পাতা:বিদ্যাসাগর-প্রসঙ্গ.pdf/১১২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৭৮
বিদ্যাসাগর-প্রসঙ্গ
বিষয়, এ বিষয়ে তাঁহার সহিত আমার মত মেলে না। আমার মনে হয়, এই বিষয়গুলিতে আপত্তি থাকিতে পারে না। স্মৃতি সম্বন্ধে যে-সকল পাঠ্যপুস্তক নির্দ্ধারিত আছে, সেগুলির সাহায্যে শুধু উত্তরাধিকার, পোয্যপুত্রগ্রহণ প্রভৃতি দেওয়ানী আইন শেখানো হয়। এই সকল জিনিষ অধিগত করিবার প্রয়োজনীয়তা সকলেই স্বীকার করেন, অতএব এ-সম্বন্ধে বেশ কিছু বলিবার প্রয়োজন নাই। ভারতবর্ষে প্রচলিত দর্শনসমূহের মধ্যে বেদান্ত অন্যতম। ইহা অধ্যাত্মতত্ত্ব সম্বন্ধীয়। কলেজে ইহার অধ্যাপনা বিষয়ে কোনো যুক্তিসঙ্গত আপত্তি থাকিতে পারে, ইহা আমি মনে করি না। এই দুইটি বিষয় এখন যে-ভাবে শেখানো হয় তাহাতে ধর্ম্মগত কোনো আপত্তি থাকিতে পারে না। আমার বিনীত মত এই, এ-সকলের অধ্যাপনা বন্ধ করিলে কলেজের পাঠ্য-বিষয় অসম্পূর্ণ থাকিয়া যাইবে।.....
“ডাঃ রোয়ার প্রস্তাব করিয়াছেন, কলেজ উঠাইয়া দেওয়া হোক এবং উদ্বৃত্ত অর্থ সরকারী ইংরেজী স্কুল ও কলেজ সমূহে সংস্কৃত-চর্চ্চা চালাইবার জন্য ব্যয়িত হোক। স্কুল-কলেজে সংস্কৃত-শিক্ষা প্রচলনের আমি যতটা পক্ষপাতী, ততটা আর কেহ নয়। কিন্তু সংস্কৃত কলেজের বিলোপ করিয়া তৎপরিবর্ত্তে এইরূপ ব্যবস্থা প্রবর্তনের আমার অপেক্ষা অধিকতর বিরোধীও কেহ নাই। কাওয়েল সাহেব সত্যই বলিয়াছেন, সংস্কৃত যদি শিখিতেই হয় তাহা হইলে সম্পূর্ণরূপে শিক্ষা করা ভাল। ইংরেজী স্কুল-কলেজে ইহা উপযুক্তরূপে শিক্ষা করা যায় কি না সে বিষয়ে আমার খুব সন্দেহ আছে, বিশেষ যখন ঐ বিদ্যালয়গুলিতে ভালরূপে বাংলা শিখাইবার চেষ্টা সফল হয় নাই। ডাঃ রোয়ারের কল্পনা কার্য্যে পরিণত করিলে, যে-ভাষা ও সাহিত্য পূর্ণরূপে রক্ষা করাই সংস্কৃত কলেজের প্রতিষ্ঠাতৃগণের মুখ্য উদ্দেশ্য