প্রথম অঙ্ক বিজয়া & কথা বলতেন, মা তোমার ধৰ্ম্মবুদ্ধি দিয়েই তোমার কৰ্ত্তব্য নিরূপণ ক’র। আমার ইচ্ছের শাসনে তোমাকে আমি বেঁধে রেখে যাব না। কিন্তু পিতৃঋণের দায়ে পুত্রকে গৃহহীন করার সঙ্কল্প বোধহয় তার ছিল না । তার ছেলের নাম শুনেছি নরেন্দ্র । তিনি কোথায় আছেন জানেন ? বিলাস । জানি। মাতাল-বাপের শ্রাদ্ধ শেষ করে সে নাকি বাড়ীতেই আছে । পিতৃঋণ যে শোধ করে না, সে কুপুত্র। তাকে দয়া করা অপরাধ। বিজয় । আপনার সঙ্গে বোধহয় তার আলাপ আছে ? বিলাস। আলাপ ! ছিঃ—আপনি আমায় কি মনে করেন বলুন তো ? আমি তো ভাবতেই পারিনে যে জগদীশ মুখুয্যের ছেলের সঙ্গে আমি আলাপ করছি ! তবে সেদিন রাস্তায় হঠাৎ পাগলের মত একটা নতুন লোক দেখে আশ্চৰ্য্য হয়েছিলুম— শুনলাম সেই নাকি নরেন মুখুয্যে। বিজয়া। পাগলের মতো ? কিন্তু শুনেছি নাকি ডাক্তার ? বিলাস । ডাক্তার । আমি বিশ্বাস করিনে। যেমন আকৃতি তেমনি প্রকৃতি ; একটা অপদার্থ লোফার ! বিজয় । আচ্ছ বিলাসবাবু, জগদীশবাবুর বাড়ীটা যদি সত্যিই আমরা দখল করে নিই, গ্রামের মধ্যে কি একটা বিত্রী গোলমাল উঠবে না ? বিলাস । একেবারে না । আপনি পাচ-সাতখানা গ্রামের মধ্যে একজনও পাবেন না, এই মাতালটার ওপর যার বিন্দুমাত্র সহানুভূতি ছিল। আহা বলে এমন লোক এ অঞ্চলে নেই।
পাতা:বিজয়া-শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/১২
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।