পাতা:বিচিত্র জগৎ - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৪৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

बलिख्झिां 84 একস্থানে একটা প্ৰস্তরবেদী, বোধ হয় বলিদান কাৰ্য্যে ব্যবহৃত হত।--তার মাঝখানে মাথা ও ঘাড় রাখবার জন্যে খাজ কাটা । বেদীতল থেকে খার্জের উচ্চতাদৃষ্টে অনুমান করা যায় যে, প্ৰধানতঃ মেষ বা লামা শিশু বলির প্রথা প্রচলিত ছিল। সূৰ্য্যমন্দিরে সম্ভবতঃ নরবলির প্রথা ছিল না। w SS SS SS SSAAAAS সূৰ্য্যমন্দিরের দরজা পৰ্যন্ত চাষ চলেছে। ধ্বংসস্তুপ থেকে খোদাই-করা প্রস্তরখণ্ড তুলে অস্ত্ৰ অধিবাসীরা ক্ষেতের বেড়া দিয়েছে বা নিজেদের দীনহীন কুটীরের দরজা করেছে। স্পেনীয়গণ গাড়ী বোঝাই দিয়ে পাথর নিয়ে গিয়ে গির্জা বানিয়েছে-মােটের উপর একটা সুপ্রাচীন সভ্যতার নিদর্শন যত রকমে নষ্ট করা সম্ভব, তা এরা করেছে। টিয়া-হুয়া:নাকোর শেষ চিহ্ন পৰ্যন্ত লুপ্ত হয়ে যেত এতদিন, যদি বলিভিয়া গবৰ্ণমেণ্ট মিউজিয়ামের ডাঃ রোমেরোর দৃষ্টি এদিকে আকৃষ্ট না হত। • যে গৌরবময় যুগে এই বিরাট সভ্যতা জন্মলাভ করেছিল, সে গৌরব বলিভিয়া থেকে অন্তহিত হয়েছে। সেই প্রাচীন সভ্যজাতিরই বর্তমান বংশধর এই অজ্ঞ, অশিক্ষিত, অলস, দরিদ্র আয়মারা ইণ্ডিয়ানরা। এরা অতীতের সকল সম্পদই হারিয়েছে, যে দিকে চোখ যায়, পাহাড়ের গায়, সমতল ভূমিতে তাদের যবের খড়ে ছাওয়া কুগ্ৰী কুটীর, সে কুটীরে জানালা নেই, আলো বাতাস খেলে না-একটি মাত্র বড় ঘরে মানুষ, পশু একত্রে বাস করে। যাদের পূর্বপুরুষেরা এই বিশাল শিলাবেদী, মূৰ্ত্তি, সূৰ্য্যমন্দির গড়েছিল, তারা আজ নিজেদের বাসের কুটীরও ভাল করে তৈরী করতে পারে না । একটা অত্যন্ত আশ্চৰ্য্য ব্যাপার এই যে, টিয়া-হুয়া-নাকোর ধ্বংসস্তুপে যত মৃৎপাত্র পাওয়া গিয়েছে—তার মধ্যে অধিকাংশ পাত্রের গায়ে স্বস্তিক চিহ দেখা যায়। পণ্ডিত ও বুিশেষজ্ঞদের পক্ষে এটা গভীরভাবে অনুসন্ধান ও গবেষণা করার ব্যাপার। অত প্ৰাচীনকালে দক্ষিণ আমেরিকায় স্বস্তিক চিহের প্রথা কোথা থেকে এসেছিল ! ধ্বংসস্তুপ থেকে ১৩ মাইল দূরে বিখ্যাত টিটিকাকা হ্রদ। পৃথিবীর মধ্যে এত উঁচু জায়গায় অবস্থিত। আর কোন হ্রদ নেই। টিটিকাকা হ্রদের সৌন্দৰ্য্য অবর্ণনীয়। শান্ত, নিস্তরঙ্গ। বিশাল হ্রদের জলের রং কোবান্টের মত। হ্রদের মাঝে মাঝে ছোট ছোট দ্বীপ। এই রকম একটা দ্বীপে ইঙ্কা সম্রাটের স্থাপিত স্বৰ্য্য ও চন্দ্রদেবের মন্দির আছে। কিন্তু সে সব অনেক পরের ব্যাপার। টিয়া-হুয়া-নাকো নগরের মত অত প্ৰাচীন ধ্বংসাবশেষ। দক্ষিণ-আমেরিকায় কোথাও নেই।