অনুরোধ তাঁহাকে এ কার্য্য হইতে নিবৃত্ত করিতে পারিল না। বিদ্যাসাগর-চরিত্রের ইহা এক বিশেষত্ব।
মার্শাল ছিলেন ঈশ্বরচন্দ্রের গুণমুগ্ধ ও হিতৈষী। ফোর্ট উইলিয়াম কলেজে হেড-রাইটার ও কোষাধ্যক্ষের কাজ খালি হওয়ায় তিনি তখনই সেই পদে বিদ্যাসাগরকে বাহাল করিলেন। এই পদ শূন্য হওয়ার ইতিহাসটুকু চিত্তাকর্ষক। দেশ-বিখ্যাত সুরেন্দ্রনাথের পিতা, তালতলার দুর্গাচরণ বন্দ্যোপাধ্যায়, ফোর্ট উইলিয়াম কলেজে কাজ করিয়াও অতিরিক্ত ছাত্র হিসাবে মেডিক্যাল কলেজে লেকচার শুনিতে যাইতেন। অবশেষে তিনি ডাক্তারি করাই শ্রেয় বলিয়া স্থির করিলেন। ১৮৪৯, ১৬ই জানুয়ারি মেজর মার্শালের হাতে দুর্গাচরণ পদত্যাগপত্র দাখিল করিলে, তাঁহার স্থানে পাঁচ হাজার টাকার জামিনে মাসিক ৮০৲ টাকা বেতনে বিদ্যাসাগর নিযুক্ত হইলেন।
১৮৫০ খৃষ্টাব্দের নভেম্বর মাসে সংস্কৃত কলেজের সাহিত্য-শাস্ত্রের অধ্যাপক মদনমোহন তর্কালঙ্কার জজপণ্ডিত নিযুক্ত হইয়া মুর্শিদাবাদ চলিয়া গেলেন। শিক্ষা-পরিষদের সেক্রেটারি ডাঃ ময়েট তাঁহার স্থানে বিদ্যাসাগরকে নিযুক্ত করিবার অভিপ্রায় প্রকাশ করেন। কিন্তু নানা কারণে বিদ্যাসাগর এই পদ গ্রহণ করিতে অনিচ্ছা প্রকাশ করিলেন। শেষে ডাঃ ময়েট বিশেষ আগ্রহ প্রকাশ করায় বিদ্যাসাগর জানাইলেন, শিক্ষা-পরিষদ তাঁহাকে প্রিন্সিপালের ক্ষমতা দিলে তিনি ঐ পদ গ্রহণ করিতে পারেন। ডাঃ ময়েট বিদ্যাসাগরের নিকট হইতে ঐ মর্ম্মে একখানি পত্র লিখাইয়া লইলেন।
১৮৫০, ৪ঠা ডিসেম্বর ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ ছাড়িয়া বিদ্যাসাগর সংস্কৃত কলেজে সাহিত্য-শাস্ত্রের অধ্যাপক নিযুক্ত হইলেন। সংস্কৃত কলেজের প্রকৃত অবস্থা কি, এবং কিরূপ ব্যবস্থা করিলে কলেজের উন্নতি হইতে পারে—এ বিষয়ে রিপোর্ট করিবার জন্য বিদ্যাসাগরের