পাতা:বিদ্যাসাগর-প্রসঙ্গ.pdf/১৩৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
স্বাধীন কর্ম্মক্ষেত্রে
১০৩

সোসাইটির অনারারি মেম্বর—সম্মানিত সভ্য—নির্ব্বাচিত হন।[১] এই উচ্চসম্মান লাভ এযাবৎকালের মধ্যে মুষ্টিমেয় বাঙালীর ভাগ্যেই ঘটিয়াছে। ছোটলাট স্যর রিচার্ড টেম্পলের আমলে তাঁহাকে এই সম্মান-লিপি প্রদান করা হয়—

“বিধবা বিবাহ আন্দোলনের[২] নেতারূপে তাঁহার আন্তরিকতার এবং ভারতবর্ষীয় সমাজের অগ্রগামী দলের নায়করূপে তাঁহার মর্য্যাদা স্বীকার করিয়া পণ্ডিত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরকে ইহা প্রদত্ত হইল।” (১ জানুয়ারি, ১৮৭৭)।

মৃত্যু

 তাঁহার শরীর পূর্ব্বেই ভাঙিয়া গিয়াছিল। ক্রমেই তিনি বিশেষরূপে অসুস্থ হইয়া পড়িতে লাগিলেন। বন্ধু এবং আত্মীয়স্বজনের বিয়োগ-ব্যথা এবং কয়েক বৎসরব্যাপী রোগভোগে দেহ সম্পূর্ণরূপে বিকল হইয়া গেল। তিনি কঙ্কালসার হইয়া পড়িলেন। একে একে শ্রমসাধ্য সকল কার্য্যই তাঁহাকে পরিত্যাগ করিতে হইল। নগরের কলকোলাহল তাঁহার আর সহ্য হইত না। তিনি নানা স্বাস্থ্যকর স্থানে যাইতে লাগিলেন। কার্ম্মাটারের বাড়িতেই তিনি বেশী যাইতেন।

 শরীর আর বহিল না। ১৮৯১, ২৯এ জুলাই পূর্ণ ৭০ বৎসর বয়সে বাংলার শ্রেষ্ঠ মনীষী ইহলোক হইতে অপসৃত হইয়া গেলেন।

  1. Journal of the Royal Asiatic Society, 1865, p. 15.
  2. যাঁহারা বিধবা-বিবাহ আন্দোলনের বিস্তৃত বিবরণ জানিতে ইচ্ছুক তাঁহাদিগকে এই পুস্তকখানি পাঠ করিতে অসুবোধ করি —"A collection containing the Proceedings which led to the passing of Act xv. of 1856." Compiled by Narayan Keshav Vaidya (Bombay, 1885). বইখানি আমি প্রথমে ব্রাহ্মসমাজ লাইব্রেরীতে দেখি। সুবলচন্দ্র মিত্রের পুস্তকেও বিধবা-বিবাহ আন্দোলনের বিবরণ আছে।