পাতা:বিদ্যাসাগর-প্রসঙ্গ.pdf/৩৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বিদ্যাসাগর-প্রসঙ্গ

এই পদে একজন সুযোগ্য লোক নির্ব্বাচনের জন্য কাপ্তেন মার্শালের সহিত পরামর্শ করিতে যান। মার্শাল দেখিলেন, ইংরেজীও জানে, সংস্কৃতেও অভিজ্ঞ এমন পণ্ডিত আছে এক বিদ্যাসাগর। তিনি ময়েটের কাছে বিদ্যাসাগরের কথাই বলিলেন। ঈশ্বরচন্দ্র মাসিক ৫০৲ টাকা মাহিনায় সংস্কৃত কলেজের সহকারী সম্পাদকের পদে নিযুক্ত হইলেন। (এপ্রিল, ১৮৪৬)। ফোর্ট উইলিয়াম কলেজে বিদ্যাসাগরের স্থানে লওয়া হইল—তাঁহার ভ্রাতা দীনবন্ধু ন্যায়রত্নকে। দীনবন্ধুও সংস্কৃত কলেজের কৃতী ছাত্র।

 ঠিক এই সময় পণ্ডিত জয়গোপাল তর্কালঙ্কারের মৃত্যুতে সংস্কৃত কলেজে সাহিত্য-শাস্ত্রের অধ্যাপকের পদ খালি হইল। কলেজের সম্পাদক রসময় দত্ত বিদ্যাসাগরকেই শূন্যপদে বসাইবেন স্থির করিয়াছিলেন। এই পদ গ্রহণ করিলে বিদ্যাসাগরের মাসিক আয় আরও ৪০৲ টাকা বাড়িত। কিন্তু এ কাজ তিনি তাঁহার সতীর্থ মদনমোহন তর্কালঙ্কারকেই ছাড়িয়া দিলেন। তর্কালঙ্কার তখন ৫০৲ টাকা বেতনে কৃষ্ণনগর কলেজের হেড-পণ্ডিত।

 বিদ্যাসাগর উৎসাহের সহিত সংস্কৃত কলেজে নূতন নীতি চালাইতে প্রবৃত্ত হইলেন। তিনি এক উন্নত প্রণালীর পঠন-ব্যবস্থার রিপোর্ট প্রস্তুত করিলেন। কলেজের সম্পাদক বিদ্যাসাগরের রিপোর্টের প্রধান প্রস্তাবগুলি শিক্ষা-পরিষদে পেশ করিলেন। সেগুলি গৃহীতও হইল। সংস্কৃত কলেজের পাঠ্যবিষয় ও রুটিন প্রভৃতি অনেকটা বদলাইয়া গেল।

 এ কার্য্য কিন্তু ঈশ্বরচন্দ্রকে বেশী দিন করিতে হইল না। সম্পাদক রসময় দত্ত সংস্কারের বহর দেখিয়া শঙ্কিত হইয়া উঠিলেন। বিদ্যাসাগরের কতকগুলি প্রস্তাব তিনি একেবারে নাকচ করিলেন। সেই বাধায় বিদ্যাসাগরের জ্বলন্ত উৎসাহ নিমেষে শীতল হইয়া গেল। স্বাধীনচেতা পণ্ডিত চটিয়া কার্য্যে ইস্তফা দিলেন (এপ্রিল, ১৮৪৭)। বন্ধুদের সহস্র