পাতা:বিদ্যাসাগর-প্রসঙ্গ.pdf/১০৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৭২
বিদ্যাসাগর-প্রসঙ্গ

হ্যালিডেও যাহাতে এই সংবাদ জানিতে পারেন, তজ্জন্য বিদ্যাসাগর তাঁহাকেও এই পত্রের এক প্রতিলিপি পাঠাইলেন। বিদ্যাসাগরের সঙ্কল্পের কথা পাঠ করিয়া হ্যালিডে তৎক্ষণাৎ তাঁহাকে লিখিলেন,—

প্রিয় পণ্ডিত, তোমার অভিপ্রায় অবগত হইয়া আমি সত্যসত্যই অত্যন্ত দুঃখিত হইয়াছি। বৃহস্পতিবার আমার সহিত দেখা করিতে আসিবে এবং জানাইবে কেন তুমি এ সঙ্কল্প করিয়াছ।” (৩১ আগষ্ট)

 দক্ষ কর্ম্মচারীরা কাজ ছাড়িয়া দেয়, ইহা হ্যালিডের কাছে কখনই রুচিকর ছিল না। তিনি পণ্ডিতকে হঠাৎ কিছু না-করিতে অনুরোধ করিলেন। বিদ্যাসাগরও সম্মত হইলেন। যদিও তাঁহার ইচ্ছা ছিল না, তবুও তিনি আর এক বৎসর ঐ পদে কাজ করিতে লাগিলেন। কিন্তু স্বাস্থ্য ভাঙিতে শুরু হওয়ায় তিনি ১৮৫৮, ৫ই আগষ্ট তারিখে ডিরেক্টরের কাছে কর্ম্মত্যাগপত্র পাঠাইলেন,—

সরকারী কর্তব্যপালনে অবিরত মানসিক পরিশ্রম করিতে হইয়াছে। তাহাতে আমার এমন গুরুতর স্বাস্থ্যভঙ্গ হইয়াছে যে বাংলার ছোটলাট বাহাদুরের নিকট আমার পদত্যাগপত্র দাখিল করিতে বাধ্য হইলাম।
“আমি মনে করি, আমার কর্তব্যপালনে যে অবিশ্রান্ত মনোযোগের প্রয়োজন, তাহা আমি আর দিতে পারি না। আমার বিশ্রামের দরকার। সাধারণের স্বার্থের খাতিরে এবং নিজের সুখস্বাচ্ছ্যন্দ্যের প্রয়োজনে সরকারী কাজ হইতে অবসরগ্রহণ করিলে সেই বিশ্রাম পাইতে পারি।
“যে মুহূর্তে স্বাস্থ্য পুনরায় ফিরিয়া পাইব, আমার ইচ্ছা তন্মুহূর্ত হইতে আমার সময় এবং চেষ্টা প্রয়োজনীয় বাংলা পুস্তক প্রণয়নে এবং সঙ্কলনে নিয়োগ করিব। স্বদেশবাসীর শিক্ষা ও জ্ঞানবিস্তার সম্পর্কে সরকারী কর্ম্মের সহিত আমার সাক্ষাৎ যোগ ছিন্ন হইয়া যাইতেছে