পাতা:বিচার-চন্দ্রদোয় - রামদয়াল মজুমদার.pdf/৯৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিচার-চন্দ্ৰোদয় । "(.. মানুষ মরে কখন ? না যখন আপনাকে সমষ্টি হইতে বিচ্ছিন্ন ভাবে । হরিণকে বাঘে ধরে কখন ? না যখন হরিণ দলভ্ৰষ্ট হইয়া, যেন স্বতন্ত্র হইয়া ঘুরিয়া বেড়ায়। মানুষ যখন দেখে সে সমষ্টির অঙ্গ তখন সে মৃত্যু জয় করিতে পারে। কাজেই একটি মানুষের আহারে সে যখন সমষ্টি পুরুষকে ভাবনা করিতে পারে তখন সে অমর হইবার পথে চলে । এ ভাবনাও কঠিন নহে। তোমার শরীরের একবিন্দু রক্ততেও দেখ, কত জীব চলিতেছে ফিরিতেছে । ইহাদেরও সংসার আছে, পুত্রকন্যা আছে, সঙ্কল্প বিকল্প আছে, বিবাদ-বিসম্বাদ আছে, প্ৰণয় বিরহ আছে। তোমার সমস্ত দেহে কত জীব ভাবনা করি । আর ইহার একটি জীবকে যদি দিব্য চক্ষু দেওয়া যায়। তবে সে জীব তোমাকে কি দেখিবে ? দেখিবে না কি এক বিরাট পুরুষের অঙ্গে সে খেলা করিতেছে ? সেইরূপ তুমিও দেখ কোন বিরাট পুরুষের অঙ্গে তুমি খেলা করিতেছ। শ্রুতির ভোজন মন্ত্রগুলিতে এই সমষ্টি পুরুষকে কি রূপে ভাবিতে হয় তাহার কথাই अछि । শ্রুতি বলিতেছেন। এই শরীর অগ্নিহোত্রের বেদী । ভোজনাৰ্থ আগত অন্ন হইতেছে হোমীয় । অন্নকে আহুতিরূপে অৰ্পণ করিতে হইবে । হাত হইতেছে হাত । হোমের মন্ত্র হইতেছে প্ৰাণায় স্বাহ ইত্যাদি । আর হোমের ফল হইতেছে সমষ্টি ও ব্যষ্টি জীবের তৃপ্তি। সৰ্ব্ব জীবের মধ্যে যে অগ্নিহোত্ৰ চলিতেছে তাহার প্রধান অঙ্গই হইতেছেন। অগ্নি। • সর্ব জীবের মুখ হইতেছে হোমকুণ্ড । অগ্নি যেমন হোমকালে সকল দেবতার যজ্ঞভাগ যথাস্থানে পৌছাইয়া দিয়া থাকেন। এই যজ্ঞে ও মুখরূপ হোমকুণ্ডে প্রদত্ত ভক্ষ্যাদি দ্রব্য অগ্নি দ্বারাই যথাস্থানে পৌছে। শাস্ত্র বলেন “অহং বৈশ্বানরো ভূত্বা পচাম্যন্নং চতুৰ্ব্বিধং।” আমিই বৈশ্বােনর হইয়া জীবের মধ্যে চতুৰ্ব্বিধ অন্ন পরিপাক করিয়া দিতেছি।