পাতা:বিদায়-আরতি.djvu/৮২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

বড়দিনে

উবে গেছে ভক্তি শ্রদ্ধা, শিষ্টতা আড়ষ্ট হ’য়ে আছে,
জড়বাদের স্বন্ধে চ’ড়ে ধিঙ্গি-পারা জিঙ্গো-জুজু নাচে!
তিন ডাকিনী নৃত্য করে ইয়োরোপের শ্মশান-পারা বুকে—
লড়াই-লালচ, বড়াই-লালচ, কড়ির-লালচ,— নাচছে বিষম রুখে।
ওখানে ঠাঁই নাই প্রভু আর, এই এসিয়ায় দাঁড়াও স’রে এসে—
বৃদ্ধ-জনক-কবীর-নানক-নিমাই-নিতাই শুক-সনকের দেশে;
ভাব-সাধনার এই ভুবনে এস তোমার নূতন বাণী ল’য়ে,
বিরাজ করো ভারত-হিয়ার ভক্তমালে নূতন মণি হ’য়ে;
ব্যথা-ভরা চিত্ত মোদের, খানিক ব্যথা ভুল্‌বে তোমায় হেরি;
সত্য-সাধন-নিষ্ঠ শিখাও, বাজাও গভীর উদ্বোধনের ভেরী;
ধৈর্য্যগুঢ় বীর্য্য তোমার জাগুক, প্রাণের সব ভীরুতা দহি’,
সহিষ্ণুতায় জিষ্ণু করো, মহামহিম আদিম সত্যগ্রহী!
নিগ্রহে কি নির্য্যাতনে ফুরিয়ে যেন ন যায় মনের বল।
নিত্য-জীবন-লাভের পথে জাগুক তোমার মূর্ত্তি অচঞ্চল!
পরের মরম বুঝতে শিখাও, হে প্রেমগুরু, চিত্তে এস নেমে,
কুষ্ঠ-ক্লেদের মাঝখানে ভার দাও হে সেবার সর্ব্বসহা প্রেমে;
মন নিতে চায় ওই আদর্শ, নাগাল না পাই,হাত ধ’বে নাও তুমি,
মরে অমর হবার মতন দাও শকতি দীনের শরণভূমি!
সবল কর পঙ্গু ইচ্ছা, পরশ বুলাও মনের পক্ষাঘাতে,
হাত ধ’রে নাও, পৌঁছিয়ে দাও সত্যি-বাঁচার নিত্য-সুপ্রভাতে।
বিশ্বাসে যে বল অমিত সেই অমৃতের দরজা দাও খুলে,
অভয়-দাতা! পৌঁছিয়ে দাও পরম-অন্নদাতার চরণ-মূলে!
ব্যথার বিষে মন ঝিমালে স্মরি যেন তোমার মশান-গীতা—
“না গো আমায় ত্যাগ করো না, ত্যাগ করো না,
পিতা! আমার পিতা।”

৭১