পাতা:বাল্মীকি রামায়ণ - উপেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/৯৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বালকাও লক্ষণের স্যায় শক্রত্নও ভরতের প্রাণীপেক্ষ প্রিয় হইয়া উঠিলেন। দেবগণ দ্বারা ব্রহ্মা যেরূপ সন্তুষ্ট হইয়াছিলেন, রাজা দশরথ সেইরূপ পুলিচতুষ্টয়লাভে অতিশয় প্রীত হইলেন। যখন কুমারের জ্ঞান, গুণ, লজ্জা, কীৰ্ত্তি ও দূরদর্শিতাসম্পন্ন হইলেন, তখন রাজা দশরথ লোকপতি ব্ৰহ্মার স্যায় আনন্দিত হইলেন। সেই মানবশ্রেষ্ঠ পুলচতুষ্টয় যখন বেদাধ্যয়নরত ও পিতৃশুশ্ৰষাপরায়ণ হইলেন এবং ধনুৰ্ব্বেদে নিষ্ঠ প্রাপ্ত হইলেন, সেই সময়ে রাজা দশরথ র্তাহীদের দারপরিগ্রহ-বিময় চিন্তা করিতে লাগিলেন। নৃপতির স্যায় তদীয় মন্ত্রী, মিত্রবর্গ ও পুরোহিতও তাহার চিন্তায় যোগদান করিলেন।২১-৩৮ এই অবসরে মহাতেজ মুনিবর বিশ্বামিত্র সমাগত হইলেন । তিনি রাজ-দৰ্শন-প্রার্থনায় উপস্থিত হইয়া দ্বারপালদিগকে কহিলেন, আমি কুশিকপুল বিশ্বামিত্র, তোমরা সম্বর নৃপতিকে আমার উপস্থিতি-বার্তা জানাও । তাহারা তদ্বাক্য শ্রবণে রাজ-ভবনোদেশে ধাবিত হইল। দ্বারপালগণ সসন্ত্রমে রাজভবনে গমন করিয়া নৃপতির নিকটে ঋষির আগমন-সংবাদ বিজ্ঞাপন করিল। ভূপতি সংবাদ-প্রাপ্তিমাত্রে পুরোহিত সমভিব্যাহারে ইন্দ্র যেমন বহ্মার প্রত্যুদগমন করেন, তাহার ন্যায় বিশ্বামিত্রের নিকটে অগ্রসর হইলেন। দেখিলেন, সেই ঋষিসত্তম আপনার দীপ্তিতে আপনি প্রদীপ্ত এবং উৎকট কঠোর নিয়মাবলম্বী ; দেখিবামাত্র প্রসন্ট হইয়া তাহাকে অর্ঘ্য প্রদান করিলেন। মুনিবর শাস্ত্রবিহিত নৃপ-প্রদত্ত অর্ঘ্য গ্রহণ করিয়া রাজাকে তদীয় কুশল জিজ্ঞাসা করিলেন, অবনীনাথ ! আপনার সামন্ত নৃপতি ও রিপুল ত বশীভূত আছে ? দৈব ও মানুষ কাৰ্য্যত সুখে সম্পাদিত হইতেছে ? এই কথা বলিয়া বশিষ্ঠ ও অন্যান্য ঋষিদিগের কুশল-সংবাদ জিজ্ঞাসা করিলেন। তদনন্তর সকলে হৃষ্টমনে রাজভবনে প্রবেশ করিয়া যথোচিত সংপূজিত হইয়া আসনে উপবেশন" করিলেন । ৩৯-৪৯ O ৩১ পরে a. থ প্রসন্নমনে মহামুনি বিশ্বামিত্রকে পূজা করিয়া বলিলেন, ভবদীয় সমাগম অমৃতপ্রাপ্তির স্যায়, নিজ ল| প্রদেশে জল-বর্ণণের স্যায়, অপুত্রের অনুরূপ ভাৰ্য্যাগর্ভে পুত্রোপ্তবের স্যায়, হত বস্তুর পুনরুদ্ধারের স্যায়,মহোৎসবে হর্মের স্যায়, হে মহামুনে! আপনার অতর্কিতভাবে শুভাগমনকেও সেইরূপ মনে করি। এক্ষণে আদেশ করুন, আপনার কোন প্রিয়কীর্ণ সাধন করিব ? হে মানদ ! আপনি প্রকৃত সেবা-শুশ্রাযার পাত্র। ব্রহ্মন ! আমার ভাগ্যে এখানে আপনার পদার্পণ ঘটিয়াছে। যাহা হউক, অদ্য আমার জন্ম ও জীবন সফল মনে হইতেছে। হে বিপ্রেন্দ্ৰ ! অদ্য আমার পক্ষে রজনী সুপ্রভাত । কারণ, আপনার স্যায় ব্যক্তির সহিত সাক্ষাং ঘটল । আপনি পূর্বে রাজর্ষি ছিলেন, তপস্যাপ্রভাবে এক্ষণে মহর্ষি হইয়াছেন, সুতরাং স পতোভাবে আমার পূজ্য ; বলিতে কি, আপনার আগমনে আমার দেহের পবিত্রতা বৃদ্ধি পাইয়াছে। হে প্রস্তো ! আপনার সাক্ষাৎ পাষ্টয়া আমি শুভক্ষেত্রে উপনীত হইয়াছি, এক্ষণে যে উদ্দেশ্যে এখানে আগমন ঘটয়াছে, তাহা প্রকাশ করুন, এষ্ট আমার প্রার্থনা। বলিতে কি, এই অনুগৃহীত ব্যক্তি আপনার আদেশপালনে নিতান্ত সমুংসুক, অতএব হে সুলত ! এরূপ ব্যক্তির প্রতি সঙ্কোচ করিবার প্রয়োজন নাই । আমি নিঃসংশয়ে আপনার কার্ণ, করিব। আপনি আমার দেবতা, আপনি যে এখানে আগমন করিয়াছেন, ইহাতে আমার অতিশয় অভু্যদয় ও ধৰ্ম্ম-সঞ্চয় ঘটয়াছে। প্রথিতগুণরাশি যশস্ব বিশ্বামিত্র দশরথের মুখে এরূপ শ্রুতিমুখকর হৃদয়হারক বচন শ্রবণ করিয়া অতিশয় সম্বুস্ট হইলেন । ৫০-৫৯