পাতা:বিজ্ঞানরহস্য (দ্বিতীয় সংস্করণ).djvu/৩৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৮
বিজ্ঞানরহস্য।

 উর্দ্ধে তাপাভাবের কারণ তপ্ত বা তাপ্য সামগ্রীর অভাব। রৌদ্র ভূমে যেমন প্রখর, উর্দ্ধে বরং ততোধিক প্রখরতর বোধ হয়। কিন্তু তাহাতে কি তপ্ত হইবে? ভূমি অতি দূরে, বায়ু অতিক্ষীণ,—অল্পপরমাণু। দশ বারটি তুলার বস্তা উপর্য্যুপরি রাথিয়া দেখিবেন—উপরিস্থ তূলার তারে, নিম্নস্থ বস্তার তুলা গাঢ়তর হইয়াছে। তেমনি নিম্নস্থ বায়ুই গাঢ়—উপরিস্থ বায়ু ক্ষীণ। পরীক্ষা দ্বারা স্থির হইয়াছে—যে এক ইঞ্চ দীর্ঘ প্রস্থে, এরূপ ভূমির উপরে যে ভার, তাহার পরিমাণ সাড়ে সাতসের। আমরা মস্তকের উপর অহরহঃ এই ভার বহন করিতেছি—তজ্জন্য কোন পীড়া বোধ করি না কেন? উত্তর, “অগাধ জল সঞ্চারী” মৎস্য উপরিস্থ বারিরাশির ভারে পীড়িত হয় না কেন? উপরিস্থ বায়ুস্তর সমূহের তারে নিম্নস্থ বায়ুস্তর সকল ঘনীভূত—যত ঊর্দ্ধে যাওয়া যায়, বায়ু ততক্ষীণ হইতে থাকে। গগনপর্য্যটকেরা ইহা পরীক্ষা করিয়া জানিয়ছেন, গুরুতা অনুসারে ৩৸০ মাইল উর্দ্ধের মধ্যেই অর্ধেক বায়ু আছে; এবং পাঁচ ছয় মাইলের মধ্যেই সমুদায় বায়ুর তিন ভাগের দুই ভাগ আছে। এইজন্য উর্দ্ধে উঠিতে গেলে, নিশ্বাস প্রশ্বাসের জন্য অত্যন্ত কষ্ট হয়। মসুর ক্লামারিয় দশসহস্র ফিট উর্দ্ধে উঠিয়া, প্রথম বারে, যেরূপ কষ্ট অনুভুত করিয়াছিলেন, তাহার বর্ণনা এইরূপ করিয়াছেন, যথা—

 “সাতটা বাজিতে এক পোয়া থাকিতে আমার শরীর মধ্যে এক অপূর্ব্ব আভ্যন্তরিক শীতলতা অনুভূত করিতে লাগিলাম। তৎসহিত তন্দ্রা আসিল। কষ্টে নিশ্বাস ফেলিতে লাগিলাম।কর্ণমধ্যে শোঁ শোঁ শব্দ হইতে লাগিল এবং আধ মিনিট কাল, আমার হৃদ্রোগ উপস্থিত হইল। কণ্ঠ শুষ্ক হইল। আমি একপাত্র জল পান করিলাম—তাহাতে উপকার বোধ হইল। যে বোতলে