পাতা:বিচিত্র জগৎ - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৪৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

V9R বিচিত্ৰ-জগৎ তাদের পক্ষে কিছুই নয়। আয়মারা ইণ্ডিয়ানদের মুখে হাসি দেখা যায় খুব কম, তারা অত্যন্ত গভীর, মুখের ভাব অনেক সময় উদাস ও বিষাদভরা। এদের মধ্যে নৃত্যগীতের প্রচলন নেই, কোনো নতুন বিষয়ে এদের কোনো আগ্রহ বা উৎসাহ নেই, শুধু ফসল-ক্ষেতে খাটতে জানে। ভারবাহী পশু-মনের মত মনের অবস্থা। পুরাকালে যেখানে টিয়া-হুয়া-নাকে সহর ছিল, বৰ্ত্তমানে সেখানে ওই নামের একটা গ্ৰাম আছে। টিয়া-হুয়ানাকো নামটিও প্রাচীন সহরের আদি নাম নয়, এমন কি স্পেনীয়গণ যখন বলিভিয়া জয় করে তখনও ও নাম ছিল না। স্পেনের আধিপত্য স্থাপিত হওয়ার দু'তিনশো বছর পরে নতুন নামকরণ করা হয় সহরের। নামের অর্থ সম্বন্ধেও যথেষ্ট মতভেদ আছে। টিয়া-হুয়া-নাকো নগরীর ধ্বংসস্তুপের কোন ইতিহাস পাওয়া যায় না। এখানকার ভাস্কৰ্য, পাথরের উপর আমেরিকার সুসভ্যতম প্রাচীন জাতির রাজধানী টিয়া-হুয়া-নাকোর একাংশ ; তুঙ্কা-পান্ধু (দশদুয়ায়ী)। বিচারাগার হিসাবে ব্যবহৃত হ’ত বলে মনে হয়। খোদাইয়ের কাজ, মৃৎপাত্রশিল্প, স্থাপত্য প্রভৃতি থেকে প্ৰমাণ হয়, বৰ্ত্তমান ইণ্ডিয়ানদের অপেক্ষা সভ্যতার জাতি এখানে রাজত্ব ক’রত। আয়মারা ইণ্ডিয়ানদের দ্বারা এই নগরী স্থাপিত হয়েছিল যারা বলেন, তঁরা প্ৰকাণ্ড ভুল করেন । আয়মারা ইণ্ডিয়ান জাতি কুইচোয়া ইণ্ডিয়ানদের শাখা, স্পেনীয়গণের মাত্র একশত বৎসর পূর্বে তারা বলিভিয়াতে প্রথমে আসে। পূর্বে এই নগর টিটিকাকা হ্রদের তীরেই অবস্থিত ছিল—এখন হ্রদ প্রায় তেরো মাইল দূরে সরে গিয়েছে । টিয়া-হুয়া-নাকোর ধ্বংসাবশেষ পরীক্ষা করলে বোঝা যায় যে, দুটি বিভিন্ন সভ্যতার ছাপ তার ভাস্কৰ্য্য ও স্থাপত্যশিল্পে সুস্পষ্ট চিহ্ন রেখে গিয়েছে। প্রথমটির অনেককাল পরে দ্বিতীয় যুগের আবির্ভাব হয়। এক জাতির ধ্বংসস্তুপের উপর অন্য জাতি নিজেদের নগর প্রতিষ্ঠা করেছিল। বলিভিয়া ন্যাশনাল মিউজিয়ামের অধ্যক্ষ ডাঃ রোমেরো বলেন, পুরাকালে মধ্য-এশিয়া থেকে মোঙ্গোল জাতির