কাকীমা কহিল “হাঁ খোকা!”
“আবার তুই খোকার কাছে ফিরে এসেছিস? আর। তুই মরে’ যাবিনে?”
ইহার উত্তর দিবার পূর্বেই একটা গােল বাধিল—ঝি এক বাটি সাগু হাতে করিয়া ঘরে প্রবেশ করিয়াছিল, হঠাৎ বাটি ফেলিয়া মাগাে বলিয়া আছাড় খাইয়া পড়িয়া গেল।
চীৎকার শুনিয়া তাস ফেলিয়া গিন্নি ছুটিয়া আসিলেন, ঘরে ঢুকিতেই তিনি একেবারে কাঠের মত হইয়া গেলেন, পলাইতেও পারিলেন না, মুখ দিয়া একটি কথাও সরিল না!
এই সকল ব্যাপার দেখিয়া খোকারও মনে ভয়ের সঞ্চার হইয়া উঠিল—সে কাঁদিয়া বলিয়া উঠিল—“কাকীমা, তুই যা!”
কাদম্বিনী অনেক দিন পরে আজ অনুভব করিয়াছে যে, সে মরে নাই—সেই পুরাতন ঘর দ্বার, সেই সমস্ত, সেই খোকা, সেই স্নেহ, তাহার পক্ষে সমান জীবন্ত ভাবেই আছে, মধ্যে কোন বিচ্ছেদ কোন ব্যবধান জন্মায় নাই।—সইয়ের বাড়ি গিয়া অনুভব করিয়াছিল বাল্যকালের সে সই মরিয়া গিয়াছে—খােকার ঘরে আসিয়া বুঝিতে পারিল, থােকার কাকীমা ত এক তিলও মরে নাই।
ব্যাকুল ভাবে কহিল, “দিদি, তােমরা আমাকে দেখিয়া কেন ভয় পাইতেছ! এই দেখ, আমি তােমাদের সেই তেমনি আছি!”