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কিষ্কিন্ধ্যাকাণ্ড বানরগণ স্বগ্রীব ক্রোধশীল রাজা, তিনি তীক্ষ দগু প্রদান করিয়া থাকেন ; অতএব তাহাকে এবং মহাত্মা রামকে ভয় করা কৰ্ত্তব্য । তোমাদের হিতের নিমিত্তই অামি এইরূপ বলিলাম ; যদি অভিরুচি হয়, তবে তাহা সম্পাদন কর, আর যাহা হিতকর থাকে, তাহাও বল । অঙ্গদের বাক্য শুনিয়া, গন্ধমাদন নামক বানর পিপাসা ও আশ্রয়াদির অভাব হেতু থিন্ন হইয়া বলিতে লাগিল ;–অঙ্গদ যাহা কহিয়াছেন, তাহা হিতকর ও অনুকূল ; অতএব ইহার বাক্যানুসারে কাৰ্য্য কর। আমরা শৈল, কন্দর, শিলা, কানন, শূন্তস্থান, গিরিদুর্গ ও গিরি-প্রস্রবণাদি, মুগীব যাহা যাহা বলিয়াছেন, তৎসমস্তই পুনর্নবার অন্বেষণ করিব। তদনন্তর মহাবল বানরগণ পূনর্বিার উঠিয়া, বিন্ধ্যাচলের কাননপূর্ণ দক্ষিণদিকে বিচরণ করিতে লাগিল। তাহারা সীতা-দর্শনের বাসনায় শরৎকালের মেঘ তুল্য, শৃঙ্গবান, দরীযুক্ত রজত-পর্বতে আরোহণ করিয়া, রম্য লোপ্রবন ও সপ্তপর্ণ-বনসমূহ অন্বেষণ করিতে প্রবৃত্ত হইল । বিপুলবিক্রম বানরগণ শ্রান্ত হইয়া তাহার আগে অধিরূঢ় হইয়া রামের প্রিয় মহিষীকে দেখিতে পাইল না। সেই কপিগণ সেই শৈলের বহুতর কন্দর দর্শন করিয়া, তৎপরে ভূমিতে নামিয়া শ্রান্ত ও মুগ্ধচিত্ত হইয়া, বৃক্ষমূল আশ্রয় করিয়া অবস্থিত রহিল। কিঞ্চিৎ পরিশ্রম বিগত হইলে, কিছুকাল বিশ্রাম করিয়া পুনর্বার উৎসাহ-বিশিষ্ট হইয়া সমস্ত দক্ষিণদিক অন্বেষণে প্রবৃত্ত হইল। হনুমানাদি কপিগণ প্রথমে বিন্ধ্যাচল অন্বেষণ করিয়া চারিদিকে বিচরণ করিতে লাগিল। ১-২২ পঞ্চাশ সগ কপিবর হনুমান তার ও অঙ্গদের সহিত মিলিত হইয়া বিন্ধাচলের গুহা এবং গহনবন সমস্ত অন্বেষণ করিতে লাগিলেন। তাহারা সিংহ-শাৰ্দ্দ লযুক্ত গুহ (te? এবং বিষম স্থান, মহাপ্রস্রবণ অন্বেষণ করিতে লাগিল । শৈলের নৈঋতকোণস্থিত শৃঙ্গে অবস্থিতিকালে তাহাদিগের সুগ্ৰীব-নির্দিষ্ট কাল অতিক্রান্ত হইয়াছিল। সেই দেশ কষ্টে অন্বেষণীয়, গুহা ও গহনযুক্ত এবং অতিশয় বিস্তৃত ; বায়ুপুত্র সেই পৰ্ব্বত সমস্তই অন্বেষণ করিলেন। পরস্পর পরস্পরের নিকটে থাকিয়া একে একে গজ, গবাক্ষ, গবয়, শরভ, গন্ধমাদন, মৈন্দ, দ্বিবিধ, হনুমান জাম্ববান, যুবরাজ অঙ্গদ সেই বনে থাকিয়া দক্ষিণগিরিসমূহে পরিবৃত দেশ সকল অন্বেষণ করিতে করিতে দানব-কর্তৃক রক্ষিত, গম, পক্ষ-বিল নামক এক বিস্তৃত বিল দর্শন করিল। তাহার শ্রান্ত ও ক্ষুধাতৃষ্ণায় কাতর ও সলিলাগী হইয়া সেই লতাবৃক্ষাদি-পরিব্যাপ্ত মহাবিল হাবলোকন করিল। সেই বিলে ক্রৌঞ্চ,হংস,সারস, জলদ পদ্মরেণু দ্বার রক্তাঙ্গ চক্রবাক প্রভৃতি জলপক্ষিগণ বিচরণ করিতেছে। সেই সুগন্ধি, দুরতিক্রমণীয় বিল প্রাপ্ত হইয়া বানরপতিগণের মানস বিস্ময়ে ব্যগ্র হইয়া উঠিল । তখন সেই তেজস্ব মহাবল বানরগণের মনে যুগপৎ শঙ্কা ও হর্মের উদয় হইল । সেই বিল নানাবিধ জীবগণে পরিপূর্ণ, দৈত্যেন্দ্রগণের আলয়তুল্য ঘোরতর, তুর্দশন ও সর্বস্থান দুরবগাহ। তদনন্তর কান্তার ও বনতত্ত্বজ্ঞ, পর্বতশৃঙ্গতুল্য মারুতপুত্র হনুমান ঘোরদর্শন বানরগণকে বলিলেন, আমরা সকলে দক্ষিণদিকে গিরিসমূহে পরিবৃত দেশ সকল অনুসন্ধান করিয়া পরিশ্রান্ত হইলাম ; কিন্তু জানকীর দর্শন পাইলাম না। এই বিল হইতে হংস, ক্ৰৌঞ্চ, সারস, জলাদ্র চক্রবাকসকল সকল স্থান হইতেই নির্গত হইতেছে। এই স্থানে কূপই হউক বা হ্রদই হউক, নিশ্চয়ই ইহার অভ্যন্তরে জল আছে ; আরও দেখ, এই বিলদ্বারে স্নিগ্ধ পাদপগণ জন্মিয়া রহিয়াছে। এই কথা শুনিয়া সকলে সেই তিমিরাবৃত, রোমহর্ষণ, চন্দ্রস্থৰ্য্যপরিশূন্ত সেই বিলে প্রবেশ করিল । ও'হারা তাহাতে সিংহ, ব্যাঘ, মৃগ,