পাতা:বাল্মীকি রামায়ণ - উপেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/৭১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বালকাও 이 বলিলেন, হে বৎস! আমার মুখ হইতে যে বাক্য নিঃস্থত হইল, উহা সমানাক্ষর চরণচতুষ্টয়ে \ সমৃদগত হইয়াছে, তাহা শ্লোকরপে খ্যাতি লাভ করিবে, এ বিষয়ে কোনও সন্দেহ নাই। হে ' নিবন্ধ। এই বাক্য শোকসহকারে যখন কণ্ঠ হইতে সমুচ্চারিত হইয়াছে, তখন ইহা শ্লোক নামে প্রথিত হউক। শিন্য গুরুবাক্যের অনুমোদন করিলে, তিনি র্তাহার প্রতি সস্তুষ্ট হইলেন। তদনন্তর মহামুনি বাল্মীকি যথাবিধি অভিষিক্ত হইয়া শ্লোকোৎপত্তির বিষয় চিন্তা করিতে করিতে আপনার তাশ্রমে প্রত্যাগমন করিলেন । শাস্ত্রাধিকারী বিনীত শিষ্য ভরদ্বাজও জলপূর্ণ কলস লইয়া তৎপশ্চাৎ আশ্রমে উপনীত হইলেন । ধৰ্ম্মবিং বালীকি শিস্যের সহিত আশ্রমে উপস্থিত হইয়া উপবেশনান্তে নানা প্রকার কথোপকথনের পর ধ্যানে মনঃসংযোগ করিলেন । ১৬-২২ এমন সময়ে স্মৃষ্টিকর্তা চতুৰ্ম্ম থ নহ্মা, সেই মনিশ্রেষ্ঠকে দেখিবর জন্য সেখানে সমাগত হইলেন। তানন্তর বাল্মীকি র্তাহীকে দর্শনমত্রে অতিশয় বিস্থিাত নিস্তব্ধ হইয়া সহসা গাত্রোঙ্গান পুর্ববক কৃতাঞ্জলিপুটে সবিনয়ে দণ্ডায়মান হইলেন। তৎপরে পাদ্য, অর্গ্য, আসন ও স্তবস্তুতি দ্বারা ত{হার যথাবিধি অৰ্চনা করিয়া তদীয় চরণে প্রণাম করিলেন । ভগবান পিতামহ দিব্যাসনে উপবেশন করিয়া মহর্ষির প্রতি কুশল প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করিয়া তাহাকে আসনে উপবেশন করিতে অনুমতি করিলেন। রহ্মার আদেশে তিনি আসনে উপবেশন করিয়া পনরায় ক্ৰৌঞ্চ-বধ-ব্যাপার স্মরণ পূর্বক মনে মনে চিন্তা করতে লাগিrলন, হায় । বৈরতাচরণপরায়ণ সেই বাধ কি পাপকাৰ্য্যই না করিয়াছে। , সে অকারণে তাদৃশ স্বকণ্ঠ ক্ৰৌঞ্চকে বিনষ্ট করিয়াছে। তিনি পুনরায় ক্রেীর জন্য শোকপরবশ হইয়া ব্ৰহ্মার নিকটেই সেই শ্লোকটি উচ্চাtণ করিয়া ফেলিলেন। ২৩-২৯ তখন সহা বদনে তাহাকে কহিলেন, হে মহামুনে তোমার কণ্ঠ হইতে যে বাক্য ব্রগন। আমার ইচ্ছাতেই তোমার মুখে এইরূপ বাক্যের আবির্ভাব হইয়াছে। হে ঋষিশ্রেষ্ঠ ! তুমি ধৰ্ম্মাত্মা গুণবান বুদ্ধিমান ভগবান ক্রীরামচন্দ্রের সমস্ত চরিত্র বর্ণন কর । নারদের মুখে রামসম্বন্ধে ষে সকল বৃত্তান্ত তুমি শ্রবণ করিয়াছ, তদনুসারে ধৰ্ম্মপরায়ণ উদারচরিত্র রাম, লক্ষণ, সীতা ও রাক্ষসদিগের সর্বজনবিদিত ও অবিদিত সমস্ত বৃত্তান্ত তুমি প্রকাশ কর। যে সকল বিষয় লোকে অবিদিত, তুমি তাহ বিদিত হইতে পারিবে, অধিক কি, তুমি যে কাব, রচনা করিবে, উহাতে তোমার কোন বাক্য মিথ হইবে না। তুমি রমণীয় পবিত্র রামায়ণ শ্লোকাকারে প্রকাশিত কর ; জানিও, জীবলোকে যত দিন গিরিনদী বর্তমান থাকিবে, তাবৎকাল পর্যন্ত তোমার প্রণীত রামকথা ধরাধামে প্রচারিত থাকিবে ; যত কাল রামকথা জীবলোকে প্রচারিত থাকিবে, তত কাল তুমি অমরলোকে বাস করিবে। ৩০-৩৭ এই কথা বলিয়াই ভগবান রহ্মা অন্তহিত হক্টলেন, তদর্শনে সশিষ্য বাল্মীকি অতিশয় বিস্ময়ান্বিত হইলেন। তঁহার সকল শিষ্যগণ বারংবার এই শ্লোকটি গান করিতে লাগিলেন ; এবং ঐ শিষ্যগণ অতিশয় প্রীত হইয়া বলিয়াছিল--সমাক্ষরপাদচতুষ্টয়যুক্ত যে পদাবলী বাল্মীকি শোকপরায়ণ হইয়া গান করিয়াছেন, তাহা শ্লোক নামে প্রথিত হইয়াছে। এক্ষণে সমগ্র রামায়ণ এইরূপ শ্লোকে রচনা করিবার ইচ্ছা সেই মহাত্মা মহৰ্ষির হইয়াছে। উদারদুঃি অসীম কীৰ্ত্তিমান বাল্মীকি, সুন্দর ছন্দ, উৎকৃষ্ট অর্থ ও সুশোভনপদসমন্বিতসমাক্ষরপূর্ণবহুশ্লোকাকারে স্ত্রীরামচন্দ্রের যশস্কল এই মহাকাব্য রচনা করিয়াছেন। এক্ষণে সকলে সন্ধি, সমাস প্রভৃতি ও প্রত্যয়যোগসম্পন্ন, দোষবিহীন, মাধুর্য্যবিশিষ্ট, প্রসাদগুণযুক্ত ঋষিপ্রোক্ত শ্রীরামচরিত ও রাবণ-বধ-বৃত্তান্ত শ্রবণ কর। ৩৮-৪৩