পাতা:বিদায় ভোজ - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/২৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বিদায় ভােজ।
২৩

 আমি ভাবিলাম, একেবারে প্রকৃত কথা জ্ঞাপন করিলে হয়ত তিনি অত্যন্ত বিরক্ত হইবেন, হয়ত আমাকে অপমানিত করিয়া বাড়ী হইতে বহিষ্কৃত করিয়া দিবেন, এই ভয় করিয়া ঈষৎ হাসিয়া বলিলাম, “এই পথ দিয়া থানায় ফিরিতেছিলাম, অনেক দিন আপনার সহিত দেখা সাক্ষাৎ হয় নাই বলিয়া একবার এখানে আসিয়াছি। কিন্তু আপনার পিতা কোথায়? তিনি ত প্রায়ই সদর-দরজায় বসিয়া ধূমপান করিতেন।”

 কেশবচন্দ্র হাসিয়া উত্তর করিলেন, “আমার পিতা-মাতা উভয়েই তীর্থ দর্শনে গমন করিয়াছেন।”

 আমি যেন আশ্চর্য্যান্বিত হইয়া জিজ্ঞাসা করিলাম, “কবে? এই যে সেদিন বৈকালে পথে তাঁহার সহিত দেখা হইয়াছিল।”

 কে। আজ্ঞে হাঁ—তিনি গতকল্য প্রাতে কলিকাতা হইতে রওনা হইয়াছেন।

 আ। কোথায় যাইবেন?

 কে। কাশী।

 আ। কতদিনে ফিরিবেন?

 কে। সে কথা ঠিক বলিতে পারি না। তাঁহাদের যেমন অভিরুচি তেমনই করিবেন। আমার কথা তাঁহারা গ্রাহ্য করেন না।

 আ। বলেন কি! আপনি উপযুক্ত পুত্র, আপনার কথামত কার্য্য না করিলে এ বয়সে তাঁহাদিগকে অনেক কষ্ট পাইতে হইবে।

 কেশবচন্দ্র হাসিয়া বলিলেন, “তাঁহাদের মনের কথা তাঁহারাই বোঝেন। মধ্যে পড়িয়া আমি কেন মারা যাই।”

 কেশবচন্ত্রের কথা শুনিয়া আমি স্পষ্টই বুঝিতে পারিলাম যে,