ডিরেক্টরের অনুমোদন গ্রাহ্য করিয়া বাংলা-সরকার মন্তব্য প্রকাশ করিলেন,—
স্বাস্থ্যের অবনতি কর্ম্মত্যাগের একটি কারণ বটে, কিন্তু পদোন্নতি সম্পর্কে আশাভঙ্গ এবং উপরিতন কর্ম্মচারীর সহিত মতবিরোধই যে বিদ্যাসাগরকে সরকারী কর্ম্ম ত্যাগ করিতে বাধ্য করিয়াছিল তাহা উপরের চিঠিগুলি হইতে বেশ বুঝিতে পারা যায়। ছোটলাট হ্যালিডে তাঁহার গুণগ্রাহী ছিলেন। তিনি ব্যক্তিগতভাবে তাঁহার সহিত সদয় ও ভদ্রব্যবহার করিতেন সত্য, কিন্তু যাঁহার অধীনতায় পণ্ডিতকে প্রতিদিন কাজ করিতে হইত, সেই সাক্ষাৎ উপরিতন কর্ম্মচারী—শিক্ষা বিভাগের ডিরেক্টরের প্রতিবন্ধকাচরণ এবং অনাত্মীয় ব্যবহারে বিদ্যাসাগরের পক্ষে আর কাজ করা অসম্ভব হইয়া পড়িয়াছিল। সুতরাং ‘পণ্ডিত কিঞ্চিত অসুষ্ঠুভাবে অবসর গ্রহণ করিলেন’ বাংলা-সরকারের এই মন্তব্য অযথার্থ। বিদ্যাসাগরের চাকরির কাল দশ বৎসরের অধিক নহে; এত অল্পদিনের সরকারী কাজে আংশিক পেন্সনেরও অধিকারী হওয়া যায় না সত্য, কিন্তু তাঁহার সম্পাদিত কর্ম্মের গুরুত্ব বিবেচনা করিয়া পুরস্কার-স্বরূপ তাঁহাকে এককালীন কিছু টাকা দান করিলেই সরকারের পক্ষে শোভন হইত।