পাতা:বাল্মীকি রামায়ণ - উপেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/৫৮৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কিষ্কিন্ধ্যাকাণ্ড সম্প্রতি যাহা অতিক্রম করিতে পারি, তাহা শ্রবণ কর । আমি এক্ষণে নববই যোজন পৰ্য্যন্ত অতিক্রম করিতে সমর্থ। জাম্ববান বানরদিগকে বলিল, আমার এই পৰ্য্যন্ত গতিশক্তিই চিরকাল ছিল না। যৌবনকালে আমার এতাদৃশ পরাক্রম ছিল যে, যখন সনাতন ত্রিবিক্রম বামনরূপী বিষ্ণু বলিযজ্ঞে ত্রিপদ দ্বারা ত্রিলোক আক্রমণ করেন, তখন আমি তাহাকে প্রদক্ষিণ করিয়াছিলাম। পূর্বে সেইরূপ পরাক্রমশালী হুইয়ু এক্ষণে অামি বুদ্ধ হইয়াছি ; আর এক্ষণে সেরূপ লক্ষ প্রদানে সমর্থ নহি ; যৌবনকালে আমার বল অপরিমিত ছিল। আমি এক্ষণে নববই যোজন লঙ্ঘণ করিতে সমর্থ; কিন্তু তাহ দ্বারা এই কার্ল্য সিদ্ধ হইতেছে না । ১-১৭ Ꮄ তদনন্তর মহাকপি জাম্ববানের সন্মাননা-পূর্ববক মহাপ্রাজ্ঞ অঙ্গদ মহাৰ্থযুক্ত বাক্য বলিতে লাগিল,— আমি শতযোজন লঙ্ঘন করিতে পারি, কিন্তু ফিরিয়া আসিতে সমর্থ হইব কি না, তদ্বিয়ে সংশয় জন্মিতেছে। বাক্য-বিশারদ জাম্ববান সেই কপিশ্রেষ্ঠ অঙ্গদকে বলিল,-—কপিবর ! তোমার লঙ্ঘনশক্তি আমি অবগত আছি, তুমি শত সহস্ৰ যোজন লঙ্ঘন করিয়া ফিরিয়া আসিতে সমর্থ, কিন্তু স্বামী কখন প্রেরণ-যোগ্য হইতে পারে না। তুমিই গামাদিগকে প্রেরণ করিবে, তুমি আমাদের কলত্রস্থানীয়, সুতরাং কলত্রবৎ প্রতিপাল্য, অর্থাৎ তোমার প্রাণ ও বল রক্ষা করা আমাদিগের অবশ্য কৰ্ত্তব্য ; তুমি স্বামিভাবে অবস্থিত হইয়া, সৈন্যদিগকে আজ্ঞা করিবে, ইহাই লৌকিক বিধি জানিবে। হে অরিন্দম! তুমি সেই কাৰ্য্যের মূল ; অতএব ভুমি কলত্রের স্থায় সকলের রক্ষণীয়। কাৰ্য্যের মূল রক্ষণ করা কৰ্ত্তব্য, এই কাৰ্য্যবিদগণের নীতি। যদি প্রধানভূত মূল বিদ্যমান থাকে, তবেই অপ্রধান ফলোদয়ৰূপ গুণ সিদ্ধ হইতে পারে। হে পরন্তপ | অতএব সত্যবিক্রম ও বুদ্ধিসম্পন্ন তুমিই এই কাৰ্য্যর সাধক-হেতু, তাহাতে ৫১৭ সন্দেহ নাই। হে কপিসত্তম । তুমি আমাদিগের গুরুপুত্র ও গুরু ; তোমাকে আশ্রয় করিয়া আমরা কাৰ্য্য-সাধনে সমর্থ হইতে পারি। মহাপ্রাজ্ঞ জাম্ববান এইরূপ বলিলে মহাকপি বালীপুত্র অঙ্গদ তাহাকে প্রত্যুত্তর করিল,—যদি আমি না যাই এবং অন্য কোন কপিবর ও না যায়, তবে পুনর্বার প্রয়োপবেশন পূর্বক প্রাণপরিত্যাগ করাই আগাদিগের পক্ষে শ্রেয়স্কর ৷ সেই ধীমান কপিপতির আদেশ প্রতিপালন না করিয়া কিষ্কিন্ধ্যায় গমন করিলেও প্রাণরক্ষার কোনও উপায় দেখিতে পাইতেছি না। সেই সুগ্ৰীব নিগ্রহ ও অনুগ্রহের ঈশ্বর, তাহার আদেশ লঙ্ঘন করিয়া কিস্কিন্ধ্যায় গমন করিলে প্রাণবিনাশ হুইবে সন্দেহ নাই । অতএব যাহাতে র্তাহার কাৰ্য্যের অন্যথা না হয়, তত্ত্বদর্শী আপনি তাহারই চিন্তা করুন । তখন কপিবীর জাম্ববান অঙ্গর-কর্তৃক এইরূপে উক্ত হইয় তাহাকে প্রত্যুত্তর করিলেন,–হে বীরেন্দ্র ! সেই কাৰ্য্যানুষ্ঠানের কিছুই হীনতা হইবে না ; যে ব্যক্তি কার্য্য-সাধন করিবে, এই তামি তাহাকে প্রেরণ করিতেছি । তদনন্তর জাম্ববান বানরগণের শ্রেষ্ঠ, একান্ত স্থান আশ্রয় করিয়া উপবিষ্ট হনুমানকে প্রেরণ করিল। ১৮৩৫ ষট ষষ্টিতম সর্গ জাম্ববাণ অনেক শত সহস্র বানরবাহিনীকে বিষন্ন দেখিয়া হনুমানকে বলিতে আরম্ভ করিল,--হে সমস্ত বানরকুলের শ্রেষ্ঠতম হনুমন! হে সৰ্ব্বশাস্ত্রবিশারদ । তুমি একান্তে বসিয়া রহিয়াছ এবং কিছুই বলতেছ না কেন ? হনুমন! তুমি হরিরাজ স্বগ্রীবের সমান তেজ এবং বল দ্বারা রাম ও লক্ষণের সমান। ভগবান কগুপের পুত্র মহাবল বিনতানন্দন গরুড় পক্ষিগণের মধ্যে সর্বোত্তম ; হে মহাবল ! আমি বহুবার